ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ এর অফিসিয়াল ম্যাচ বলে ব্যবহৃত হচ্ছে নতুন কিছু প্রযুক্তি যা থেকে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করে ভিএআর ব্যবহারকে আরো দ্রুত-নির্ভরযোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি অধিক সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে। নভেম্বর ২০ থেকে শুরু হয়ে ডিসেম্বর ১৮ পর্যন্ত চলমান এই ফুটবল এর মহাউৎসবে অংশগ্রহণ করছে ৩২টি দল।
ফিফা প্রদত্ত তথ্যমতে এইবারের বিশ্বকাপের বলটি এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম হতে যাচ্ছে যা হাই-স্পিড ও হাই-কোয়ালিটি গেমস প্রদান করবে। আল রিহলা নামের এই বল হতে যাচ্ছে প্রথম বিশ্বকাপ অফিসিয়াল ম্যাচ বল যা বল সম্পর্কে নিখুঁত তথ্য প্রদান করার মাধ্যমে রিয়েল-টাইমে ভিডিও ম্যাচ অফিসিয়ালদের সাহায্য করবে। চলুন আরো জেনে নেওয়া যাক আল রিহলা নামে এই চমৎকারী বল সম্পর্কে।
আল রিহলা কি?
আল রিহলা হলো একটি আরবী শব্দ যার অর্থ হলো The Journey বা যাত্রা। এটি মূলত কাতার এর কালচার, আর্কিটেকচার, অসাধারণ বোট ও পতাকা থেকে অনুপ্রাণিত। বোল্ড ও ভাইব্রেন্ট কালার দ্বারা মূলত এখানে ফিফা বিশ্বকাপ হোস্ট কান্ট্রি এর পাশাপাশি খেলার দ্রুততাকেও বুঝানো হয়েছে। আল রিহলা হলো প্রথম ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ বল যা পানি-ভিত্তিক ইঙ্ক ও গ্লু দ্বারা এক্সক্লুসিভলি তৈরি করা হয়েছে।
বলে থাকা প্রযুক্তি খেলোয়াড়ের অবস্থান ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে ফিফার সেমি-অটোমেটেড অফসাইড টেকনোলজিতে অবদান রাখবে। এছাড়া ভিএআর এ তথ্য প্রদান করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করবে এই প্রযুক্তি।
এই প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করে?
আল রিহলা এর কেন্দ্রে রয়েছে এডিডাস এর সাসপেনশন সিস্টেম যা বলটিকে ৫০০হার্জ ইনারশিয়াল মেজারমেন্ট ইউনিট (আইএমইউ) মোশন সেন্সরকে স্ট্যাবিলাইজ করে। এর ফলে বলের প্রতিটি মুভমেন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় যা খেলার কোনো ধরনের ক্ষতি করেনা বা প্লেয়ারদের নজরেও পড়েনা। এই সেন্সর রিচার্জেবল ব্যাটারি দ্বারা চলে ও ইনডাকশন দ্বারা চার্জ করা যায়।
এই নতুন প্রযুক্তি ফিফা ও কিনেক্সন একসাথে মিলে তৈরি করেছে। কিনেক্সন মূলত স্টেট-অফ-আর্ট সেন্সর নেটওয়ার্ক ও এজ কম্পিউটিং জগতে অগ্রণী ভুমিকা পালন করছে। এসব প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে ভিডিও ম্যাচ অফিসিয়াল সঠিক ও লাইভ ডাটা সুন্দরভাবে দেখতে পারবেন।
এছাড়া অফসাইড নির্ণয় এর ক্ষেত্রেও বিশেষভাবে সাহায্য করবে এই প্রযুক্তি। ভিএআর এর সাথে একসাথে কাজ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে থাকা এই নতুন প্রযুক্তি।
বিশ্বের অসংখ্য ধরনের খেলার মাঠে আল রিহলা এর কানেক্টেড বল প্রযুক্তি বেশ ঢালাওভাবে পরীক্ষা চালিয়েছেন গবেষকগণ। এছাড়া ফিফা আরব কাপ ও ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ ২০২১ এ এই বল পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হয়। সকল পরীক্ষা সফলভাবে পাস করার পর আল রিহলা বিশ্বকাপ ২০২২ এর অফিসিয়াল বলে পরিণত হয়েছে।
কানেক্টেড বল প্রযুক্তিসম্পন্ন আল রিহলা বলটি ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ এর সকল ৬৪টি ম্যাচে ব্যবহৃত হবে। বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে প্রাপ্ত সকল তথ্য ফিফা নিয়ন্ত্রণ ও সংরক্ষণ করবে। বলের নির্মাতা এডিডাস জানিয়েছে এই নতুন প্রযুক্তিসম্পন্ন বল বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হবে না।
0 responses on "কাতার বিশ্বকাপ বলে থাকা চমকপ্রদ প্রযুক্তি সম্পর্কে জানুন"