মোবাইল ব্যাংকিং খাতে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত অ্যাপ হলো বিকাশ। তাদের দ্রুতগতিতে টাকা পাঠানোর সুবিধা, আধুনিক নিরাপত্তা, ব্যবহারে সহজলভ্যতা সহ বেশ কিছু কারণেই বিকাশ এদেশের সেরা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে। কিন্তু খ্যাতি বাড়ার সাথে সাথে বিকাশ একাউন্ট থেকে অন্যের দ্বারা টাকা বেহাত হওয়ার ঘটনাও শোনা যায়। এসকল পরিস্থিতি এড়াতে গ্রাহকেরা বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতেও দ্বিধাবোধ করে না।
এছাড়াও অনেক সময় দেখা যায় বিকাশের ফোন নাম্বার পরিবর্তন করতে হলেও পুরাতন একাউন্টটি বন্ধ করতে হয়। আবার বিকাশের সার্ভিস চার্জের কারণে অনেকে আছেন বিকাশ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে অন্য মোবাইল ব্যাংকিং এর অ্যাপ এর সাহায্য নিচ্ছে। সেক্ষেত্রে বিকাশ এর আগের একাউন্ট বন্ধ করে দিচ্ছেন। এসব কিছুর কথা মাথায় রেখে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার ব্যাপারে জেনে রাখা একান্ত জরুরী।
বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করে কীভাবে?
বিকাশ একাউন্ট মূলত দুইটি উপায়ে বন্ধ করা যায়। একটি হলো অস্থায়ী ভাবে অল্প কিছু সময়ের জন্য বন্ধ করতে পারেন এবং আর একটি উপায় হলো স্থায়ীভাবে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করা। অস্থায়ীভাবে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার ক্ষেত্রে ব্যবহারকারী ঘরে বসেই বিকাশ হেল্প সেন্টারে সকল তথ্য প্রদান করে কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। অন্যদিকে স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জন্য ব্যবহারকারীকে নিকটস্থ বিকাশ কাস্টমার কেয়ার এ প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট দেখিয়ে বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ করতে হবে।
বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার আগে যা করা প্রয়োজন
বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার জন্য সবার আগে বিকাশ একাউন্টের ব্যালেন্স একদম শূণ্য করে ফেলতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে আপনার বিকাশ একাউন্টে যা টাকা আছে সব টাকা নিকটস্থ বিকাশ এজেন্টের কাছে গিয়ে তুলে নিতে পারবেন। অথবা আপনার ফোনে রিচার্জ করে নিতে পারেন কিংবা আপনার পরিচিত কারো বিকাশ একাউন্টেও পাঠিয়ে রাখতে পারেন।
বিকাশ একাউন্ট প্রায় সময়ই টাকার অংক দশমিকে থাকে অর্থাৎ টাকার সাথে সাথে পয়সা ও বিদ্যমান থাকে। একাউন্ট বন্ধ করার জন্য ব্যালেন্স সম্পূর্ণ রূপে শূণ্য করতে হবে। এজন্য আপনার ব্যালেন্সে থাকা পয়সা সহ সম্পূর্ণ ব্যালেন্স একাউন্ট থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। সেক্ষেত্রে সেন্ড মানি অপশনটি খুব ই কার্যকর। এছাড়া বিকাশ একাউন্ট থেকে পূর্বে যদি কোনো ‘সেভিংস’ সেবা গ্রহণ করা হয় সেক্ষেত্রে সেটি প্রথমে বন্ধ করতে হবে এবং যদি কোনো ‘লোন’ সেবা গ্রহণ করা হয় সেক্ষেত্রে সেটিও পরিশোধ করে নিতে হবে।
বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে গেলে যে এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে আইডি খোলা হয়েছিলো সেই ব্যক্তিকেই বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে যেতে হবে। এনআইডি কার্ড নিয়ে যেতে হবে। তা না হলে বিকাশের নিরাপত্তাজনিত কারণে একাউন্ট বন্ধ নাও হতে পারে। সুতরাং ভোটার আইডি কার্ডের মালিক যদি একাউন্টের মালিক না হয় তাহলে দুইজনকেই যেতে হবে। যেই সিম ব্যবহার করে বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়েছে সেই সিমটিও কাস্টমার কেয়ারে সাথে করে নিয়ে যেতে হবে।
একাউন্টের ব্যালেন্স শূন্য করে সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সহ নিকটস্থ বিকাশ কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যেতে হবে। কাস্টময়ার কেয়ারে থাকা প্রতিনিধির কাছে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার বৈধ কারণ জানাতে হবে। সেক্ষেত্রে তাদের কাছে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সরবরাহ করে একাউন্ট বন্ধের অনুরোধ জানালে তারা আপনাকে কিছু নির্দেশনা অবলম্বন করে নির্দিষ্ট কিছু কাজ করতে বলবে। সেগুলো সঠিকভাবে পালন করতে পারলে তারা আপনার বিকাশ একাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিবে।
বিকাশ গ্রাহক সেবা কেন্দ্র সকাল ১০:০০ ঘটিকা থেকে ০৭:০০ ঘটিকা পর্যন্ত (সপ্তাহে ৭ দিন, সরকারি ছুটি ব্যতীত) খোলা থাকে।এছাড়া বিকাশ গ্রাহক সেবা প্রতিদিন সকাল ১০:০০ ঘটিকা থেকে ৬:০০ ঘটিকা পর্যন্ত (শুক্রবার এবং সরকারি ছুটি ব্যতীত) দেয়া হয়ে থাকে। আপনি চাইলে বিকাশ অ্যাপের ম্যাপ অপশন থেকে আপনার নিকটস্থ গ্রাহক সেবা কেন্দ্র এবং গ্রাহক সেবার ঠিকানা জেনে নিতে পারবেন।
এসকল উপায় অবলম্বন করে আপনি সহজেই আপনার বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ করতে পারেন। বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার ক্ষেত্রে আমাদের এই আর্টিকেল আপনাকে অনেকাংশে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়। বিকাশ সম্পর্কে আপনাদের অভিজ্ঞতা আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
0 responses on "বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার আগে করণীয়"