সম্প্রতি ২০০৭ সালে নির্মিত একটি অরিজিনাল আইফোন ইনট্যাক্ট বক্সে থাকা অবস্থায় নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। নিলামে বিক্রিকৃত আইফোন গুলোর মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে এই ফোনটিতে।
আইফোনের প্রথম জেনারেশনের এই ফোনটি তার অরিজিনাল বিক্রয় মূল্য থেকে প্রায় ৩০০ গুন বেশি দামে বিক্রি করা হয়েছে। এটি রেকর্ড পরিমাণ অর্থ ১ লক্ষ ৯০ হাজার ৩৭৩ মার্কিন ডলারে নিলামে বিক্রয় হয়েছে, যা আজকের বাজার মূল্য দরে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২ কোটি ৬ লক্ষ ৯১ হাজার ২৯৯ টাকা।
অ্যাপল তাদের ৪ জিবি অরিজিনাল আইফোন খুব সম সময়ের জন্য বাজারে রেখেছিলো। আইফোন তাদের স্মার্টফোনের জগতে পথ চলা শুরু করার মূহুর্তে ৪ জিবি ও ৮ জিবি মডেলের দুইটি ফোন লঞ্চ করে। সে সময় ৪ জিবি মডেলের ফোনটি কেনার জন্য ৪৯৯ ডলার এবং ৮ জিবি মডেলের ফোনের ক্ষেত্রে ৫৯৯ ডলার খরচ করতে হতো। স্বভাবতই মাত্র ১০০ ডলার এর জন্য মানুষ অতিরিক্ত ৪ জিবি হারাতে চাবেন না। এ কারণে আইফোনের ৪ জিবি মডেলের তুলনায় ৮ জিবি মডেলটি মানুষের কাছে বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
২০০৭ সালের ২৯ শে জুন প্রথমবার আইফোন লঞ্চ হওয়ার পর থেকে মাত্র কিছু মাস যেতে না যেতেই তাদের ৪ জিবি মডেলটি বাজারজাতকরণ বন্ধ করে দেয় অ্যাপল। তারা তখন নতুন ৮ জিবি মডেলের ফোনের দিকে বেশি মনোযোগ দেয় এবং জায়গা আরো বাড়ানোর চিন্তা শুরু করে। এ কারণেই আইফোন ৪ জিবি মডেলের এই ফোনটি অ্যাপল কোম্পানির আইফোনের প্রথম জেনারেশনের ফোন গুলোর মধ্যে সবথেকে বিরল।
আইফোন ৪ জিবি মডেলের এই ফোনটি এলএসজি অকশন কোম্পানির অকশনে বিক্রিত হয়েছে। এই কোম্পানি ইতোপূর্বে আরো অনেক প্রথম জেনারেশন এর আইফোন বিক্রয় করেছে। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারি মাসে তারা একটি প্রথম জেনারেশনের আইফোন প্রায় ৬৩ হাজার ৩৫৬ মার্কিন ডলারে বিক্রি করেছিলো। এছাড়া রাইট অকশন নামের আরেকটি ফার্ম গত মার্চ মাসে একটি প্রথম জেনারেশনের আইফোন বিক্রি করে। সেই আইফোনের দাম প্রায় ৪০ হাজার ৩২০ মার্কিন ডলার ছিলো।
এলএসজি অকশন এই ফোনের বিরল হবার কথা মাথায় রেখে এটিকে আইফোন সংগ্রহকারীদের মধ্যে একটি বহুল আকাঙ্ক্ষিত বস্তু হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এখনকার সময়ে একটি প্রথম জেনারেশন এর আইফোন এভাবে ফ্রেশ অবস্থায়, ডিসপ্লে কোনো প্রকার ড্যামেজ ছাড়া এমনকি কোনো বাটন নষ্ট হওয়া ছাড়া পাওয়া খুবই দুর্লভ ব্যাপার।
এলএসজি অকশন এই প্রোডাক্টটি লিস্ট করার সময় উল্লেখ করে যে এই ফোনটির প্রেরক মূলত আইফোন প্রথম চালু হওয়ার সময় কালে অ্যাপল এর মূল ইঞ্জিনিয়ারিং দলের একটি অংশ ছিলো। যদিও এই ফোনটি তার পূর্ববর্তী মালিকের কাছে কিভাবে এসেছিলো এ বিষয়ে কোনো ধারনা পাওয়া যায়নি। এমনও হতে পারে অ্যাপল তাদের কাজের উন্নতি সাধনের জন্য এই ফোনটি তার পূর্ববর্তী মালিককে দিয়েছিলো অথবা তিনি সাধারণ মানুষের মতো দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ফোনটি অ্যাপল স্টোর থেকে ক্রয় করেছেন।
এলএসজি অকশন এই আইফোনটির নিলাম জুন ৩০ থেকে জুলাই ১৬ পর্যন্ত পরিচালনা করেছিলো। এই নিলামের সর্বপ্রথম বিড ছিল প্রায় ১০ হাজার মার্কিন ডলার। প্রথম বিডের পরে এই ফোনের জন্য সর্বমোট ২৮ টি বিড করা হয় এবং যার মাধ্যমে ১ লক্ষ ৯০ হাজার ৩৭৩ মার্কিন ডলারের রেকর্ড মূল্যে এই ফোনটি বিক্রি করা সম্ভব হয়।
প্রথম জেনারেশনের আইফোনের ক্ষেত্রে অদূর ভবিষ্যতে এতো বেশি মূল্যে আর কখনো আইফোন নিলামে বিক্রি হবে কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে আইফোনের প্রবর্তক স্টিভ জবস যদি কোনো গোপন স্থানে নিজ হাতে কোনো প্রথম জেনারেশনের আইফোন লুকিয়ে রেখে থাকেন তাহলে সেটি আইফোন নিলামের ইতিহাসে সকল রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলতেই পারে। আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এছাড়া প্রযুক্তি ভিত্তিক সকল প্রকার আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।
0 responses on "২ কোটি টাকা দামের আইফোন, জানুন কেন এতো দাম!"