যখন আপনি ছবি এডিট করার নিয়ম কি, এই প্রশ্নটি করছেন তখন এর উত্তর বিভিন্ন ব্যক্তির জন্যে আলাদা আলাদা হতে পারে।
কারণ, কেও হয়তো মোবাইল বা কম্পিউটারে ছবি কিভাবে এডিট করতে হয় সেই বিষয়টা জানতে চাইছেন,
আবার অনেকেই হয়তো ছবি এডিট করার জন্যে কি করতে হয়, কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হয় সেটা জানতে চাইছেন।
এক্ষেত্রে অনেকে আবার ফটো এডিটিং বেসিক (Photo Editing Basics) গুলো জানতে চাইছেন।
তবে চিন্তা করবেননা, এই আর্টিকেলের দ্বারা আমি ছবি এডিট করার নিয়ম, প্রক্রিয়া এবং কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে সেই সবটাই বলবো।
চলুন, প্রথমে আমরা জেনেনেই, কম্পিউটারে এবং মোবাইল ছবি এডিটিং এর জন্যে কোন কোন সফটওয়্যার গুলো ফ্রীতে ব্যবহার করা যাবে।
তারপর, আমরা ছবি এডিট করার কিছু বেসিক তবে কার্যকর উপায় গুলোর বিষয়ে জানবো।
কিভাবে করবেন সহজেই ছবি এডিট ?
যদি আপনি নিজের থেকে ছবি এডিট করতে চাইছেন, তাহলে আপনি দুধরণে ছবি এডিটিং করতে পারেন।
নিজের কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ছবি এডিট করার সফটওয়্যার ব্যবহার করে।
বা, নিজের মোবাইলে ফটো এডিটং করার সেরা এডিটর এপস গুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে।
এখন, এমনিতে কম্পিউটার বা মোবাইল দুটোই কিন্তু আকর্ষণীয় ভাবে ফটো এডিট করার জন্যে সেরা।
দুটোতেই যেগুলো software বা apps ব্যবহার করবেন, সবগুলোতেই জরুরি settings, features এবং effects গুলো পাবেন।
তবে, যদি আপনি নিয়মিত নিজের social media profile গুলোর জন্যে photo editing করতে হয়, তাহলে মোবাইলেই এডিট করাটা সুবিধাজনক।
যাই হোক, নিচে আমি ছবি এডিট করার জন্যে সেরা কম্পিউটার সফটওয়্যার এবং সেরা ফ্রি মোবাইল অ্যাপস, সবটার বিষয়েই বলে দিবো।
আপনি আপনার প্রয়োজন এবং সুবিধা হিসেবে যেকোনো একটি সফটওয়্যার বা অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন।
কম্পিউটারে ছবি করার জন্যে কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করবেন ?
মোবাইল হোক বা কম্পিউটার, ফটো এডিটিং সফটওয়্যার গুলোর এর চাহিদা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে।
আর তাই, প্রত্যেক বছর কম্পিউটারে ছবি এডিট করার জন্যে কিছু না কিছু নতুন সফটওয়্যার লঞ্চ হয়েই থাকে।
আর আপনারা জেনে অবশই খুশি হবেন যে বর্তমান সময়ে free Picture Editing Software-গুলোর সংখ্যা প্রচুর।
এমনিতে আমি আগেই, কম্পিউটারে ছবি এডিট করার কিছু সেরা সফটওয়্যার গুলোর বিষয়ে বলেছি।
তবে, নিচে আবার আপনাদের জন্যে বলে দিচ্ছি।
এই সফটওয়্যার গুলো আপনারা ডাউনলোড করে একেবারে ফ্রীতে ব্যবহার করতে পারবেন।
তবে, কিছু কিছু সফটওয়্যার এর মধ্যে আপনারা টাকা দিয়ে premium subscription নেওয়ার অপসন অবশই পাবেন।
List Of The Best Free Photo Editing Software
১. Canva
২. PixTeller
৩. GIMP
৪. Fotor
৪. Adobe Photoshop Express Editor
৫. Darktable
৬. Inpixio
৭. PhotoScape
৮. Pixlr
৯. BeFunky
ওপরে বলে দেওয়া সফটওয়্যার এর নাম গুলো গুগলে লিখে সার্চ দিলেই আপনারা এদের official website পেয়ে যাবেন।
এবং এরপর, official website থেকে software গুলো সরাসরি download করে নিবেন।
বেশিরভাগ সফটওয়্যার গুলোতেই আপনারা পাবেন,
Graphic Image Templates,
Gradient Colors,
Graphic design elements,
photo effects,
Add Text to any photo,
Stickers,
Transparent backgrounds
মোবাইলে ছবি এডিট করার সেরা কিছু অ্যাপস
ওপরে আপনার কম্পিউটারে ফটো এডিট করার সফটওয়্যার গুলোর বিষয়ে জানলাম।
একটি mobile photo editing app-এর ব্যবহার করে আপনি নিজের ছবি গুলোকে প্রচুর প্রফেশনাল এবং এট্রাক্টিভ করে নিতে পারবেন।
আপনার Instagram feed হোক নাইবা WhatsApp status সবখানেই আপনাকে দারুন দেখাবে।
সোজা ভাবে বললে, আপনি নিজের ছবির দ্বারা নিজের friends এবং family-দের দারুন ভাবে প্রভাবিত করতে পারবেন।
নিচে, আমি যেগুলো এন্ড্রয়েড মোবাইলের ছবি এডিটিং এপস গুলোর বিষয়ে বলতে চলেছি, প্রত্যেকটি আপনারা গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে ডাউনলোড করতে পারবেন।
১. PhotoDirector
২. YouCam Perfect
৩. Pixlr
৪. PicsArt
৫. Snapseed
৬. Adobe Photoshop Camera
৭. Canva – mobile app
৮. FaceTune – Best Selfie App
৯. Prisma
১০. PicCollage
বেশিরভাগ সফটওয়্যার গুলোতেই আপনারা পাবেন,
Collage frames and designs,
Basic editing tools,
Cropping, straightening, frames, text, vignettes,
red-eye correction,
Brightness, contrast, saturation, filters, borders.
প্রত্যেকটি এপস আপনারা গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করে ফ্রীতে ব্যবহার করতে পারবেন।
প্রফেশনাল ভাবে ছবি এডিট করার নিয়ম ও কৌশল গুলো:
নিচে আমি আপনাদের সেই প্রত্যেকটি ধাপ গুলোর বিষয়ে বলবো যেগুলো অনুসরণ করে আপনারা প্রফেশনাল ভাবে ছবি এডিট করতে পারবেন।
যদি আপনি আগে কখনো ছবি এডিট করেননি, তাহলে অবশই আর্টিকেলটি ভালো করে পড়ুন।
কেননা, একজন beginner হিসেবে ফটো এডিটিং এর সাথে জড়িত আপনার যা যা জানতে হয় সবটাই নিচে আপনারা জানবেন।
১. Color correction
যখন আপনি একটি ছবি নিয়ে এডিটিং এর কাজ শুরু করবেন, তখন সেখানে এমন কিছু এডজাস্টমেন্ট আপনাকে করতে হবে, যেগুলো অনেক জরুরি।
আর এই এডজাস্টমেন্ট গুলোর মধ্যে একটি হলো, “color correction”.
প্রায় প্রত্যেক photo editing tool গুলোতে এই feature আপনারা পেয়েই যাবেন।
এর দ্বারা আপনারা ছবিটি color-গুলোকে আরো অধিক উজ্জ্বল ও পরিষ্কার করে নিতে পারবেন।
২. Creating an HDR image
HDR মানে হলো “high dynamic range”.
সোজা ভাবে বললে, এটা হলো আপনার ফটোতে থাকা light এবং dark tones এর পরিসীমা।
HDR-এর আপনার ছবিতে একেবারে সঠিক ভাবে light এবং dark এপ্লাই করতে সাহায্য করে থাকে।
তাই, যখনি ছবি তুলবেন, চেষ্টা করবেন HDR mode অন করে ছবি তুলতে।
৩. Cleaning up backgrounds
অনেক সময় আপনার ছবি অনেক সুন্দর হয়ে থাকে তবে ছবির background কিন্তু একেবারে বাজে দেখায়।
এক্ষেত্রে, আপনি বিভিন্ন editing tools এবং effects গুলো ব্যবহার করে ছবির background color ইত্যাদি মিলিয়ে নিতে পারবেন।
এছাড়া, editing tool-এর মধ্যে থাকা background removal ফীচার ব্যবহার করে ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড সরিয়ে নতুন ব্যাকগ্রাউন্ড লাগাতে পারবেন।
৪. Haze effect
আপনারা প্রায় প্রত্যেক photo editor গুলোতেই এই Haze effect পেয়ে যাবেন।
এই এফেক্ট ব্যবহার করে আপনারা যেকোনো ছবিকে একটি dreamy look দিতে পারবেন।
৫. White balance
যেকোনো এডিটিং টুল এর মধ্যে এই basic feature-টি অবশই পেয়ে যাবেন।
যখন আপনি ছবি তুলে থাকেন, তখন আপনার ক্যামেরা অবশই ছবিতে কিছু পরিমানে white balance এপ্লাই করে থাকে।
তবে ক্যামেরার white balance-এর এর বাইরেও আলাদা করে adjustment এর প্রয়োজন হয়ে থাকে।
সঠিক ভাবে white balance এপ্লাই করার পর আপনার ছবিতে একেবারে বাস্তব জীবনের মতোই সাদা ভাব (whites) দেখাবে।
৬. Boost the contrast
একটি ছবিতে থাকা অন্ধকার এবং আলো এর পরিমানটি (darks and lights) এই contrast-এর দ্বারা মিলিয়ে নেওয়া হয়।
বেসিরভাগ ক্ষেত্রেই ছবি গুলোতে হালকা অন্ধকার (dark) ভাব থেকেই থাকে।
তাই, ছবির contrast বাড়িয়ে আপনারা ছবিটিকে অধিক ঝকঝকে এবং উজ্জ্বল করে নিতে পারবেন।
৭. Reduce noise
Professional photo editing-এর basic ধাপ গুলোর মধ্যে এটা আমাদের শেষ টিপ।
আপনারা যেকোনো ফটো এডিটিং টুল এর মধ্যে Noise এবং sharpening মেলানোর অপসন পাবেন।
Noise-হলো একটি ছবিতে থাকা কিছু visual distortion যার কারণে ছবিতে কিছু কিছু details গুলো blur হওয়া দেখা যায়।
আর এই কারণে ছবিটি দেখতে অনেক খারাপ দেখায়।
অধিক noise আপনার ছবিটিকে একেবারেই খারাপ করে দেয়।
তাই, নিজের ফটো এডিটিং টুল এর মধ্যে থাকা noise ফীচার এর মধ্যে গিয়ে noise কমিয়ে দিন।
একটি ছবি থেকে নয়েস রিমুভ করাটা অনেক জরুরি একটি ধাপ।
৮. Increase sharpening
একটি ছবিতে sharpening apply করাটা আমার হিসেবে অনেক জরুরি।
কারণ, আপনার ছবিটি আরো অধিক উজ্জ্বল এবং স্পষ্ট দেখানোর জন্যে sharpening-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
তাই, আপনার image editing tool এর sharpening অপসন এর মধ্যে গিয়ে ফটোটি কিছুটা শার্প করে নিন।
Sharpening আপনার ছবির pixels-এর মধ্যে থাকা contrast -এর পরিমান বাড়িয়ে দেয় যার ফলে ছবিটি দেখতে অধিক বাস্তবসম্মত লাগবে।
FAQ,
ফটো এডিটিং শিখতে কত দিন লাগবে ?
ভালো করে শিখলে মাত্র ১ মাসের মধ্যে basic থেকে advanced ফটো এডিটিং এর কৌশল গুলো শিখে নিতে পারবেন।
সেরা অনলাইন ফটো এডিটিং টুল কোনটি ?
Canva, Pixlr, fotor.com ইত্যাদি এই অনলাইন টুল গুলো ব্যবহার করতে পারবেন।
ফ্রি ফটো এডিটিং কোর্স কিভাবে করবেন ?
Advance বা basic photo এডিটিং যদি শিখতে চাইছেন, তাহলে ইউটিউবের মধ্যে প্রচুর ফ্রি কোর্স গুলো রয়েছে।
ছবি এডিটিং টিপস: উপসংহার
এখন আপনারা আমাদের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শেষ করার পর অবশই বেসিক ফটো এডিটিং (basic photo editing) শিখে গিয়েছেন।
অবশই আমি এখানে কেবল কিছু জরুরি ইমেজ এডিটিং এর ধাপ গুলো আপনাদের বলেছি।
আপনারা নিজের থেকে tool-টি ব্যবহার করে দেখলে অনেক নতুন নতুন editing effects এবং features গুলোর বিষয়ে জানতে পারবেন।
আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কিরকম লাগলো ? নিচে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেননা।
0 responses on "ছবি এডিট করার নিয়ম ও কৌশল গুলো কি কি – (Photo Editing Basics)"