কিছুদিন আগে চালু হয়েছে দেশব্যাপী আন্তঃলেনদেন ব্যবস্থা বিনিময়। ইন্টারঅপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্লাটফর্ম বা আইডিটিপি ব্যবহার করে চলবে বিনিময় প্ল্যাটফর্মটি। আনুষ্ঠানিকভাবে নভেম্বর মাসের ১৩তারিখ ২০২২ বিনিময় সেবা প্রদান শুরু করে। ইতিমধ্যে বিনিময় ব্যবহারের খরচ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক যা সম্পর্কে এই পোস্টে বিস্তারিত জানবে।
বিনিময় ব্যবহারের খরচ
বিনিময় প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে যেকোনো এমাউন্টের প্রতি লেনদেন এর ক্ষেত্রে অর্থ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ০.৫০টাকা প্রদান করবে বিনিময়কে। অর্থাৎ অর্থ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি লেনদেনে ০.৫০টাকা ফি কাটবে বিনিময় সেবাটি। এই ফি হচ্ছে বেসিক ফি যা যেকোনো এমাউন্টের লেনদেনের জন্য প্রযোজ্য। এছাড়া আছে ইন্টারঅপারেবল ফি। বিনিময় ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আলাদা ফি সম্পর্কে পরের সেকশনে আলোচনা করা হয়েছে বিস্তারিতভাবে।
উল্লেখিত তথ্য অনুসারে প্রতি লেনদেনে পঞ্চাশ পয়সা অর্থ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান প্রদান করবে প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠানকে, অর্থাৎ বিনিময়কে। এই অর্থ কিন্তু গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করা হবেনা। এছাড়া সার্ভিস চার্জ বাবদ অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের কাছ থেকে সর্বোচ্চ কত চার্জ আদায় করতে পারবে সেই বিষয়েও নিয়ম ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখিত ফি এর চেয়ে অতিরিক্ত চার্জ গ্রাহকদের কাছ থেকে কাটতে পারবেনা প্রতিষ্ঠানগুলো।
২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ১৪ তারিখ থেকে এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে। অর্থাৎ হলো ইতিমধ্যে এই নিয়ম কার্যকর রয়েছে। নিচে বিনিময় ব্যবহারের খরচ বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হলো। ইন্টারঅপারেবল ফি অর্থ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করবে। এই অর্থ গ্রাহকের নিকট হতে আদায় করা যাবে না। তবে অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান তার গ্রাহক থেকে “সাভির্স চার্জ” বা “সার্ভিস ফি” আদায় করতে পারবে যা আমাদের পোস্টে বিস্তারিত বলা আছে।
ব্যাংক
ব্যাংক থেকে ব্যাংক লেনদেনের ক্ষেত্রে ইন্টারঅপারেবল ফি কাটা হবেনা ও অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ১০টাকা সার্ভিস ফি কাটতে পারবে গ্রাহকের কাছ থেকে। ব্যাংক থেকে পিএসপি তে লেনদেনের ক্ষেত্রে ০.৪৫% ইন্টারঅপারেবল ফি প্রযোজ্য হবে ও কোনো সার্ভিস ফি কাটতে পারবেনা অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। ব্যাংক থেকে বিকাশ, রকেট এর এমএফএস এ অর্থ আনার ক্ষেত্রে ০.৪৫% ইন্টারঅপারেবল ফি প্রযোজ্য হবে। এক্ষেত্রেও কোনো ধরনের আলাদা সার্ভিস ফি কাটতে পারবেনা অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান (ব্যাংক)।
পিএসপি
পিএসপি থেকে ব্যাংকে অর্থ আনলে কোনো ইন্টারঅপারেবল ফি কাটা হবেনা ও সর্বোচ্চ ১% সার্ভিস ফি কাটতে পারবে অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। পিএসপি থেকে পিএসপি তে অর্থ আনলে সেক্ষেত্রে ০.৭৫% ইন্টারঅপারেবল ফি প্রযোজ্য হবে ও সর্বোচ্চ ০.৫০% সার্ভিস ফি কাটা যাবে। পিএসপি থেকে এমএফএস এ অর্থ আনার ক্ষেত্রে ০.৭৫% ইন্টারঅপারেবল ফি প্রযোজ্য হবে ও সর্বোচ্চ ০.৫০% সার্ভিস চার্জ কাটা যাবে।
এমএফএস
এমএফএস অর্থাৎ বিকাশ/রকেট/উপায় এধরণের সেবা থেকে ব্যাংকে অর্থ আনলে সেক্ষেত্রে কোনো ইন্টারঅপারেবল ফি প্রযোজ্য হবেনা, তবে সর্বোচ্চ ১% সার্ভিস চার্জ কাটতে পারবে অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। এমএফএস থেকে পিএসপি তে অর্থ আনার ক্ষেত্রে ০.৭৫% ইন্টারঅপারেবল ফি প্রযোজ্য হবে ও ০.৫০% সর্বোচ্চ সার্ভিস চার্জ কাটতে পারবে অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। এমএফএস থেকে এমএফএস এ লেনদেনের ক্ষেত্রে ০.৭৫% ইন্টারঅপারেবল ফি কাটা হবে ও সর্বোচ্চ ০.৫০% সার্ভিস চার্জ গ্রাহকের কাছ থেকে নিতে পারবে অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান।
নিচের চার্টে আরও স্পেসিফিকভাবে দেখে নিতে পারেন।
এইতো গেলো বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃক ঠিক করে দেওয়া বিনিময় প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অর্থ লেনদেন এর খরচ। এখন দেখার বিষয় হলো সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো আন্তঃলেনদেনের ক্ষেত্রে কি ধরনের চার্জ গ্রহণ করে।
0 responses on "বিনিময় ব্যবহারের খরচ জানুন – বিকাশ থেকে রকেটে লেনদেনের খরচ"