দাজ্জাল বর্তমান সময়ে একটি দ্বীপের মধ্যে বন্দি হয়ে আছে, এটা তো আমরা প্রায় সকলেই জানি তবে ঠিক কোন স্হানের দ্বীপে বন্দি আছে তা সম্পর্কে পোস্টটি পড়লে জানতে পারবেন।
কিছু মানুষ দাজ্জালের সাথে সাক্ষাত করেছিলো তারা এই দ্বীপ প্রযন্ত কিভাবে পৌঁছতে পেরেছিলেন, আজও কি মানুষ দাজ্জালের সাথে সম্পর্ক করে চলেছে, বর্তমান সময়ে আমরা কি সেই দাজ্জালের ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছি? সেই রহস্যময় দ্বীপটি কোথায় আছে? আর বর্তমান সময়ে গুগল ম্যাপেও কেন এই দ্বীপ দেখতে পাওয়া যায়না। আমরা আজকের এ পোস্টে সমস্ত প্রশ্নের উত্তরকে খুব সুন্দর করে আপনাদের সামনে তুলে ধরবো ইনশাআল্লাহ।
দাজ্জাল একটি এমন ফিতনা যার সম্পর্কে হযরত আদম আঃ থেকে শুরু করে হযরত মোহাম্মাদ সাঃ প্রযন্ত যতজন নবী রাসুল এসেছেন তারা সকলে নিজ নিজ উম্মতদেরকে সতর্ক করেছিলেন। আর এটিকে কেয়ামত প্রযন্ত সবচেয়ে বড় ভয়ানক ফিতনা বলা হয়েছে। দাজ্জালের কাছে শয়তানি শক্তিতে পরিপূর্ণ হয়ে থাকবে, দুনিয়াবি শক্তি তার কাছে সম্পুর্ণভাবে থাকবে। মানে সে নিজের হাতে করে এ পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করবে।
আর যার মাধ্যমে এ পৃথিবীতে একপ্রকার বিধ্বংস চালানো হবে, দাজ্জাল বর্তমান সময়ে কোথায় আছে আর কেমন অবস্থায় আছে এর সম্পর্কে একটি আশ্চর্য অদ্ভুত হাদিস রয়েছে আর সেটি হযরত আয়েশা রাাঃ এর কাছ থেকে এসেছেঃ তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম নামাজের শেষে মেম্বারের উপরে তাসরিফ নিয়ে আসলেন।
আর এরসাদ করলেন তামিমদারি প্রথমে নাসরান ঈমামে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ ছিলো কিন্তু সে এরপর মুসলিম হয়ে গিয়েছে আর আমাকে একটি ঘটনার বর্ননা করেছেঃ যেখান থেকে তোমাদের আমার সেই বর্ননার সত্যতা যাচাই হয়ে যাবে যে আমি কোনো একদিন দাজ্জাল সম্পর্কে বর্ননা করেছিলাম, তামিমদারি জানিয়েছে সে বড় একটি নৌকাতে আরোহন করেছিলো আর যার উপরে চড়ে বড় বড় সমুদ্র সফর করা যায়, সেই সময়ে কাবিলা আখোমে এবং যাযামের ত্রিশ জন ব্যাক্তি ছিলো কিন্তু এইসময়ে একমাস যাবত সমুদ্রতে তুফানের জন্য তামিমদারি এবং তার সাথীরা ভয়ানক ভাবে আটকে যায়।
আর এমনিভাবে ৩০ দিন প্রযন্ত কিভাবে কেটে যায় তা তারা ভাবতেই পারেনি, এরপরে তারা পুর্বদিকে একটি দ্বীপ দেখতে পেলো; আর সেটি দেখে তারা সকলেই ভীষনই খুশী হলো। এরপর তারা সকলে দ্বীপে যাওয়ার জন্য রওনা হলো এবং যখন তারা দ্বীপে প্রবেশ করতে শুরু করলো তখন তারা জন্তুদের রুপ ধারন করা একটি প্রানী দেখতে পেলো যার সম্পুর্ন গায়ে বড় বড় লোমে আবৃত।
তারা জিঙ্গেস করলো কে তুই? সে বললো আমি দাজ্জালের গোয়েন্দা, তোমরা ওই গির্জাতে চলো সেখানে এক ব্যাক্তি তোমাদের জন্য অনেক দিন ধরে অপেক্ষা করছে এবং অধীর আগ্রহে বসে আছে। আমরা তার কথামতো সেই গির্জাতে গেলাম কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখতে পেলাম একটি ভয়ানক দানব রুপী ব্যাক্তিকে এর আগে তার মতো এমন দৈত্য আকৃতির মানুষকে আমরা আর কখনো দেখিনাই।
তার হাত গর্ধানের সঙ্গে এবং তার পা হাটু থেকে নিয়ে পায়ের পাতা প্রযন্ত লোহার শিকল দিয়ে খুবই মজবুত করে বাঁধা ছিলো। আমি তাকে বললাম তোর সর্বনাশ হোক, সে বললো এতক্ষনে তো তোমরা আমার সম্পর্কে জেনে গিয়েছো এবার তোমরা বলো তোমাদের পরিচয় কি?
তারা বললো আমরা আরবের বাসিন্দা আর আমরা বড় একটি নৌকাতে সফর করছিলাম সমুদ্রের মধ্যে তুফানের কারনে সেখানে দীর্ঘ এক মাস প্রযন্ত আটক ছিলাম এরপর আমরা এই কাছে পৌঁছে আসলাম।
তখন দাজ্জাল বললো আমাকে এটি বলো বাইসানের খেজুর গাছে এখনো কি ফল ধরে?
তখন তারা জবাবে বললো হ্যা গাছগুলো খুব ভালো ফলন দেয়, দাজ্জাল বললো খুব শিগ্রই ওই গাছগুলিতে ফল দিবেনা।
দাজ্জাল বললো আমাকে তিব্রিয়া সাগর সম্পর্কে বলো সেখানে পানি আছে কিনা?
তারা বললো সেই সাগরে অনেক পানি আছে। তিনি বললেন সেই যামানা খুব নিকটে এসে গেছে যে ওই সমুদ্রে আর পানি থাকবেনা।
দাজ্জাল আবার বললো যুগারের জর্নার সম্পর্কে বলো সেখানে পানি আছে কিনা?
আমরা বললাম যুগারের জরনায় প্রচুর পানি আছে এবং সেখানের কৃষকেরা সেই পানি দিয়ে আনন্দের সাথে হালচাষ করছে।
অবশেষে দাজ্জাল বললো তোমরা সবাই শুনো আমি হলাম দাজ্জাল সেই সময় খুবই নিকটে এসেছে গেছে যখন আমাকে এখান থেকে বাহিরে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। বাইরে বেরিয়ে পৃথিবী ভ্রমন করবো, ৪০ দিনের মধ্যে এমন কোনো বস্তি থাকবেনা যেখানে আমি প্রবেশ করতে পারবোনা শুধুমাত্র মক্কা ও মদিনা ছাড়া কেননা সেই দুই স্হানে আমার প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে।
যদি আমি প্রবেশ করতে চাই তাহলে ফেরেশতারা উলঙ্গ তলোয়ার নিয়ে তাড়া করবে। এরপর হুযুর সাঃ বললেন এটিই তায়্যিবা এটিই তায়্যিবা, আর আমি এটিই তোমাদের বলার চেষ্টা করতাম। জেনে রাখো দাজ্জাল নাতো সাম দেশের সমুদ্রেতে আছে, নাতো ইয়েমানের সমুদ্রতে আছে বরং সেতো মাসরিকে আছে; মাসরিক মানে পূর্বদিকে হাত ইশারা করে ইরসাদ করলেন।
হযরত তামিমদারি রাহঃ আনহু এবং তার সাথীরা যেই দ্বীপে দাজ্জালের সাথে সাক্ষাত করেছিলেন তার জ্ঞান আজ প্রযন্ত কারোরই হয়নি।
তবে এর সমন্ধে অনেকেই দাবী করে থাকে যে সেই রহস্যময় দ্বীপ কোথায় আছে যেখানে দাজ্জালকে লোহার শিকল দ্বারা বন্দি করে রাখা হয়েছে, কিছু মানুষ মনে করে থাকেন আরব সাগরের কাছাকাছি অবস্থিত শুকতারা নামক সেই দ্বীপ ই হলো সেই দ্বীপ যেখানে দাজ্জাল বন্দি হয়ে আছে। আর এটি এমন একটি দ্বীপ যেটি সত্যিই অনেক রহস্যময়, এই শুকতারা দ্বীপটি ইয়ামান দেশের অংশ আর স্হলভাগ থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
এই দ্বীপে বসবাসকারী পশুপাখি এবং অনেক গাছ এমন আছে যেগুলো পৃথিবীর অন্যান্য গাছের থেকে একেবারে আলাদা, ড্রাগন ব্লাক ট্রি নামক আশ্চর্য এ গাছ এই উপ দ্বীপেই জন্ম নেয়। আর এটিকে কাটার পরে লাল রংয়ের রস বের হয়, দেখে একজন সাধারণ মানুষের কাছে মনে হবে গাছ থেকে রক্ত বের হচ্ছে।
এছাড়াও এই দ্বীপে আশ্চর্য করে দেওয়ার মতো ৭০০ প্রকারের গাছ এবং মাখলুকাত রয়েছে। এই দ্বীপের উপরে একটি পাহাড় অবস্থিত আছে, আর যেখানে একটি বিখ্যাত গুহা আল হোকের অবস্থান আর এটির দূরত্ব ৩ কিলোমিটারের মতো প্রায়। এতো বড় গুহা পূর্বতে আর কোথাও নেই। যেমনটি হাদিসে এসেছে দাজ্জালের প্রকাশ মাসরিক থেকে হবে আর এমন জায়গা থেকে হবে যেখান থেকে পূর্বদিকের জনসমাজকে প্রভাবিত করতে পারে; তো সেইজন্য এইসমস্ত নিশানার জন্য এই দ্বীপকে বিজ্ঞরা দাজ্জালের দ্বীপ বলে থাকে।
সেখানে আবার কিছু মানুষ আটলান্টিক মহাসগরে অবস্থিত থাকা বারমুডা ট্রাইয়েঙ্গেলকে দাজ্জালের বাসস্হান বলে থাকে, এটি সেই এলাকা যেখানে কম্পাস প্রযন্ত কাজ করা বন্ধ করে দেয়। সেখানে যাওয়া জাহাজ এবং নৌকাগুলো আর কখনোই ফিরে আসেনা। এখানে প্রচুর বড় বড় দূর্ঘটনা আগেও ঘটে গিয়েছে এছাড়া ও বারমুডা ট্রাইয়েঙ্গেলে প্যারানরমাল মানে ভূত এবং জ্বীনদের সাথে সম্পর্কিত থাকা অনেকগুলো ঘটনাও সময়ে সময়ে সামনে এসে থাকে।
এই এলাকাতে বেশিরভাগ সময়ে সামুদ্রিক তুফান এসে থাকে আর অনেক উচুঁ উচুঁ ঢেউ চলতেই থাকে। আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি বারমুডা সাধারণভাবে কোনো একটি দ্বীপের নাম নয় বরং এটি একটি বড় এলাকা যার মধ্যে ৩০০ এর থেকেও বেশী বসবাসহীন নিস্তব্ধ দ্বীপ অবস্থিত আছে। যেখানে মানুষ আজ ও পা রাখেনি এর সঙ্গে সঙ্গে বারমুডা ট্রাইয়েঙ্গেলের উপরে করে থাকা রিসার্চগুলি সেগুলি কেও পৃথিবীবাসীর সামনে প্রকাশ করা হয়নি।
এমনটি মনে হয় যে পৃথিবীর মানুষদের তার উপর শাষন করার কোনো অনুমতিই নেই। বিখ্যাত মিশরীয় পর্যবেক্ষক মোহাম্মাদ দাউদ এশার মতে বারমুডা ট্রাইয়েঙ্গেলের একটি বড় অংশ দাজ্জালের দ্বারাই প্রভাবিত হয়ে আছে। সেখানে সে খুব ভালো করেই নিজের একটি মহল বানিয়ে রেখেছে, আর এটি ত্রিকোনা রূপ ধারন করে আছে।
এছাড়াও দাজ্জালের সাথে সম্পর্কিত আরেকটি বিশেষ দাবি উসমানীয়া নাবিক এবং জিওগ্রাফি রিসার্চার প্রিরাইসের কাছে ও আছে যিনি খিলাফতে উসমানিয়া সময়ে একটি নকশা তৈরী করে ছিলেন, এই নকশাকে যদি ভালো করে দেখেন তাহলে রহস্যময় একটি নিশানাকে ইশারা করা আছে। যেখানে তিনি একটি আশ্চর্য মাখলুকের ছবি ও দেখিয়েছেন যেটি অর্ধেক মানুষ ও অর্ধেক জানোয়ারের মতো দেখা যায়; আর এটিকে মানুষজন দাজ্জাল বলেছেন।
দাজ্জাল কোন দুটি শহরে প্রবেশ করতে পারবে না?
দাজ্জাল শুধুমাত্র ২ টি শহর ব্যাতিত সকল জায়গা ভ্রমন করবেন। সে শহর দুইটি হলো মক্কা এবং মদিনা। দাজ্জাল। মক্কা ও মদিনা এই এই দুই শহরে প্রবেশ করলে চাইলে তাকে আল্লাহর ফেরেশতারা উলঙ্গ তরবারি নিয়ে ধাওয়া করবেন, দাজ্জালের জন্য মক্কা ও মদিনাতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার দোয়া
বাংলায় উচ্চারণঃ “আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল কাবরি, ওয়া মিন আজাবিন্নারি,
ওয়া মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাতি,
ওয়া মিন ফিতনাতিল মাসিহিদ্দাজ্জাল”।
দাজ্জালের মরন গেইট কোথায়?
ইজরাইলের একটি বিশাল আকৃতির সাদা স্বেদ পাথরের তৈরী এক ফটকের নিচে হযরত ঈসা আঃ দাজ্জালকে হত্যা করবেন। এবং এই গেইটটি ইতিমধ্যে ইহুদিরা নির্মান করে ফেলেছে, ইজরাইলের রাজধানী তেলাবিব থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে সেই গেইটটি নির্মাণ করা হয়েছে।
দাজ্জাল সম্পর্কে হাদিস
হাদিস নং (১)
আবু হুরায়রা রাঃ আনহু থেকে আরো বর্নিত বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম বলেন, জমিন তার ভূগর্ভস্হ স্বর্ণের টুকরা নিক্ষেপ করে দিবে। সময় খুব দ্রুতগতিতে শেষ হয়ে যাবে। সময়ের বরকত বলতে কিছুই থাকবেনা, সেইসময় আপতিত বিপদ মছিবত এবং ভয়ংকর পরিস্থিতিতির কারনে তাদের সময় কিভাবে কাটবে তা তারা টের পাবেনা।
হাদিস নং (২)
আনাস ইবনে মালিক রাঃ আনহু থেকে বর্নিত এক হাদিসে এসেছে ওই সময় প্রযন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবেনা, যতদিন না যামানা নিকটবর্তী না হবে। অর্থাৎ এত দ্রুতগতিতে সময় অতিক্রম করবে একটা বছর মাসের সমান, আর একটা মাস সপ্তাহের সমান ; সপ্তাহ ১টা দিনের সমান, ১টা দিন একটা ঘন্টার সমান এবং একটা ঘন্টা আগুনের আঙ্গার জ্বলে ওঠার সমান না হবে।
0 responses on "দাজ্জাল বর্তমানে এখন কোথায় আছে? + দাজ্জালের কাহিনী (A to Z)"