এন্ড্রয়েড মোবাইল টিপস – আজ আমি, আপনি এবং মোবাইল ফোন ব্যবহার করা লোকেদের মধ্যে প্রায় ৮০ % লোকেরা একটি স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন। এবং, সেই মোবাইল ব্যবহার করা লোকেদের মধ্যে বেশিরভাগেই এন্ড্রয়েড মোবাইল ব্যবহার করেন। Android mobile সবাইর মাঝে খুব প্রচলিত এবং লোকেরা কিছু হাসধারণ এবং কাজের android টিপস জানার জন্য অবশই রুচি রাখেন।
তাই, এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে, সেরা এবং প্রয়োজনীয় এন্ড্রয়েড মোবাইলের কিছু টিপস এবং ট্রিকস শেয়ার করবো। আমি নিচে দেয়া Android মোবাইল টিপস গুলি অনেক কাজের এবং আপনাদের অবশই ভালো লাগবে। (Top 15 android mobile tips and tricks).
এন্ড্রয়েড মোবাইলের সেরা ১৫ টি টিপস এন্ড ট্রিকস -(Android tips)
এখন, আমি নিচে বলা মোবাইলের টিপস বা ট্রিকস গুলির মধ্যে হয়তো কিছু আপনার আগেও জানা থাকতেই পারে। কিন্তু, অনেকেই হয়তো সেই সাধারণ জিনিস গুলিও জানেনা যেগুলি আমাদের জন্য জল ভাত।
তাই, আমি যে ১৫ টি android মোবাইল টিপস এর ব্যাপারে বলবো, সেগুলি আমার মতে অনেক কাজের এবং কিছু টিপস (tips) সাধারণ হলেও, এন্ড্রয়েড মোবাইল (android mobile) ব্যবহার করা সব ধরণের লোকেরা সেগুলি জানাটা জরুরি।
Top 15 android mobile tips in Bnagla
১. Disable unnecessary pre-installed apps
আমরা যখন একটি এন্ড্রোয়েড স্মার্টফোন (android smartphone) কিনি, তখন তাতে আগের থেকেই কিছু apps install করা থাকে যেগুলি আমরা ব্যবহার করিনা। এবং, এই এপ্লিকেশন (application) গুলি আমাদের মোবাইলের ইন্টারনাল স্টোরেজ স্পেস নিয়ে রাখে এবং background update বা background এ চলতে থাকার ফলে মোবাইলের ব্যাটারী, storage এবং processor ব্যবহার হোতে থাকে।
তাই, অকারণে নিজের মোবাইলের ব্যাটারী এবং স্পিড ক্ষয় হতে না দেয়ার জন্য, আপনি সেই pre-installed apps গুলি Disable কোরে রাখতে পারেন।
Apps disable করলে, আপনার প্রয়োজন না হওয়া apps গুলি মোবাইল ফোনে থাকা সত্ত্বেও কোনো রকমের কাজ করবেন। Background এ চলতে থাকা বা ব্যাটারী ব্যবহার করা, এধরণের কাজ apps গুলি করতে পারবেনা।
Android apps disable করার জন্য আপনারা >> settings >> app manager বা apps এ গিয়ে app বেঁচে তারপর তাকে enable বা disable করতে পারবেন।
২. Restrict background data of apps
আমাদের মোবাইলের অনেক রকমের apps কম বেশি পরিমানে background এ data বা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে থাকে। সেবেপারে আমরা বুঝিনা কিন্তু background এ ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে আপনার ইন্টারনেট প্যাক (internet pack) অনেক জলদি শেষ হয়ে আসে এবং আপনি তার কারণ বুঝে পাননা।
তাই, android mobile এর settings অপশনে গিয়ে তার পর Data usage অপশনে গেলে, আপনারা সেই apps এর তালিকা দেখবেন যেগুলি মোবাইলে সব থেকে বেশি ইন্টারনেট ডাটা (internet data) ব্যাকগ্রাউন্ডে (background) ব্যবহার করছেন।
এবং, apps এর তালিকার থেকে, যেই app সব থেকে বেশি background data ব্যবহার করছে তাকে select বা ক্লিক কোরে তাতে থাকা “data” অপশনটি disable কোরে দিলেই সেই app ব্যাকগ্রাউন্ডে আর ডাটা বা ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন।
৩. মোবাইলের ব্যাটারির আয়ু বাড়ান
মোবাইল চার্জে (charge) দিয়ে ব্যবহার করবেননা। এতে, মোবাইলের ব্যাটারিতে খারাপ প্রভাব পরে এবং অনেক জলদি ব্যাটারি খারাপ হয়ে যেতে পারে।
তাছাড়া, আপনার android mobile সব সময় ৯২% বা তার থেকে কম চার্জ দিবেন এবং ২০% এর নিচে চার্জ থাকলে ব্যবহার করবেননা।
সম্পূর্ণ ১০০% চার্জ হয়ে গেলে, ধ্যান দিয়ে চার্জার টা মোবাইল থেকে খুলে দিবেন। নাহলে, ব্যাটারিতে চাপ পরে।
মোবাইলের ব্যাটারির সাথে জড়িত এই টিপস গুলি মেনে চললে, আপনার এন্ড্রয়েড মোবাইলের ব্যাটারী অনেক বছর ভালো ভাবে কাজ করবে।
৪. ইন্টারনাল স্টোরেজ ফ্রি করুন
আমাদের মোবাইলের ইন্টারনাল স্টোরেজ (internal storage) যখন সম্পূর্ণ ভাবে শেষের দিকে এসে পরে, তখন কিছু এপস ইনস্টল (apps install) করতে গেলেই, “Low internal storage” এর একটি মেসেজ চোলে আসে। ফলে, নতুন এপস মোবাইলে ইনস্টল করাটা অসম্ভব হয়ে পরে।
তাছাড়া, মোবাইলের ইন্টারনাল স্টোরেজ লো হয়ে গেলে বা অনেক কোমে গেলে, মোবাইল স্লো কাজ করে এবং কিছু ক্ষেত্রে হ্যাং (hang) হওয়া শুরু করে।
তাই, কিছু সাধারণ টিপস ব্যবহার কোরে আপনারা নিজের মোবাইলের ইন্টারনাল স্টোরেজ স্পেস (internal storage space) বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
- Delete unnecessary apps – সবচে আগেই, আপনার মোবাইলের ইন্টারনাল স্টোরেজ থেকে অপ্রয়োজনীয় এপস ডিলিট করুন। যেসব, এপস আপনি ব্যবহার করেন কেবল সেগুলি মোবাইল ফোনে রাখুন।
- Shift media to memory card – যদি আপনার মোবাইল অনেক videos বা music file আছে, তাহলে সেগুলি একটি external memory card এ transfer করুন। কেবল, Rs.৩০০ এর ভেতরেই আপনারা একটি ১৬ জিবি memory card বাজারে পেয়েযাবেন।
- Clean apps cache data – প্রত্যেকটি apps আপনার মোবাইলের কিছু জায়গা ক্যাশে ডাটা (cache data) হিসেবে নিয়ে রাখে। তাই, সময়ে সময়ে এই ক্যাশে ডাটা ডিলিট কোরে আপনারা মোবাইলের ইন্টারনাল স্টোরেজ বাড়িয়ে নিতে পারবেন। আপনারা, settings >> manage apps বা installed apps এ গিয়ে এক এক কোরে apps বেঁচে নিয়ে তারপর cache delete বা delete data অপশনে গিয়ে মোবাইলে ক্যাশে ডিলিট করতে পারবেন।
৫. Reboot your smartphone
যেভাবে, আমাদের শরীরে ঘুমের প্রয়োজন এবং ঘুমোলে আমরা fresh এবং সক্রিয় মনে করি ঠিক সেভাবেই একটি স্মার্টফোন ও মাঝে মাঝে রিস্টার্ট (restart) বা রিবুট (reboot) করলে, সে fresh এবং আবার সক্রিয় (active) হয়ে উঠে।
আপনি, নিজেই দেখবেন, যখন আপনার মোবাইল বেশি হ্যাং (hang) হবে বা স্লো (slow) কাজ করবে, তখন তাকে একবার restart বা reboot করে দিলেই সে আবার দ্রুত কাজ করা শুরু করে।
তাই, আপনার android smartphone দিনে একবার হলেও reboot বা restart করবেন। এতে, মোবাইলের কর্মক্ষমতা হটাৎ ভালো হয়ে উঠে।
৬. Make smartphone stylish
আপনারা launcher apps এর ব্যাপারে জানেন কি না ? বিভিন্য Launcher aaps যেমন Nova launcher বা Go launcher বা আরো অনেক রকমের ফ্রি launcher apps এন্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্টল কোরে বিভিন্য themes এর দ্বারা নিজের স্মার্টফোনের LOOKS CUSTOMIZE, icon, home screen customize করে বদলে দিয়ে আরো আকর্ষণীয় বানিয়ে নিতে পারবেন। আপনারা হাজার হাজার সুন্দর এবং আকর্ষণীয় থেমিস (themes) পেয়েযাবেন।
৭. মোবাইলের স্ক্রিন রেকর্ড করুন
আপনারা যদি YouTube tutorial videos বানান তাহলে এন্ড্রয়েড মোবাইল ব্যবহার করে স্ক্রিন রেকর্ড করে স্ক্রিনের ভিডিও বানানোর প্রক্রিয়া আপনাদের অনেক কাজে আসবে।
গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে, AZ screen recorder বা Mobizen screen recorder app এর মধ্যে যেকোনো একটি নিজের মোবাইলে ডাউনলোড এবং ইনস্টল কোরে, আপনারা android মোবাইলের স্ক্রিন ভিডিও হিসেবে রেকর্ড করতে পারবেন।
৮. মোবাইলে antivirus apps ব্যবহার
একটি android mobile কেনার পর আমরা তাতে অনেক রকমের apps বা files ব্যবহার করি এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্য ওয়েবসাইটে visit করাটাতো সাধারণ কথা।
কিন্তু, আপনারা জানেন, ইন্টারনেটের বিভিন্য ওয়েবসাইট, apps বা files এর অবিশ্বস্ত জায়গার থেকে নিজের মোবাইলে ডাউনলোড করা বা ব্যবহার করায় আপনার মোবাইলে অনেক ধরণের malware, spyware, adware বা Trojan ভাইরাস ঢুকে জায়গা কোরে নিতে পারে।
তাই, অবশই নিজের এন্ড্রয়েড মোবাইলে একটি ভালো এন্টিভাইরাস app ব্যবহার করবেন। যাতে, বাইরের থেকে আপনার মোবাইলে কোনো রকমের ক্ষতিকারক ভাইরাস না ঢুকতে পারে।
৯. Clean master app এর ব্যবহার
আমাদের মোবাইল কিছুদিন ব্যবহার করার পরেই, তাতে অনেক ধরণের junk files, cache files বা app ডাটা জমা হয়ে যায়।
এবং, এই অপ্রয়োজনীয় ডাটা গুলি আমাদের মোবাইলের ইন্টারনাল স্টোরেজ ভর্তি করে রাখে। তাছাড়া, মোবাইল স্লো হওয়া বা হ্যাং মারা, এরকম ধরণের মোবাইলের সমস্যাও আপনারা অনুভব করবেন যদি এই অপ্রয়োজনীয় ডাটা গুলি মোবাইলে জমা হতে থাকা।
তাই, clean master app ব্যবহার কোরে আপনারা কেবল একটি ক্লিকেই মোবাইলের সব ধরণের অপ্রয়োজনীয় ডাটা বা ফাইল ডিলিট কোরে নিজের মোবাইলের স্টোরেজ (storage) বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
তাছাড়া, RAM clean কোরে মোবাইল ফাস্ট করার জন্য phone boost অপসন এখানে রয়েছে। Boost করার পর আপনি নিজেই মোবাইলের দ্রুত স্পিড অনুভব করতে পারবেন।
১০. Use find my phone feature
গুগলে এন্ড্রয়েড মোবাইলের জন্য একটি বিশেষ ফীচার (feature) দিয়েছে। সেটা হলো, Google find my device. এই ফীচার ব্যবহার কোরে আপনারা নিজের হারিয়ে যাওয়া এন্ড্রয়েড মোবাইলের লোকেশন (location) খুঁজে বের করতে পারবেন।
হে, আপনার android মোবাইল যদি হারিয়ে গেছে, তাহলে Google find my device এর ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার হারিয়ে যাওয়া মোবাইলে যেই google account registered ছিল সেই Google বা gmail আইডি দিয়ে লগইন (login) করতে হবে।
এর পর, গুগল আপনাদের হারিয়ে যাওয়া মোবাইলের লোকেশন (location) ম্যাপ (map) এর মাধ্যমে দেখিয়ে দিবে। এবং, মাপের মাধ্যমে আপনারা মোবাইলটি কথার থেকে কোথায় যাচ্ছে বা নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেটাও জানতে পারবেন।
তাছাড়া, এর “Play sound” ফীচার ব্যবহার কোরে হারিয়ে যাওয়া মোবাইলে আওয়াজ (sound) করতে পারবেন।
এর “Erase device” ফাঙ্কশন ব্যবহার কোরে মোবাইলের সব ডাটা বা ফাইল ডিলিট কোরে দিতে পারবেন। কিন্তু, তার পর আপনি তাকে এর app বা ওয়েবসাইটে মাধ্যমে লোকেট (locate) করতে পারবেননা।
১১. Android mobile root করুন
এখন, আপনারা android মোবাইল রুট করার কথাতো অবশই শুনেছেন। মোবাইল রুট করার পর আপনারা কিছু বিশেষ ধরণের apps বা features এন্ড্রয়েড মোবাইলে ব্যবহার করতে পারবেন যেগুলি রুট ছাড়া মোবাইলে কাজ করবেনা।
তাছাড়া, মোবাইল রুট করার পর আপনারা তার UI (User interface) বদলে তাকে আরো আকর্ষণীয় বানাতে পারবেন। মোবাইলে বিভিন্য stock ROM ইনস্টল করতে পারবেন। এবং, মোবাইলের pre-installed apps ডিলিট করতে পারবেন।
১২. Portable Wifi হটস্পট (hotspot) এর ব্যবহার
আমাদের মোবাইলের সেটিংস (settings) অপশনে থাকা “personal/Portable hotspot” অপশনটি কি এবং এর কাজ কি, এবেপারে অনেকেই হয়তো জানেননা।
আসলে, যখন আমরা মোবাইলে wifi hotspot option টি on বা চালু করে দেয়, তখন অন্য কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা মোবাইলের wifi চালু কোরে জেকেও আপনার চালু করা hotspot connection এর সাথে wifi এর মাধ্যমে যোগ (connect) হয়ে আপনার মোবাইল থেকে ইন্টারনেট বা ডাটা ব্যবহার করতে পারবে।
একটি মোবাইল থেকে অন্য মোবাইল বা কম্পিউটারে ইন্টারনেট শেয়ার (share) করার জন্য wifi hotspot অপশনের ব্যবহার করা হয়।
১৩. Use Dual apps feature
আজকালকার নতুন মডেলের android mobile গুলিতে Settings option এ “Dual apps“, “Duplicate app” বা “app clone” বোলে একটি function দেয়া থাকে।
এই feature ব্যবহার কোরে আপনারা একটি মোবাইলে দুটি app ব্যবহার করতে পারবেন। যেমন, একটি মোবাইলে দুটি হোয়াটস্যাপ (whatsapp) একাউন্ট ব্যবহার করা।
১৪. OTG cable এর ব্যবহার
এন্ড্রয়েড মোবাইলে OTG ক্যাবল (cable) ব্যবহার কোরে আপনারা মোবাইলেই pendrive, mouse, keyboard বা গেম খেলার জন্য game pad ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়া, আজকাল অনেক ধরণের ছোট ছোট গ্যাজেট (gadget) বের হয়ে গেছে যেগুলি আপনারা OTG cable এর মাধ্যমে android মোবাইলে ব্যবহার করতে পারবেন।
১৫. Reset / restore factory settings
আপনারা নিজের মোবাইলের settings option এ “Restore data“, “factory reset“, “Restore” এরকম ধরণের একটি অপশন পেয়ে যাবেন। এই অপসন ব্যবহার কোরে আপনারা নিজের মোবাইলের সব ডাটা এবং ফাইল ডিলিট কোরে তাকে আবার কেনা অবস্থায় নিয়ে যেতে পারবেন।
মানে, যখন আপনার মোবাইল কেনার সময় একেবারে ফাস্ট এবং দ্রুত ছিল সেই অবস্থায়। কিন্তু, মনে রাখবেন, এই function ব্যবহার করার পর, আপনার মোবাইলের সব কিছু ডিলেট হয়ে যাবে যা যা আপনি নিজের থেকে মোবাইলে ইনস্টল করেছেন বা রেখেছেন।
তাহলে বন্ধুরা, আশা করি আমার এই এন্ড্রয়েড মোবাইলের কিছু সেরা এবং জরুরি টিপস এবং ট্রিকস আপনাদের ভালো লেগেছে। যদি আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে, তাহলে শেয়ার অবশই করবেন।
0 responses on "১৫ সেরা এন্ড্রয়েড মোবাইল টিপস এবং ট্রিকস (Android tips & tricks)"