বর্তমানে এই উন্নত টেকনোলজির যুগে আমরা প্রত্যেকেই ওয়াইফাই এর নাম শুনেছি এবং আমরা অনেকেই ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য মোবাইল কম্পিউটার ল্যাপটপ ট্যাবলেট ইত্যাদির ডিভাইসে ওয়াইফাই (WiFi) ব্যবহার করে থাকি। তো আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব ওয়াইফাই কি বা ওয়াইফাই কাকে বলে ? ওয়াইফাই কিভাবে কাজ করে ? WiFi এর সুবিধা-অসুবিধা ইত্যাদি বিষয়।
আপনাদের অনেকেরই মনে ধারণা আছে ওয়াইফাই শুধুমাত্র ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ব্যাপারটা সেরকম নয়। প্রথমদিকে শুধুমাত্র ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য ওয়াইফাই ব্যবহার করা হতো না।
আপনারা প্রত্যেকেই জানেন Internet আবিষ্কার হয় বহু বছর আগে। তখন কিন্তু সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারত না তখন ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য অনেকগুলো কেবিল এর প্রয়োজন হতো। কিন্তু দিন দিন উন্নত প্রযুক্তির কারণে ইন্টারনেট ব্যবহারের সিস্টেমটাও বদলে যায়। খুব বেশি না আপনারা দশ বছর আগেকার কথা ভাবুন আপনার এলাকায় আপনার আশেপাশে কতজন মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করত। কিন্তু বর্তমানে আপনাদের ঘরে ঘরে ইন্টারনেট চলে এসেছে।
আগে এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে ডাটা ট্রান্সফার করার জন্য কিন্তু কেবল ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তির উন্নতির কারণে ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে ডাটা ট্রান্সফার করা হয় কোনরকম কেবল ছাড়া অর্থাৎ ওয়্যারলেস ওয়াইফাই মাধ্যমে। WiFi হলো এক ধরনের wireless technology কোনরকম তার ছাড়াই যে কোন ডিভাইসে ডাটা ট্রান্সফার করা যায়।
WiFi কি ?
ওয়াইফাই এর পূর্ণরূপ হল ওয়্যারলেস ফেডিলিটি (wireless fidelity) । ওয়াইফাই হলো এক ধরনের ওয়ারলেস নেটওয়ার্ক টেকনোলজি (wireless network technology) । যার মাধ্যমে হাই স্পিড ইন্টারনেট বা হাই স্পিড নেটওয়ার্ক radio signal এর দ্বারা provide করে। WiFi হলো wireless প্রযুক্তি।
আপনারা অনেকেই দ্রুত গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য বাড়িতে WiFi ব্যবহার করেন। এছাড়া বিভিন্ন হোটেলে, স্টেশনে, এয়ারপোর্টে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন মার্কেটে ওয়াইফাই ব্যবহার করা হয় ইন্টারনেটের স্পিড টা যেন ভালো হয় সেজন্য।
WiFi আবিষ্কার করেন কে ?
wifi আবিষ্কার করেন john o’sullivan । Wifi কত সালে সর্বপ্রথম চালু হয় বা wifi কবে আবিষ্কৃত হয় এই প্রশ্নটা আপনাদের মনে আসতে পারে , ওয়াইফাই ১৯৯৭ সালে আবিষ্কার হয়।
ওয়াইফাই কিভাবে কাজ করে (how Wi-Fi works in Bengali) :
তো চলুন এবার আমরা জেনে নেই WiFi কিভাবে কাজ করে। ওয়াইফাই টেকনোলজিতে এমন একটা ডিভাইস থাকে যা wireless signal কে ট্রান্সমিট করে এটি সাধারণত ওয়াইফাই রাউটার (wifi router) বা hotspot হয়ে থাকে সেই রাউটারটি আইএসপি থেকে আসা ইন্টারনেটকে রেডিও তরঙ্গে কনভার্ট করে একটি নির্দিষ্ট এরিয়ায় ছড়িয়ে যা WiFi zone নামে পরিচিত। এবং সেই ওয়াইফাই জোন টি wireless local area network আকার ধারণ করে। এবং ওই নির্দিষ্ট স্থানে থাকা যতগুলো ডিভাইস আছে যেমন laptop, computer, mobile, tablet, printer এই ডিভাইসগুলি হটস্পট দ্বারা খুব সহজেই কানেক্ট হতে পারে
ডেক্সটপ কম্পিউটারে Wi-Fi adaptor থাকে না এর জন্য এর জন্য USB Port সাহায্যে এক্সট্রা ওয়াইফাই এডাপ্টার লাগিয়ে ওয়াইফাই ব্যবহার করা হয়।
WiFi এর প্রকারভেদ (WiFi standard in bengali) :
ওয়াইফাই এর প্রকারভেদ বা WiFi এর স্ট্যান্ডার্ড কত এই বিষয়গুলিত নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
IEEE 802.11a : একটি ১৯৯৯ সালে তৈরি করা হয়েছিল যা ৫ GHz ফ্রিকোয়েন্সিতে ১১৫ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত ৫৪ mbps গতিতে কাজ করতে। এটি মূলত কমের্সিয়াল কাজে ব্যবহার করা হয় যেমন অফিস, বিভিন্ন কোম্পানি ইত্যাদি।
IEEE 802.11b : এটি গৃহ বা Domestic কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি কাজ করে ২.৪ GHZ ফ্রিকোয়েন্সিতে যার স্পিড ১১ mbps ।
IEEE 802.11g : এটি ২০০৩ সালে তৈরি হয়। এটি ২.৪ ফ্রিকোয়েন্সি তে কাজ করে এবং যার স্পিড ৫৪ mbps। এটি খুবই wifi এর জনপ্রিয় standard ছিলো ।
IEEE 802.11n : ২০০৯ সালে ওয়াইফাই এর নতুন standard তৈরি হয়। দুটো আলাদা আলাদা ব্যান্ড (Dual band router) নিয়ে গঠিত । একটি ২.৫ GHZ ব্যান্ড আরেকটি ৫ GHZ ব্যান্ড। যার স্পিড upto Up to 600Mbps
IEEE 802.11ac : এটি ২০১৩ সালে তৈরি করা হয় । এটি ৫ GHZ এ কাজ করে। যার সর্বোচ্চ স্পিড ১.৩ GBPS ।
WiFi এর সুবিধা কি কি ? (Advantage of Wi-Fi in Bengali) :
চলুন তাহলে নিচে ওয়াইফাই এর সুবিধাগুলো বিস্তারিত আলোচনা করি
১. এক বা একাধিক ডিভাইসে WiFi সংযোগ করে ইন্টারট ব্যবহার করা হয়। মোবাইল ল্যাপটপ কম্পিউটার ট্যাবলেট একাধিক ডিভাইস আপনি ওয়াইফাই সংযোগ করতে পারবেন।
২. ওয়াইফাই স্পিড মোবাইল ডাটা থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। তবে আপনি ওয়াইফাই প্যাক এর জন্য যত বেশি টাকা রিচার্জ করবেন তত বেশি স্পিড পাবেন।
৩. বর্তমানে smart TV তে WiFi সংযোগ করে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।
৪. বর্তমানে ওয়াই-ফাই প্রযুক্তির মাধ্যমে কোন ডাটা ক্যাবল ব্যবহার না করে এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে আপনারা যে কোন ডাটা ট্রান্সফার করতে পারবেন। যেমন shareit, xender ইত্যাদি অ্যাপসের মাধ্যমে।
WiFi এর অসুবিধা :
Wi-Fi এর সুবিধাই বেশি। ওয়াইফাই এর অসুবিধা বলতে গেলে খুবই কম। ওয়াইফাই এর অসুবিধা গুলো কি কি সেগুলো নিচে বিস্তারিত আলোচনা হচ্ছে ।
১. নির্দিষ্ট WiFi Zone এর বাইরে চলে গেলে আপনারা ওয়াইফাই সংযোগ করে internet ব্যবহার করতে পারবেন না। WiFi মূলত ৩০-১০০ মিটারের মধ্যে এক্সেস করে । এর বেশি দূর থেকে ওয়াইফাই সংযোগ করে ইন্টার্নেট ব্যবহার করতে পারবেন না ।
২. WiFi খুব একটা secure না ।
ওয়াইফাই এর মাসিক বিল কত :
আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে ওয়াইফাই ব্যবহারে খরচ কত। আসলে আপনি ওয়াইফাই এর জন্য বেশি টাকা রিচার্জ করলে বেশি স্পিড পাবেন আর কম টাকা রিচার্জ করলে কম স্পিড পাবেন। যেমন বর্তমানে ইন্ডিয়াতে সর্বনিম্ন ওয়াইফাই এর মাসিক বিল প্রায় 450 টাকা। আর বাংলাদেশ এর থেকে একটু বেশি হতে পারে।
আশাকরি, আপনারা ওয়াইফাই সম্পর্কে বিভিন্ন রকম তথ্য জানতে পারলেন। আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লাগলো অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন ধন্যবাদ।
0 responses on "WiFi কি ? WiFi কিভাবে কাজ করে ? ওয়াইফাই এর সুবিধা ও অসুবিধা (What is WiFi in bengali)"