বাংলাদেশ ব্যাংক দেশে ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের জন্য নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী এই ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ব্যতীত কোন ব্র্যাঞ্চ, এটিএম বুথ বা কোনো স্থাপনা থাকবেনা। নতুন ব্যাংকিং ব্যবস্থা ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য প্রয়োজনীয় নূন্যতম মূলধন ১২৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মোবাইল ফোন, অ্যাপ, বা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে গ্রাহকদের ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরস ডিজিটাল ব্যাংক গঠনের নীতিমালা অনুমোদন করেছেন। চলুন ডিজিটাল ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
ডিজিটাল ব্যাংক কী?
কোন কাগজপত্র ছাড়াই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে যে ব্যাংকিং করা হয় তাকে বলা হয় ডিজিটাল ব্যাংকিং। ডিজিটাল ব্যাংকিং মানে হলো অনলাইনে ব্যাংকিং সেবা পাওয়ার সহজলভ্যতা। ডিজিটাল ব্যাংকিং একটি ব্যাংকের গ্রাহকদের ইলেকট্রনিক অথবা অনলাইন প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে ব্যাংকিং পণ্য এবং পরিষেবাগুলি অ্যাক্সেস করতে সক্ষমতা প্রদান করে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী ডিজিটাল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থাকবে। তবে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি হবে স্থাপনা বিহীন। অর্থাৎ এই ব্যাংকের কোন ব্র্যাঞ্চ বা এটিএম বুথ থাকবে না। এদের সব সেবা হবে অ্যাপ ভিত্তিক, মোবাইল ফোন বা অন্যান্য ডিজিটাল যন্ত্র দ্বারা। এর ফলে গ্রাহকেরা সব সময় সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
গ্রাহকদের লেনদেনের সুবিধার্থে ডিজিটাল ব্যাংক ভার্চুয়াল কার্ড, QR বা অন্য কোনো উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে সেবা দিতে পারবে। তবে সরাসরি প্লাস্টিক কার্ড দিতে পারবে না।
ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের শর্ত
প্রচলিত ব্যাংকিং ধারায় বর্তমানে বাংলাদেশে কোন একটি ব্যাংক খুলতে গেলে ৫০০ কোটি টাকা মূলধন এর প্রয়োজন হয়। কিন্তু একেকটি ডিজিটাল ব্যাংক খোলার জন্য নূন্যতম ১২৫ কোটি টাকা মূলধন প্রয়োজন হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক লাইসেন্স দেবার ৫ বছরের মধ্যে এই ব্যাংককে দেশের বাজারে প্রাথমিক শেয়ার বাজারে আইপিও ছাড়তে হবে।
ডিজিটাল ব্যাংক যেভাবে পরিচালিত হবে
ডিজিটাল ব্যাংককে বাংলাদেশে একটি নিবন্ধিত প্রধান কার্যালয় মেইনটেন করতে হবে। এই কার্যালয়টিই তাদের সাথে যোগাযোগের মূল কেন্দ্রস্থল হবে। এটি ডিজিটাল ও ফিজিক্যাল সকল ভাবেই গ্রাহকদের অভিযোগ ও সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করবে।
ডিজিটাল ব্যাংকের স্পন্সরদের যা লাগবে
আর্থিক প্রতিষ্ঠান গত পাঁচ বছরের মধ্যে ঋণখেলাপি হয়েছেন বা ছিলেন এমন কোনো ব্যক্তি কিংবা তার পরিবারের কোনো সদস্য কোনো ডিজিটাল ব্যাংকের স্পন্সর হওয়ার আবেদন করতে পারবেন না বা করার যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন না। ঋণখেলাপি সংক্রান্ত আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকলে সেসব ব্যক্তিও এর জন্য অনুপোযুক্ত হতে পারেন।
বর্তমান বিশ্বের ডিজিটাল ব্যাংক নানারকম সুবিধা প্রদান করছে। আশা করা যায় বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ডিজিটাল ব্যাংকিং অনেক ভাল অভিজ্ঞতা প্রদান করবে। ডিজিটাল ব্যাংক সম্পর্কে আপনাদের কোনো মতামত থাকলে তা আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে পারবেন।
0 responses on "ডিজিটাল ব্যাংক কী? এর সুবিধা কী? বিস্তারিত জানুন এখানে"