• No products in the cart.

ইমেইল মার্কেটিং কী কীভাবে করে (বিস্তারিত)

বিভিন্ন পণ্য ও সেবা ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরতে মার্কেটিং বা প্রচারণা বেশ জনপ্রিয় এক পদ্ধতি। আধুনিক যুগে এসে পরিবর্তিত হয়েছে প্রচারণার ধরণ। ইন্টারনেট জনপ্রিয় হওয়ায় ধীরে ধীরে ইন্টারনেট ভিত্তিক প্রচারণাও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এখন প্রচারণার মূল মাধ্যম হয়ে উঠেছে ইন্টারনেট। সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েবসাইট, ইমেইল ইত্যাদি বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে খুব দ্রুত সঠিক ক্রেতাদের কাছে পণ্যের প্রচারণা চালানো সম্ভব। তবে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক হওয়ায় সঠিক ক্রেতা বা গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো বেশ কঠিন ব্যাপার। এজন্যই দরকার হয় বিশেষজ্ঞ মার্কেটারদের। সঠিক পদ্ধতি ও পরিকল্পনা ব্যবহার করে পণ্য বা সেবার সঠিক পরিচালনা চালাতে পারলে ব্যবসায় সফল হওয়ার পথ অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। আর একারণেই বিভিন্ন মার্কেটারদের আলাদা চাহিদা রয়েছে ফ্রিল্যান্সিং বাজারে।

 

ফ্রিল্যান্সিং করে সাবলম্বী হবার ক্ষেত্রে ইমেইল মার্কেটিং খুব জনপ্রিয়। ইমেইল মার্কেটিং বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে সহজেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব ঘরে বসেই। তবে এর জন্য সঠিক দক্ষতা অর্জন করতে হয় পরিশ্রমের মাধ্যমে। তবে আমাদের অনেকেরই ইমেইল মার্কেটিং নিয়ে ভালো ধারণা নেই। ইমেইল মার্কেটিং কী বা ইমেইল মার্কেটিং শিখতে কী করতে হবে সেই ব্যাপারে কিছু দিক নির্দেশনা থাকবে এই পোস্টে। কাজেই ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে চাইলে পুরো পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে নিতে পারেন।

ইমেইল মার্কেটিং কী?

আপনি যখন কোন প্রয়োজনীয় সেবা গ্রহণ করতে কোন ওয়েবসাইটে সাইন আপ করেন তখন সেই ওয়েবসাইট তাদের বিভিন্ন পণ্য বা সেবা সম্পর্কে জানাতে আপনাকে মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন ইমেইল পাঠিয়ে থাকে। এই ইমেইল বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। একেই মূলত ইমেইল মার্কেটিং বলা হয়ে থাকে। অর্থাৎ ইমেইল মার্কেটিং হচ্ছে ডিজিটালভাবে পণ্য বা সেবার প্রচারণা চালানোর একটি মাধ্যম যার মাধ্যমে সরাসরি ক্রেতা বা গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো যায়।

ইমেইলের মাধ্যমেই এই প্রচারনা চালনা হয়ে থাকে। মূলত কোন পণ্যের বা সেবার ওয়েবসাইটে ক্রেতারা তাদের ইমেইল দিয়ে সাইন আপ করলে এই ইমেইল পাঠানোর ডিজিটাল অনুমতি দিয়ে থাকে। ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকারের ইমেইল দেয়া হয়ে থাকে। যেমনঃ প্রমোশনাল বা প্রচারণামূলক ইমেইল, নিউজলেটার, ইভেন্টে আমন্ত্রন ইত্যাদি।

ইমেইল মার্কেটিংয়ের মূল উদ্দেশ্য ইমেইলের মাধ্যমে পণ্য বা সেবাকে গ্রাহকের নিকট তুলে ধরা যাতে তার বিক্রি বাড়ে। ডিজিটাল মার্কেটিং উন্নত হবার সাথে সাথে ইমেইল মার্কেটিংয়ের গুরুত্ব ও চাহিদা দিনে দিনে বেড়েই চলছে। ফলে বলা যায় ইমেইল মার্কেটার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে এখানে সফল হবার মতো যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ইমেইল মার্কেটিংয়ের চাহিদা দিনে দিনে আরও বেড়ে চলেছে। ফলে এখানে সঠিক দক্ষতা অর্জন করলে ভালো পরিমাণ আয় করা সম্ভব। সুতরাং ইমেইল মার্কেটিং সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জেনে নিন আমাদের পোস্ট থেকে।

ইমেইল মার্কেটিংয়ের উদ্দেশ্য

ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন বাজারজাতকরণের নানারকম উদ্দেশ্য পূরণ করা সম্ভব। যেমনঃ

  • গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করাঃ কোন পণ্য বা সেবার প্রতিটি গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা সম্ভব ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে। এতে করে গ্রাহকদের মনে পণ্য বা সেবা সম্পর্কে ভালো ধারণা তৈরি হয় এবং তারা নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। ফলে গ্রাহক পছন্দ করবে এমন বিভিন্ন ইমেইল নিয়মিত পাঠালে পণ্য বা সেবা নিতে তারা আরও আগ্রহী হন। এছাড়া নতুন বিভিন্ন পণ্য বা সেবা সম্পর্কে সহজেই জানতে পারেন গ্রাহক। ফলে ভবিষ্যতে আরও বেশি বিক্রি সম্ভব হতে পারে।
  • বিভিন্ন পণ্য ও সেবার প্রচারনাঃ নিজেদের নতুন সব পণ্য সম্পর্কে নিয়মিত তথ্য ইমেইলের মাধ্যমে প্রদান করলে গ্রাহক বা ক্রেতা সহজেই সেই পণ্য বা সেবা নিয়ে আগ্রহী হন। ফলে নতুন পণ্যকে বাজারজাতকরণ অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। এতে করে ব্যবসা আরও সম্প্রসারিত হয় এবং লাভ বেড়ে যেতে পারে।
    • লিড জেনারেশনঃ লিড জেনারেশন বলতে বোঝায় পণ্য বা সেবা সম্পর্কে আগ্রহী ক্রেতাদের ইমেইল অ্যাড্রেস সংগ্রহ করা যাতে পরবর্তীতে তাদেরকে আপনি আপনার নতুন পণ্য বা সেবা সম্পর্কে জানাতে পারেন ইমেইলের মাধ্যমে। কিছু ফ্রি রিসোর্স বা সুবিধা দিয়ে নতুন গ্রাহকের ইমেইল অ্যাড্রেস সহজেই সংগ্রহ করা সম্ভব। এতে করে ধীরে ধীরে নিজেই লিড জেনারেট করে প্রচারণা চালানো যায়।

    ইমেইল মার্কেটিং কেন গুরুত্বপূর্ণ?

    ইমেইল মার্কেটিং বেশ কিছু কারণে বর্তমানে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ইমেইল মার্কেটিংয়ের এই গুরুত্ব বিভিন্ন কারণেঃ

    • উচ্চ আরওআইঃ আরওআই বলতে বুঝানো হয় রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট বা বিনিয়োগের সাপেক্ষে ফেরত। অর্থাৎ আপনি যে পরিমাণ বিনিয়োগ করছেন তার ফলে কী পরিমাণের রিটার্ন পাচ্ছেন। ডিএমএ এর একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণায় প্রতি ১ ডলারের বিপরীতে ৪২ ডলারের রিটার্ন বা ফেরত পাওয়া যায়। এই আরওআই এর পরিমাণ অন্য সকল প্রচারণা মাধ্যম থেকে অনেক বেশি। ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে খুব কম খরচে অধিক পরিমাণ সম্ভাব্য গ্রাহক বা ক্রেতার নিকট পৌঁছানো যায়। কাজেই ইমেইল মার্কেটিং ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
    • সরাসরি যোগাযোগঃ ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা সম্ভব হয় যেটি অন্য প্রচারণা মাধ্যমে সম্ভব নয়। ফলে একজন ক্রেতা সত্যিকার অর্থেই আগ্রহী হয়ে যোগাযোগ করতে পারেন যা পণ্য বা সেবা বিক্রির সম্ভাবনা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
    • ফলাফল গণনাঃ ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনি কতটা সফলতা পাচ্ছেন তার ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া সম্ভব হয়। অর্থাৎ আপনার মেইলের লিঙ্কে কতজন ক্লিক করছে, কতজন ইমেইল পড়ছে ইত্যাদি বিভিন্ন তথ্য সহজেই পাওয়া যায়। ফলে এখানে সঠিক ফলাফল না পেলে সহজেই ইমেইলের ধরণ পরিবর্তন করে আরও ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব হয়। অর্থাৎ কেমন ধরণের ইমেইল ক্রেতাদের বেশি আকর্ষণ করছে তা সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা থাকে। তাই এটি বেশ কার্যকরী একটি প্রচার মাধ্যম।
    • কাস্টমাইজযোগ্য কন্টেন্টঃ ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ইমেইলগুলো নিজের ইচ্ছামতো কাস্টোমাইজ করা সম্ভব হয়। ফলে বিভিন্ন ধরণের ক্রেতার জন্য বিভিন্ন রকম ইমেইল তৈরি করা যায়। এতে করে আরও বেশি ক্রেতা আগ্রহী হতে পারেন পণ্য বা সেবার প্রতি। কোন ধরণের ক্রেতা কেমন ইমেইল পছন্দ করছেন এই ব্যাপারেই একজন ইমেইল মার্কেটারের দক্ষতা অর্জন করতে হয়। আরও জানতে পারেন ইমেইল সিগনেচার কী ও কীভাবে তৈরি করে? কেন দরকার?

    এই সকল সুবিধার জন্যই ইমেইল মার্কেটিংয়ের বেশ চাহিদা রয়েছে। কাজেই ইমেইল মার্কেটিংয়ে সঠিক দক্ষতা অর্জন করতে পারলে সহজেই নিজের অবস্থান তৈরি করে নেয়া যায় এখানে।

কীভাবে করে ইমেইল মার্কেটিং?

ইমেইল মার্কেটিংয়ে দক্ষতা অর্জন করতে ধাপে ধাপে এগোনো উচিত। প্রতিটি ধাপে পুরোপুরি দক্ষতা অর্জন করলে তবেই সফলতা পাওয়া যেতে পারেঃ

  • নিজের ইমেইল তালিকা তৈরি করাঃ আপনি যে পণ্য বা সেবার জন্য ইমেইল মার্কেটিং করতে চান প্রথমেই সেই সেবার প্রতি আগ্রহী ক্রেতাদের ইমেইল ঠিকানার তালিকা তউরু করে নিতে হবে। এর জন্য ইমেইল মার্কেটাররা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে থাকেম। যেমনঃ পণ্যে ইমেইল ঠিকানা দিলে পণ্যে বা সেবায় বাড়তি ডিস্কাউন্ট বা সুবিধা। অর্থাৎ ইমেইল ঠিকানা নিতে অবশ্যই আপনাকে অনুমতি নিতে হবে গ্রাহকদের। এই অনুমতি পেতে বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
  • ইমেইল মার্কেটিং প্লাটফর্ম ব্যবহারঃ অনলাইনে অনেক ইমেইল মার্কেটিং প্লাটফর্ম রয়েছে। যেমনঃ মেইলচিম্প, কন্সট্যান্ট কন্ট্যাক্ট, এক্টিভ ক্যাম্পেইন ইত্যাদি। আপনার বাজেট ও সুবিধা অনুযায়ী যে কোন প্লাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন এবং দক্ষতা অর্জন করতে পারেন।
  • আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরিঃ আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরি করার উপর নির্ভর করে ইমেইল মার্কেটিংয়ের সফলতা। ফলে কন্টেন্ট তৈরির ব্যাপারে আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং আকর্ষণীয় ও সৃজনশীল কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে। বিভিন্ন ফরম্যাটে এই কন্টেন্ট তৈরি করতে পারেন। যেমনঃ নিউজলেটার, প্রমোশনাল ইমেইল, ইভেন্টের ইনভাইটেশন ইত্যাদি।
  • ইমেইলে নিজস্বতা দেয়াঃ প্রতিটি ইমেইলে গ্রাহক বা ক্রেতার নাম ও সেই অনুযায়ী কন্টেন্ট দিয়ে তাকে আরও আগ্রহী করে তুলতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এতে সহজে সফলতা পাওয়া যায়।
  • মোবাইলের জন্য অপ্টিমাইজঃ আপনার তৈরি করা ইমেইল কন্টেন্টগুলো অবশ্যই মোবাইল ডিভাইসের জন্য অপ্টিমাইজড হতে হবে কেননা অনেকেই মোবাইলের মাধ্যমে তাদের ইমেইল দেখে থাকেন। সুতরাং ইমেইল মোবাইলের জন্য অপ্টিমাইজড না হলে গ্রাহক সহজেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। কাজেই এই ব্যাপারেও দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

মূলত এমন বিভিন্ন দিকে লক্ষ্য রেখে সে অনুযায়ী দক্ষ হয়ে উঠলে আপনি সফল ইমেইল মার্কেটার হতে পারবেন। কাজেই এসব ব্যাপারে দক্ষতা অর্জন করা জরুরি ইমেইল মার্কেটিং হতে আয় করতে চাইলে।

 

0 responses on "ইমেইল মার্কেটিং কী কীভাবে করে (বিস্তারিত)"

Leave a Reply

© Technial Bangla. All rights reserved. 2025