নিয়মিত স্মার্টফোন ব্যবহার করেন না, এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবেনা। তবে মাঝেমধ্যে প্রিয় স্মার্টফোন এর সমস্যা হতেই পারে, যার কারণে মেরামত এর প্রয়োজন পড়তে পারে। এমন অবস্থায় ফোন রিপেয়ার সেন্টার বা সার্ভিস সেন্টারে পাঠানোর প্রয়োজন হয়। তবে ফোন রিপেয়ার করতে পাঠানোর আগে অবশ্যই কিছু বিষয় নিশ্চিত করা জরুরি। এই পোস্টে স্মার্টফোন মেরামত করতে দেওয়ার আগে যা খেয়াল রাখা উচিত সে সম্পর্কে জানবেন।
বিশ্বস্ত ও সার্টিফাইড সার্ভিস সেন্টার
আপনার প্রিয় ফোনটি অবশ্যই বিশ্বস্ত ও সার্টিফাইড সার্ভিস সেন্টার ছাড়া অন্য কোথাও মেরামত এর জন্য প্রদান করবেন না। যদি মেরামতকারী অদক্ষ হয়, তবে আপনার ফোন ঠিক হওয়ার বদলে উল্টো নতুন সমস্যার সৃষ্টি হবে। তাই যেকোনো সময় ফোন মেরামত এর ক্ষেত্রে পরিচিত স্থান থেকে করা ভালো।
অফিসিয়াল ফোন এর ক্ষেত্রে সরাসরি কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে ফোন জমা নেয়, যার ফলে সার্ভিসিং কোথায় বা কে করছে তা নিয়ে তেমন একটা ভাবতে হয়না। কিন্তু আনঅফিসিয়াল ফোন যেহেতু সার্ভিস সেন্টারে নেওয়ার সুযোগ নেই তা অবশ্যই ফোন পরিচিত ও বিশ্বস্ত কারো কাছ থেকে মেরামত এর চেষ্টা করুন।
সিম কার্ড খুলে ফেলুন
অবশ্যই ফোন মেরামত এর জন্য দেওয়ার আগে সিম খুলে ফেলবেন – এই বিষয়টি জানা হলেও মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য পোস্টে উল্লেখ করা হলো। আপনার সিম কার্ড অনেক অনৈতিক কাজে ব্যবহার সম্ভব, তাই নিজেকে কোনো ধরনের ঝামেলা থেকে দূরে রাখতে ফোন মেরামত এর জন্য দেওয়ার আগে অবশ্যই সিম খুলে রাখুন। সিম ইজেক্টর টুল দিয়ে বেশ সহজে সিম খুলে নিতে পারবেন ফোন রিপেয়ার করতে দেওয়ার আগে, আবার পরে এই সিম লাগিয়ে আগেরমত স্বাভাবিকভাবে ফোন চালানো যাবে।
ক্ষতি সম্পর্কে জানান
অধিকাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী তাদের ফোনের স্ক্রিন ভেংগে গেলে, ব্যাটারির সমস্যা, ইত্যাদি হয়ে একদম ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে গেলে তবেই ফোন মেরামত এর জন্য পাঠান। সবচেয়ে উত্তম বিষয় হলো ফোন মেরামত এর জন্য পাঠানোর সময় অবশ্যই কি কি কম্পোনেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত ও সঠিক তথ্য প্রদান করা। সঠিক তথ্য প্রদান করলে ফোন ভালোভাবে রিপেয়ার করা সম্ভব হবে ও সকল সমস্যার সমাধান করা যাবে। তাই ফোন মেরামত এর সময় অবশ্যই ভালোভাবে সম্পূর্ণ তথ্য প্রদান করবেন মেরামতকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে।
লক বন্ধ করে দিন
ফোন মেরামত এর জন্য পাঠানোর আগে অবশ্যই পিন / ফেস আইডি / ফিংগারপ্রিন্ট করা থাকলে তা ডিলিট করে দিন। এতে মেরামতকারী ভালোভাবে ফোনের সকল বিষয় কাজ করছে কিনা সে বিষয়ে চেক করে দেখতে পারবেন। ফোন এর লক বন্ধ করার মত অবস্থা না থাকলে সেক্ষেত্রে ফোনের লক মেরামতকারীকে জানিয়ে রাখতে পারেন।
তবে ফোনের মধ্যে আপনার গোপনীয় ডাটা থাকলে কিংবা অনলাইন একাউন্টে লগইন করা থাকলে আপনার গোপনীয়তার স্বার্থে আনলক কোড মেরামতকারীকে না দেয়াই ভাল। সেক্ষেত্রে ফোনের স্ক্রিন ঠিক হলে ফোন রিসেট করে নিতে পারবেন উক্ত মেরামতকারী। এর ফলে ফোন ঠিক করার পর সমস্যার সমাধান হয়েছে কিনা তা চেক করা যাবে ও সব ঠিকমত কাজ করছে কিনা তা জানা লাগবে।
ব্যাকআপ ও রিসেট
বর্তমানে সবকিছুই ডিজিটাল হয়ে গিয়েছে। ফোনের কনটাক্ট নাম্বার, ডকুমেন্ট থেকে শুরু করে সকল ধরনের ব্যক্তিগত ও প্রফেশনাল তথ্য ফোনে সেভ করা থাকে। তাই ফোন এর সিকিউরিটি লক খুলে করে দিলে এসব ব্যাক্তিগত বা প্রফেশনাল তথ্য ঝুঁকিতে থাকে। আবার লক ডিলিট না করলে ফোন ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা জানা কিছুটা ঝামেলা। তাই ফোন রিপেয়ার করতে পাঠানোর আগে ফোন থাকা সকল ডাটা ও ফোন নাম্বার মুছে ফেলা উত্তম।
তবে ফোনের ডাটা মুছে ফেলে ফোন মেরামত করতে পাঠানোর আগে অবশ্যই আপনার গুরুত্বপূর্ণ ডাটা এর ব্যাকাপ নিয়ে রাখুন। ব্যাকাপ নিতে পারেন গুগল বা অ্যাপল একাউন্টে, এছাড়া বিভিন্ন ক্লাউড সার্ভিসেও ব্যাকাপ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া পিসিতেও ব্যাকাপ রাখতে পারেন।
একটি ফোন মেরামত করতে পাঠানোর আগে অবশ্যই উল্লেখিত বিষয়গুলো অনুসরণ করে ফোন এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভুলবেন না। এখানে প্রতিটি বিষয় ধারাবাহিকভাবে সাজানো হয়েছে, প্রত্যেকটি বিষয় পরিস্থিতি বুঝে সঠিক বিষয়ের ব্যবহার করা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
0 responses on "স্মার্টফোন মেরামত করতে দেওয়ার আগে যা খেয়াল রাখা উচিত"