বর্তমান সময়ে ভারত ও বাংলাদেশে বেকারত্বের হার দিন দিন বেড়েই চলেছে এবং সরকারের পক্ষেও প্রত্যেকটা ব্যক্তিকে চাকরি দেওয়া অসম্ভব তবে আপনি যদি skill ful ব্যক্তি হন তাহলে ইনকাম করার অনেকগুলো মাধ্যম রয়েছে তার মধ্যে একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ফ্রিল্যান্সিং।
বিগত কয়েক বছর ধরে ফ্রি লান্সিং পেশা ভারত ও বাংলাদেশ তুমুল জনপ্রিয় হয়েছে, আর হবেই না কেন ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে বেশ ভালো অংকের টাকা ফ্রিল্যান্স করে ইনকাম করা সম্ভব এবং বর্তমানে অনেকেই ফিলেন্সিং পেশাকে তাদের বিজনেসে কনভার্ট করেছে।
তবে প্রশ্ন হলো এই ফ্রিল্যান্সিং জিনিসটা কি এটা অনেকেই জানেন না তাদের জন্য মূলত আজকের এই আর্টিকেলটি। তো আপনারা যদি এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়েন তাহলে ফ্রিলান্সিং কি (freelancing ki) । ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো । ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ। কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করব ইত্যাদি বিষয় গুলো বিস্তারিত জানতে পারবেন। চলুন তাহলে বেশি কথা না বলে freelancing কি এ বিষয়টি জেনে নিই।
ফ্রিল্যান্সিং কি | what is freelancing in bangla
ফ্রিল্যান্সিং এর অর্থ হল মুক্ত পেশা বা স্বাধীন পেশা। যে ব্যাক্তি ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে তার দক্ষতা কে কাজে লাগিয়ে কোন ব্যক্তি বা কোন এজেন্সির কাজ করে অর্থ উপার্জনই হলো ফ্রিল্যান্সিং। আর যে কাজ করে তাকে ফ্রিল্যান্সার বলে।
আপনার যদি কোন একটি বিষয়ে প্রচুর জ্ঞান থাকে, আপনি যদি সেই বিষয়টি ভালো পারেন তাহলে আপনার দক্ষতা এবং প্রতিভা কে কাজে লাগিয়ে ঘরে বসে অনলাইন থেকে আয় করাই হলো freelancing
ফ্রিল্যান্সিং ঠিক এক ধরনের চাকরির মত। চাকরির ক্ষেত্রে যেটা হয় আপনাকে সময় মতো অফিস যেতে হয়, তাদের কাজের নির্দিষ্ট একটি সময় সীমা থাকে এবং তাদের কাজ করে বাড়ি ফিরতে হয়, কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে আপনি নিজেই বস ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ধরা বাধা কোন সময় তারা দেয় না আপনি যখন ইচ্ছা তখন আপনার ক্লায়েন্টের কাজ করতে পারেন তবে আপনার ক্লাইন্ট আপনাকে কাজটি যতদিন টাইম দিবে তত দিনের মধ্যে আপনাকে কাজটি করে জমা দিতে হবে অর্থাৎ আপনার ক্লায়েন্ট এর কাজ আপনি সারাদিন রাতে যখন ইচ্ছা তখন করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং কাকে বলে | freelancing bangla
কোনো ব্যক্তি তাদের দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগে অনলাইনে ঘরে বসে টাকা উপার্জন করা কে ফ্রিলান্সিং বলে। অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং বলতে বোঝায় কোন একক ব্যক্তি বা কোন কোম্পানির চুক্তিভিত্তিক স্বাধীনভাবে কাজ করে দেওয়া ।
আপনি কোন ক্লায়েন্টের কাজ করার জন্য চুক্তি করবেন এবং আপনার কাজটি কমপ্লিট হয়ে গেলে আপনি আপনার ক্লাইন্ট কে কাজটি জমা দিয়ে দিবেন এবং তারা আপনাকে টাকা পে করবে এবং তারপর আপনি আবার অন্য ক্লায়েন্টের কাজ করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং মানে কি | Freelancing meaning in Bengali
ফ্রি লান্সিং এর মানে হল মুক্ত পেশা বা স্বাধীন পেশা। অর্থাৎ নিজের স্বাধীন মত ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করার মাধ্যম হলো Freelancing
ফ্রিল্যান্সিং কেন করব
দেখুন বর্তমান যুগের কিন্তু বেশিরভাগই বেকার। আর এই যুগের সরকারি চাকরি পাওয়া একটু কঠিন তো আপনি যদি এক দেড় বছর আপনার skill টাকে ভালোভাবে developed করতে পারেন তাহলে আপনি freelance করে ভাল কিছুই করতে পারবেন। অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে ফ্রিলান্সিং করার উদ্দেশ্যে হল টাকা ইনকাম করা।।
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন
ফ্রিল্যান্সিং করতে কি প্রয়োজন বা Freelancing করার জন্য কোন সার্টিফিকেট বা শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগে কিনা এসব প্রশ্ন আপনাদের অনেকের মাথায় ঘুরপাক খায় আসলে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য এসব কিছু প্রয়োজন হয় না ফ্রিল্যান্স করার জন্য সবথেকে বেশি যেটা প্রয়োজন হয় সেটা হচ্ছে আপনার ধৈর্য আর ইচ্ছা শক্তি।
আপনার ধৈর্য আর ইচ্ছা শক্তি যদি না থাকে তাহলে freelancing করতে পারবেন না। যে বিষয়টি আপনার ভালো লাগে (যেমন ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটিং, seo এক্সপার্ট ইত্যাদী) সে বিষয়টি আগে ভালো করে জানতে হবে সেটি ভালো করে শিখতে হবে তারপর আপনাকে ফিলেন্সিং পেশায় নামতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো
আপনাদের সব থেকে বড় প্রশ্ন হল ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখব। তো ফ্রি লান্সিংশেখার জন্য আপনাকে ধৈর্য ধরে কন্টিনিউ কাজ শিখতে হবে, তো কোন কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং করবেন এটি নির্ভর করছে আপনার উপর, কারণ ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন সেক্টর রয়েছে যেমন ওয়েব ডিজাইন ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট, এসইও, কন্টেন্ট রাইটিং, ট্রানসলেশন, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি এই এইগুলির মধ্যে আপনার কোন কাজটি ভালো লাগে সেটি আগে সিলেট করবেন যেমন আপনার যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্টে আগ্রহ থাকে বা ভালো লাগে তাহলে সেটি আগে ভালো করে আপনাকে শিখতে হবে শেখার জন্য অনেক প্লাটফর্ম রয়েছে যেমন youtube, google ইত্যাদি এছাড়া পেইড কোর্সে তো আছে। তবে আমি আপনাদেরকে বলবো ফ্রিল্যান্সিং শিখুন অনলাইনে সম্পূর্ণ ফ্রী তে। আপনি যদি হাতে ধরে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চান তাহলে পেইড কোর্স করতে পারেন।
তো যে কাজটি শিখতে চান সেই কাজটি ভালো করে শিখে ১০০% জ্ঞান অর্জন করে তারপর আপনাকে ফিলেন্সিং পেশায় নামতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং এ কি কি কাজ করা যায়
আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে ফ্রি লান্সিংএর অনেক সেক্টর রয়েছে আপনার পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো একটি কাজ শিখে ফ্রীল্যান্সিং করতে পারবেন। তো নিচে জনপ্রিয় কিছু ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ নাম দেওয়া হল।
• web design and development
• digital marketing
• graphic design
• seo expert
• content writing
• virtual assistant
• video editing
• animation
• data entry
• voice over artist ইত্যাদি।
ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি
উপরে যেগুলো আলোচনা করলাম বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এ প্রায় প্রত্যেকটি কাজের চাহিদা রয়েছে তবে ভারত এবং বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা সবথেকে বেশি যে কাজগুলো করে সেগুলো হচ্ছে digital marketing, programming (Android, web development) এবং গ্রাফিক ডিজাইন
এই কাজগুলো চাহিদা একটু হলেও বেশি আছে তবে এই কাজগুলো করার জন্য কম্পিটিশন ও কিন্তু অনেক বেশি সুতরাং আপনি যদি আপনার কাজের প্রতি দক্ষ না হোন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় বেশি দিন টিকে থাকতে পারবেন না।
ফ্রিল্যান্সিং শিখে কাজ কোথায় করবেন ?
ফ্রিল্যান্সিং শিখে কাজ করার জন্য অনেক অনলাইন মার্কেটপ্লেস রয়েছে যেগুলো কে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস বলে। তো এই মার্কেটপ্লেস মার্কেট প্লেসে আপনারা এখন করে কাজের জন্য বিড করতে পারবেন।
তো আপনি ফ্রি লান্সিং করে যত টাকা ইনকাম করবেন তার 20% ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস কেটে নেয়। যেমন ধরুন ফ্রিল্যান্সিংয়ের মার্কেটপ্লেস থেকে ১০০ ডলারের একটি অর্ডার কমপ্লিট করেছেন করেছেন তো সেই মার্কেট প্লেস 20 ডলার কেটে নিয়ে আপনাকে 80% দিবে। তো কোন কোন মার্কেটপ্লেসে ফ্রিলান্সিং করা যায় অর্থাৎ কিছু জনপ্রিয় ফ্রীল্যান্সিং মার্কেট প্লেসের নাম নিচে দেওয়া হলো।
• Up work
• Fiverr
• freelancer.com
• guru.com
• PeoplePerHour ইত্যাদি।
ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কতদিন লাগে
ফ্রীল্যান্সিং শিখতে কতদিন সময় লাগে এটা নির্ভর আপনার উপর। আপনি আপনার কাজ শেখার পেছনে যত সময় দিবেন ততো তাড়াতাড়ি শিখতে পারবেন। তবে ফ্রিল্যান্সিং এর কিছু সেক্টর রয়েছে সেগুলো ৬ থেকে ৮ মাসে শেখা যায় যেমন ডিজিটাল মার্কেটিং, এসইও ইত্যাদী আবার কিছু সেক্টর রয়েছে যেগুলো ভালো করে শিখতে দু বছরে বেশি সময় লেগে যেতে পারে যেমন এন্ড্রয়েড, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট।
তবে আপনি যদি প্রতিদিন 6 ঘন্টা করে সময় দেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের যেকোনো একটি সেক্টরের কাজ প্রায় দেড় বছরের মধ্যে বেশ ভালোভাবে শিখে নিতে পারবেন। তারপর আপনি যত কাজ করবেন তত আপনার অভিজ্ঞতা বাড়বে। আর খুব তাড়াতাড়ি অর্থাৎ কম সময়ে ফ্রীল্যান্সিং শিখে ইনকাম করতে চাইলে ডিজিটাল মার্কেটিং টা বেছে নিতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত টাকা লাগে
ফ্রীল্যান্সিং শেখার জন্য আপনার শুধুমাত্র একটি ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ এর প্রয়োজন। শুধুমাএ ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ কেনার খরচাটা আপনার লাগে।
আর ফ্রীল্যান্সিং শিখতে সেরকম কোন টাকা লাগেনা ফ্রিল্যান্সিং এর সমস্ত রিসোর্স আপনি ইউটিউব এবং গুগল এ পেয়ে যাবেন। আপনি ফ্লানকিং এর যে সেক্টরটি নিয়ে কাজ করতে চান সেটি ইউটিউবে লিখে সার্চ করেন দেখবেন হাজার হাজার ভিডিও পেয়ে যাবেন জাস্ট আপনি যেকোনো একটি ইউটিউব চ্যানেলের প্লে লিস্ট ফলো করে আপনি ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন।
আর যারা একটু সময় কম দিতে চান, যারা হাতে ধরে শিখতে চান কোন একটি প্রবলেমে পড়লে খোঁজাখুঁজি করতে যারা চান না তাদের একটাই বিকল্প সেটা হচ্ছে পেইড কোর্স। পেইড কোর্স আপনারা ট্রেনিং সেন্টার ও করতে পারেন অথবা আপনারা অনলাইনে করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে টাকা খরচ করতে হবে যারা যেরকম ফি নেয় সেরকম টাকা আপনাদেরকে দিতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে কত টাকা আয় করা যায়
ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে কত টাকা আয় করা সম্ভব এ প্রশ্নটা প্রত্যেকের মাথায় সবার আগে আসে। এটার উত্তর নির্ভর করবে আপনার নিজের কাজের উপর, কোন মাসে আপনি কি রকম কাজ পেলেন সেই অনুযায়ী আপনার ইনকাম নির্ভর করবে।
যে মাসে আপনি যত বেশি কাজ করবেন সে মাসে আপনার তত ইনকাম বেশি হবে। যে মাসে আপনি কম কাজ করবেন আপনার ইনকাম কমে যাবে
এইখানে একটি কথা বলে রাখা ভালো অনেকেই চাই আমি বেশি বেশি কাজ করি কিন্তু সবাই বেশি বেশি কাজ অর্ডার পায় না এটা নির্ভর করবে আপনার দক্ষতার উপর আপনি যত বেশি skillful ব্যক্তি হবেন তত বেশি ইনকাম করতে পারবেন।
অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছে যারা প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করে। আবার অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছে যারা মাসে 100 ডলার ও ইনকাম করে। অর্থাৎ মধ্যকথা হলো আপনি যত বেশি দক্ষ হবেন যত বেশি কাজ জানবেন তত বেশি ইনকাম করতে পারবেন। তবে হ্যাঁ ফ্রীল্যান্সিং করে লাখ টাকার উপর আর্নিং করা সম্ভব।
ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি ?
যারা নতুন ফ্রিল্যান্সিং শিখতে যাচ্ছে তাদের মনে এ প্রশ্নটি ঘুরপাক খায় যে ফ্রীল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কেমন । ফ্রিল্যান্সিং এর নিশ্চয়তা আছে কিনা ইত্যাদি বিষয়। সহজ ভাষায় বলতে গেলে ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ বেস উজ্জ্বল।
গোটা পৃথিবী কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল। আমরা যতদিন তথ্যপ্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল থাকবো ততদিন ফ্রিল্যান্সিং কাজের ভবিষ্যৎ ভালো হবে।
দিন দিন গোটা পৃথিবী ডিজিটালাইজ হচ্ছে। এর ফলে ফ্রীল্যান্সিং কাজের চাহিদা কিন্তু বেড়ে চলেছে। সুতরাং অনলাইন এর যুগে ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ বেস উজ্জ্বল।
আশা করি, আজকের এই আর্টিকেল থেকে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে সমস্ত খুঁটিনাতে বিষয় জানতে পারলেন যেমন frelanching কি । ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার । কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলব । ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি ইত্যাদী বিষয়।
ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় এই নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লাগলো অবশ্যই নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে আপনাদের মতামত জানাতে পারেন ধন্যবাদ।