বর্তমানে স্মার্টফোন কোনো বিলাসী পন্য নয় বরং এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় একটি পন্য এই প্রয়োজনীয় পণ্যটি কেনার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরি তা আজকে আলোচনা করব।
বর্তমান যুগ হচ্ছে তথ্য ও প্রযুক্তির যুগ। আর এই তথ্য মানুষের হাতে হাতে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেছে স্মার্টফোন। তাই স্মার্টফোনের গুরুত্ব সকলের কাছেই রয়েছে।
আর তাই, এই ফোন কেনার প্রবনতা দিন দিন মানুষের মাঝে বেড়েই চলেছে।
এর সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী ক্রেতার কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা।
তো আজ আমরা জানতে চলেছি একটি স্মার্টফোন কেনার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরি।
বা, একটি ভালো স্মার্টফোন কিভাবে বেঁছে নিবেন, সেবিষয়ে আপনারা এখানে জেনেনিতে পারবেন।
তো চলুন শুরু করা যাক…
স্মার্টফোন কেনার আগে যা জানা দরকার
এমনিতে, ব্র্যান্ডিং (brand) বা স্মার্টফোন এর একটি ভালো কোম্পানি, আমাদের মনে এক অজানা বিশ্বাস এর ভাগ নিয়ে আসে।
এবং, আমরা মনের মধ্যে এটাই ভেবে নেই যে, ভালো কোম্পানির স্মার্টফোনে অবশই ভালো হবে।
তবে হে, ভালো ভালো নামকরা কোম্পানি গুলির smartphones অবশই ভালো থাকে।
কিন্তু, আপনি যদি স্মার্টফোনে কেনার আগে নিচে দেওয়া এই টিপস গুলি ভালো করে ফলো না করেন, তাহলে হতে পারে আপনি বেশি দাম দিয়ে, একটি ভালো কোম্পানির তবে স্লো (slow) এবং কম ফিচারস থাকা মোবাইল কিনে নিতে চলেছেন।
তাই, স্মার্টফোন কেনার সময় নিচে দেয়া এই বিষয় গুলি নিয়ে ঘাটাঘাটি অবশই করবেন।
ভালো স্মার্টফোন কেনার টিপস
নিচে বলা বিষয় গুলি আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতা এবং অনুভব থেকে আপনাদের বলছি।
র্যাম (RAM) :
র্যাম হলো স্মার্টফোনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
RAM, নির্ধারণ করে আপনি আপনার ফোন দিয়ে কাজগুলি কতটা মসৃন ভাবে (smoothly) করতে পারেন।
ভালো মানের থ্রীডি গেম খেলতে হলে আপনার বেশি র্যাম প্রয়োজন।
শুধু ভালো মানের গেমই নয়, বেশি এমবির ও হাই গ্রাফিক থাকা এপ (apps) চালাতেও লাগবে বেশি র্যাম।
অর্থাৎ র্যাম হলো ফোনের প্রধান চালিকা শক্তি।
তাই, খেয়াল রাখবেন যাতে, আপনার বেঁছে নেওয়া স্মার্টফোনে কমেও 3GB RAM থাকে।
রম/স্টোরেজ (Storage):
আজকাল অনেক রকমের স্টোরেজ স্পেস থাকা মোবাইল পাওয়া যায়।
যেমন, ১৬ জিবি, ৩২ জিবি, ৬৪ জিবি এমনকি ১২৮ জিবি পর্যন্ত।
মনে রাখবেন, আপনি যেই মোবাইল কিনছেন তাতে মিনিমাম ৩২ জিবি বা ৬৪ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ স্পেস যেন থাকে।
কারণ যত বেশি ইন্টারনাল স্টোরেজ স্পেস থাকবে আপনি তত বেশি ভিডিও, অডিও, এপ বা অন্যান্য ফাইল রাখতে পারবেন।
তাছাড়া, মোবাইলের স্টোরেজ স্পেস অধিক কমে গেলে, সেটা আপনার স্মার্টফোনের হ্যাং ও স্লো হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ব্যাটারি (Battery):
স্মার্টফোনের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্যাটারি।
মোবাইলের ব্যাটারির mAh যত বেশি হবে, আপনার ফোনের ব্যাটারী ব্যাকআপ ততটাই বেশি হবে।
এক কথায় মোবাইল ফোনে চার্জ ততটাই বেশি সময় থাকবে।
তো চেষ্টা করবেন একটু বেশি MaH এর ব্যাটারি নেওয়ার।
এক্ষেত্রে, ৪০০০ MaH বা এর বেশি নিলে মোটামুটি চলে কিন্তু এর বেশি অর্থাৎ ৫০০০ কিংবা এর বেশি নিতে পারলে ভালো।
এতে, আপনার একদিন কেবল একবার চার্জ দিয়েই সম্পূর্ণ দিন কেটে যাবে।
স্মার্টফোনের ক্যামেরা (Camera):
স্মার্টফোনের ক্যামেরা বর্তমান সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি।
আগে, মানুষ ফটো তোলার জন্য “ডিজিটাল ক্যামেরা” ব্যবহার করতেন।
তবে, এখনের সময়ে ক্যামেরা দিয়ে ফটো তোলার জন্যই হোক চাই ভিডিও রেকর্ডিং এর ক্ষেত্রে, সবটাই হচ্ছে আমাদের স্মার্টফোনে থাকা শক্তিশালী ক্যামেরার মাধ্যমে।
তো বুঝতেই পারছেন, মোবাইলের একটি ভালো ক্যামেরা কতটা প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
আলাদা আলাদা মোবাইলের ক্যামেরা কোয়ালিটি আলাদা আলাদা।
তাই, ফোন কেনার আগেই তার ক্যামেরা কোয়ালিটি অবশই চেক করবেন।
সাধারণত ফটো তোলার জন্য ৫mp এবং ভিডিও করার জন্য ৮mp হলেই চলে। বেশি হলে ভালো।
তবে, একটি বিষয় খেয়াল রাখবেন যেন বেশি টাকা নিয়ে কম মেগা পিক্সেলের ক্যামেরা না দিয়ে দেয়।
মোবাইলের ডিসপ্লে (display):
একটি ভালো মানের স্মার্টফোনের সাথে ভালো কোয়ালিটির ডিসপ্লে থাকা আবশ্যক।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ স্মার্টফোনে ৫-৬ ইঞ্চি ডিসপ্লে দেখতে পাওয়া যায়।
আপনি কত ইঞ্চির ডিসপ্লে সহ স্মার্টফোন কিনবেন এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার উপর।
আপনি যদি স্মার্টফোনে বেশি ভিডিও দেখাতে বা গেম খেলতে পছন্দ করেন আমি আপনাকে কমেও “৬ ইঞ্চির ডিসপ্লে” নেওয়ার জন্য সাজেস্ট করবো।
তবে, শুধু বড় ডিসপ্লে থাকলেই চলবে না।
HD videos এবং High games গুলির গ্রাফিক্স, অধিক আকর্ষণীয় ভাবে দেখতে ও অনুভব করতে হবে হলে আমাদের চাই এইচডি রেজ্যুলেশন।
তবে বর্তমানে বাজারে ফুল এইচডি রেজ্যুলেশনের (4k) ডিসপ্লে সহ ফোন পাওয়া যাচ্ছে।
সবকিছু বেশি স্পষ্ট বা উজ্জ্বল দেখতে চাইলে বেশি রেজুলেশনের ডিসপ্লে কেনা অবশ্যক।
প্রসেসর (processor):
কম্পিউটারের মত স্মার্টফোনেরও প্রাণ হচ্ছে প্রসেসর।
র্যামের মতোই, স্মার্টফোনের অধিক প্রসেসর কোর এবং প্রসেসর স্পিড, মোবাইলকে, দ্রুত এবং স্মুথ ভাবে কাজ করতে সাহায্য করবে।
প্রসেসর কোর এবং প্রসেসর স্পিড যদি কম হয় তাহলে কিছুদিন পর আপনার ফোন স্লো হয়ে যাবে এবং হ্যাং করবে।
বর্তমানে, কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৬৫, ৮৫৫, ৮৪৫, ৮৩৫, ৭৩০, ৭১২, ৬৬০, ৬৩৬; স্যামসাং এর এক্সিনস ৯৮২৫, ৯৮২০, ৯৮১০, ৮৮৯৫, ৮৮৯০, মিডিয়াটেক হেলিও পি৯০, পি৭০, এক্স৩০ ইত্যাদি খুব ভালো মানের প্রসেসর।
তাই, যদি ভালো এবং দ্রুত স্মার্টফোন কেনার কথা ভাবছেন, তাহলে উল্লেখিত প্রসেসরের যেকোনো একটি থাকাটা জরুরি।
বাজেট (Budget) :
এবার আসা যাক আসল কথায়। 😉
স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই বাজেটের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন দামের স্মার্টফোন পাওয়া যায়।
একটি ফোনের দাম সবসময় নির্ভর করে ফোনটিতে থাকা ফিচার এবং কনফিগারেশনের উপর।
আপনার বাজেটের মধ্যে থাকা যে স্মার্টফোনে সবচেয়ে বেশি ভালো ফিচার রয়েছে আপনি সবসময় সেই স্মার্টফোনটি কেনার চেষ্টা করবেন।
এটাই হবে আপনার জন্য আমার সাজেশন।
এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে দেখে নিতে পারেন আপনার বাজেটের মধ্যে সেরা স্মার্টফোন কোনটি।
বাজেট বেশি হলে অবশ্যই উন্নত ব্রান্ডের ফোন কিনবেন।
তো বন্ধুরা, এই ছিলো জরুরি বিষয়গুলো একটু সতর্কতা অনেক ভালো একটি স্মার্টফোন কিনতে সাহায্য করবে।
আমাদের শেষে কথা,
বন্ধুরা, এটা ছিল একটি গেস্ট পোস্ট (guest post), যেটা করা হয়েছে “MD kawsar” এর দ্বারা।
তাহলে, তিনি বলা হিসেবে যদি আপনারা স্মার্টফোন কেনার আগে উল্লেখিত বিষয় গুলি নিয়ে একটু ধ্যান দিয়ে থাকেন, তাহলে অবশই, আপনি নিজের বাজেটের মধ্যে একটি ভালো মোবাইল কিনে নিতে পারবেন।
প্রথম বারের জন্য যারা মোবাইল কেনার কথা ভাবছেন, তাদের জন্য এই স্মার্টফোন কেনার আগের টিপস গুলি অনেক কাজের বলে প্রমাণিত হবে।
তাছাড়া, এর বাইরেও যদি আপনার কিছু প্রশ্ন বা সমস্যা রয়েছে, তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জিগেশ করতে পারবেন।
0 responses on "স্মার্টফোন কেনার আগেই এই ৭ টি বিষয়ে যাচাই করবেন"