ওয়েব হোস্টিং কি – আপনি যদি একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট বানানোর কথা ভাবছেন, তাহলে ওয়েব হোস্ট এর ব্যাপারে আপনার জেনেনেয়াটা অনেক জরুরি। কারণ, যেভাবে এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটি মানুষের থাকার জন্য একটি জায়গা বা ঘরের প্রয়োজন, ঠিক সেভাবেই, ইন্টারনেটের দুনিয়াতে একটি ওয়েবসাইটকে রাখার জন্য, আপনার জায়গার প্রয়োজন হবে। তাই, ইন্টারনেটে যেকোনো ওয়েবসাইট, app বা ব্লগ চালু করার জন্য আপনার সর্ব প্রথমে, তাদের রাখার জন্য একটি জায়গা কিনতে হবে। এবং, আপনি কিনেনেয়া সেই জায়গাকেই ওয়েব হোস্টিং (web hosting) বলা হয়। নিজের ওয়েবসাইটের জন্য জায়গা বা হোস্টিং যেখানথেকে কিনবেন তাকে আপনার ওয়েবসাইটের হোস্ট (host) বলা হয়। What is web hosting in Bangla ?
আজ, নিজের একটি website থাকাটা অনেক বরো কথা এবং ওয়েবসাইট maintain করাটাও সবাইর পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য proper knowledge থাকাটা অনেক অনেক জরুরি। একটি ওয়েবসাইট ইন্টারনেটের দুনিয়াতে সফলতা পূর্বক ভাবে থাকার জন্য এর দুটি জিনিসের অনেক প্রয়োজন। যেমন, Domain এবং Hosting . এই দুটি জিনিস ছাড়া আপনি কখনোই একটি ওয়েবসাইট চালু করতে পারবেননা। ডোমেইন নাম কি এবেপারে আমরা পরে চর্চা করবো। তবে, আজকে আমরা হোস্টিং কাকে বলে এবং হোস্টিং এর বেপারে সবটাই জেনেনেব।
ওয়েব হোস্টিং কি ? what is web hosting (টিউটোরিয়াল)
যা আমি আগেইবলেছি, web hosting এমন একটি সার্ভিস, যার দ্বারা আমরা আমাদের যেকোনো blog বা website ইন্টারনেটের দুনিয়াতে চালু করতে পারি। যখন আমরা যেকোনো hosting provider থেকে হোস্টিং কিনি, তখন আমাদের ইন্টারনেটের web server এ কিছু স্পেস বা জায়গা দেয়া হয়।
সেই web server এমন একটি কম্পিউটার যে সব সময় ইন্টারনেটের সাথে জড়িত (connected) থাকে। এবং ওয়েব সার্ভারের কিনে নেয়া জায়গাতে যখন আমরা আমাদের video, file, image, media বা text article ব্লগ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপলোড করি তখন সেগুলি web server এ জমা (store) হতে থাকে।
ওয়েব সার্ভার সবসমই ইন্টারনেটের সাথে জড়িত (connected) থাকার জন্যই, আমাদের ওয়েবসাইট বা ব্লগ জেকেও ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিজেদের মোবাইল বা কম্পিউটারে access করতে পারেন। কিন্তু, এর জন্য আগে আমাদেড় একটি domain name কিনে, তাকে আমাদের web server এর সাথে সংযোগ (connect) করতে হবে।
আপনার ওয়েব সার্ভারের (hosting) সাথে connected ডোমেইন নামের মাধ্যমে জেকেও ইন্টারনেটের সাথে জড়িত যেকোনো কম্পিউটার বা মোবাইলের দ্বারা আপনার ওয়েব সার্ভারে থাকা video, file, image বা অন্য content দেখতে পারবে। এবং এই মাধ্যম টাকেই ওয়েবসাইট বা ব্লগ বলা হয়। কারণ, একটি website বা blog এ আপনি সেই সব জিনিস গুলি দেখতে পারবেন, যেগুলি সেই ওয়েবসাইটের ওয়েব সার্ভারে (web server) আপলোড (upload) করা হয়েছে।
তাহলে শেষে, ওয়েব হোস্টিং কি ? আপনি হয়তো এখন বুঝেই গেছেন। হোস্টিং এমন একটি জায়গা যেটা আপনার অবশই কিনতে হবে নিজের ওয়েবসাইট বা ব্লগকে ইন্টারনেটে অনলাইন সব সময় সক্রিয় (active) করে রাখার জন্য।
ওয়েব হোস্টিং মূলত কত প্রকারের এবং কি কি ? (Types of web hosting)
ওয়েব হোস্টিং কাকে বলে বা কি এইটা জানার পর, web hosting কত প্রকারের সেইটা জেনেনেয়াটাও অনেক জরুরি। ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা, security, speed আদি নির্ভর কোরে অনেক রকমের web hosting আমরা ব্যবহার করতে পারি। এমনিতে, web hosting এর অনেক প্রকার আছে। এদের মধ্যে মূলত যেগুলি সবথেকে বেশি ব্যবহার করা হয় ব্লগ এবং ওয়েবসাইট হোস্ট করার জন্য সেগুলি হলো –
- শেয়ার্ড হোস্টিং (shared hosting)
- V P S (Virtual private server)
- ডেডিকেটেড হোস্টিং (dedicated server)
- ক্লাউড হোস্টিং (cloud hosting)
চলুন এই সব রকমের ওয়েব হোস্টিংয়ের প্রকার গুলির বেপারে জেনেনেই ডিটেল্সে।
শেয়ার হোস্টিং এর মানে হলো, ওয়েব হোস্টিং কে শেয়ার (share) করা। মানে, একটি web server অনেক গুলি ওয়েবসাইট শেয়ার করবেন। উদাহরণ স্বরূপে, ভেবেনিন একটি ঘর আছে এবং আপনারা অনেক বন্ধুরা সেই ঘর শেয়ার করে বা ভাব করে থাকছেন। এই ক্ষেত্রে, আপনার ঘর হলো web server এবং এবং আপনি আর আপনার বন্ধুরা যারা ঘর ভাগ করে থাকছেন তারা একটি একটি ওয়েবসাইট।
এতে, আপনার লাভ এটাই যে, আপনাদের ঘর ভাড়া সব বন্ধুরা মিলেই দিতে পারবেন। এতে আপনার অনেক কম টাকা দিতে হবে। Shared hosting এর ক্ষেত্রেও, আমরা একটি web server অনেক গুলি ওয়েবসাইট বা ব্লগের সাথে শেয়ার করি, এতে আমাদের এর জন্য অনেক অনেক কম টাকার প্রয়োজন হয়। শেয়ার্ড হোস্টিং আপনি অনেক কম টাকায় কিনেনিতে পারবেন। এবং, একটি নতুন ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য shared hosting লোকেরা বেবহার করেন।
Shared hosting এর কিছু লাভ
- অনেক সস্তায় এবংকম দামেই কিনতে পারবেন।
- একটি নতুন ওয়েবসাইটেরজন্য সেরা হোস্টিং।
- শেয়ার্ড হোস্টিং এর দাম এর কথা বললে, আপনি Rs.৫০ থেকে Rs.২০০ (monthly) ভেতরে ভালো শেয়ার্ড হোস্টিং কিনতে পারবেন। এমনিতে অনেক shared hosting company রয়েছেন যারা ফ্রীতেই হোস্টিং দেন।
ভার্চুয়াল প্রাইভেট হোস্টিং কি ? (Virtual private server)
ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার shared hosting থেকে অনেক হাজার গুনেই ভালো। তবে হে, VPS সার্ভার আমরা তখন নেই যখন আমাদের ওয়েবসাইটে ভিসিটর্স বা ট্রাফিক অনেক আসেন এবং যখন আমাদের ওয়েবসাইট অনেক popular হয়ে যায়। প্রথম অবস্থায়, vps হোস্টিং নেয়ার প্রয়োজন আমি মনে করিনা।
তাহলে এই ভি পি এস (vps) হোস্টিং বললে আমরা কি বুঝি। যেমন, একটি বিল্ডিং (building) এ অনেকগুলি রুম (room) বানানো থাকে ঠিক সেভাবেই এই প্রকারের হোস্টিং এ একটি ওয়েব সার্ভার অনেক গুলি ভাগে ভাগ করা হয়। এবং, যেভাবে আপনি কিনে নেয়া রুমে কেবল আপনার অধিকার থাকে ঠিক সেভাবেই vps server এ আপনি কিনে নেয়া ভাগে কেবল আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের অধিকার থাকবে। আপনি, যেই ভাগটা কিনবেন সেটা কেবল আপনার ওয়েবসাইটের জন্য এবং অন্যকেও সেই ভাগ ব্যবহার করতে পারবেনা। এইটা আপনার private web server এর মতোই। এবং, এটাই কারণ যে vps server বা vps hosting অনেক দ্রুত (fast) এবং এ বেশি ট্রাফিক বা ভিসিটর থাকা ওয়েবসাইটের জন্য লাভদায়ক।
ভি পি এস হোস্টিং এর কিছু লাভ
- Security র হিসাবে দেখতে গেলে vps server অনেক নিরাপদ (secure).
- অনেক দ্রুত এবং এর কর্মক্ষমতা অনেক উচুস্থরের।
- Share hosting থেকে অনেক গুন্ বেশি ট্রাফিক বা ভিসিটর এ হাতল (handle) করতে পারে।
- আজকাল ভি পি এস (vps) হোস্টিং প্রায় Rs.১০০০ থেকে Rs.১৫০০ (monthly) ভেতরে আপনি পেয়েযাবেন।
ডেডিকেটেড হোস্টিং কি ? (Dedicated web hosting)
ডেডিকেটেড হোস্টিং অন্য হোস্টিং থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ, শেয়ার্ড হোস্টিং এ আপনাকে একটি ওয়েব সার্ভার অসংখ ওয়েবসাইটের সাথে শেয়ার করতে হয় এবং vps hosting এ আপনাকে ওয়েব সার্ভার এর একটি ভাগ দিয়ে দেয়া হয় যেটা কেবল আপনার।
কিন্তু, ডেডিকেটেড হোস্টিং এর ক্ষেত্রে আপনাকে একটি পুরো ওয়েব সার্ভার দিয়ে দেয়া হয় যেটা কেবল আপনার। এবং, সেই ওয়েব সার্ভারে কেবল আপনার ওয়েবসাইট এবং তার ফাইল হোস্ট করা থাকবে। ঠিক তেমনি, যখন আপনি একটি room নয় পুরো বিল্ডিং (building) টাই কিনে নিলেন এবং তার পর তাতে কেবল আপনার থাকার অধিকার থাকলো।
ডেডিকেটেড হোস্টিং এর ক্ষেত্রে, কেবল একটি ওয়েবসাইট একটি সার্ভারে হোস্ট থাকার কারণে সেই ওয়েবসাইট অনেক বেশি ফাস্ট এবং দ্রুত কাজ করবে এবং নিরাপত্তার (security) দিকদিয়ে দেখলে এ অনেক নিরাপদ (secure).
কিন্তু, মনে রাখবেন, এই হোস্টিং তখন প্রয়োজন হবে যখন আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট অনেক বেশি ট্রাফিক আসবে। এবং, ডেডিকেটেড সার্ভারের দাম অনেক অনেক বেশি।
ডেডিকেটেড হোস্টিং এর কিছু লাভ
- অনেক বেশি ট্রাফিক বা ভিসিটর্স handle করতে পারে।
- এই রকমের হোস্টিং অনেক নিরাপদ (secure) .
- কর্মক্ষমতা অন্যদের থেকে অনেক গুনে বেশি।
- ওয়েবসাইট বা ব্লগ অনেক দ্রুত কাজ করবে।
- Dedicated server আপনি মিনিমাম Rs.৬০০০ (monthly) থেকে কিনতে পাবেন। কিছু ক্ষেত্রে আরো অনেক বেশি।
ক্লাউড হোস্টিং কি ? (Cloud hosting)
ক্লাউড হোস্টিং আজ ব্লগার এবং ওয়েবসাইট মালিকদের মধ্যে সবথেকে বেশি প্রচলিত এবং ভরসার হোস্টিং সার্ভিস হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এর কর্মক্ষমতা এবং স্পিড অনেক উন্নত মানের এবং এই হোস্টিং অনেক নিরাপদ। যাওয়া কিছু বছরে, cloud hosting অনেক জনপ্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবং, আমি নিজেই আমার ব্লগের জন্য ক্লাউড হোস্টিং বেবহার করছি।
আসলে ক্লাউড হোস্টিং এ অনেক গুলি ওয়েব সার্ভার একসাথেই রাখা হয় এবং তাই আপনি আপনার প্রয়োজন হিসেবে সার্ভারের কিছু প্রয়োজনীয়তা যেমন cpu, RAM বা storage বাড়িয়ে বা কমিয়ে নিতে পারবেন। এতে, যখনি আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিসিটর বাড়বে আপনি অনেক সহজে সেই হিসেবে নিজের ওয়েব সার্ভারের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
এবং, সময়ে আপনি কর্মক্ষমতা কমিয়েও নিতে পারবেন। ক্লাউড হোস্টিং এ ওয়েবসাইট ডাউন হওয়ার সুযোগ অনেক কম এবং বেশি ট্রাফিক এ হ্যান্ডেল করতে পারে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও আপনি ক্লাউড ওয়েব সার্ভারকে ভরসা করতে পারবেন।
ক্লাউড হোস্টিং এর কিছু লাভ
- সার্ভার ডাউন (server down) হওয়ার সুযোগ অনেক কম।
- কর্মক্ষমতা অনেক উন্নত এবং বেশি। এবং, নিজের প্রয়োজনীয়তা হিসেবে বাড়ানো বা কমানো যাবে।
- ওয়েবসাইটের বেশি ট্রাফিক বাভিসিটর হ্যান্ডেল (handle) করতে পারে।
- ক্লাউড হোস্টিং এর দাম তার কর্মক্ষমতা হিসেবে তেমন কোনো বেশি নয়। Rs.৪০০ (monthly) থেকে Rs.১০০০ (monthly) এর ভেতরে ক্লাউড হোস্টিং পেয়েযাবেন। এখানে দাম আপনার প্রয়োজনীয়তা (cpu, ram এবং storage) এর ওপরে নির্ভর করে।
ওয়েবসাইটের জন্য কোন হোস্টিং ভালো হবে ?
তাহলে বন্ধুরা, আশাকরি ওয়েব হোস্টিং কি এবং হোস্টিং এর বিভিন্ন প্রকারের বেপারে আমি আপনাদের বুঝিয়ে বলতে পারলাম। আসলে, ওয়েবসাইটের জন্য কোন হোস্টিং নিবেন বা কেমন হোস্টিং নিবেন সেটা আপনার ওয়েবসাইটের ওপরে নির্ভর করে।
আপনি যদি একটি ব্লগ বানানোর কথা ভাবছেন, তাহলে প্রথমে shared hosting কিনুন। আপনি অনেক কমেই শেয়ার্ড হোস্টিং কিনতে পারবেন এবং প্রথম অবস্থায় আপনার ব্লগে তেমন কোনো ট্রাফিক বা ভিসিটর্স আসবেনা।
তারপর যখন আপনার ব্লগে ট্রাফিক বা ভিসিটর্স আশা শুরু হবে তখন আপনি cloud hosting নিয়ে নিলে আপনার কাজ হয়ে যাবে। ক্লাউড হোস্টিং সব দিকদিয়েই সক্ষম। বেশি traffic বা visitor এ সইতে পারে, এর কর্মক্ষমতা অনেক বেশি, নিজের হিসেবে এর ক্ষমতা বাড়ানো বা কমানো যাবে, আপনার ওয়েবসাইট অনেক দ্রুত লোড (load) হবে এবং নিরাপত্তার দিক দিয়েও এ ভরসাযোগ্য। তাই, ক্লাউড হোস্টিং আপনার ওয়েবসাইটের জন্য সব থেকে ভালো ওয়েব হোস্টিং প্রমাণিত হতে পারে।
হে, এখন যদি আপনি দেখছেন আপনার ব্লগে বা ওয়েবসাইট সীমা ছাড়া ট্রাফিক আসছে এবং আপনার ব্লগ থেকে অনেক বেশি ইনকাম হচ্ছে, তাহলে আপনি Dedicated server নিতে পারেন। সীমাছাড়া ট্রাফিক ডেডিকেটেড হোস্টিং অনেক সহজে সইতে পারে। এবং, ট্রাফিক এর সাথে আপনার ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম ও হতে হবে যদি আপনি dedicated server নিতে চাচ্ছেন। কারণ, যা আমি আগেই বলেছি dedicated hosting অনেক expensive. তাহলে হোস্টিং কেনার আগে এই কয়টা জিনিস অবশই ধ্যান রাখবেন।
আমাদের শেষ কথা,
তাহলে বন্ধুরা, আশাকরি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের প্রশ্ন এবং সমস্যার সমাধান দিতে পারলাম। যদি আপনাদের ওয়েব হোস্টিং নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্ট অবশই করবেন। এবং আর্টিকেল যদি ভালো লেগে থাকে, তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার অবশই করবেন। ধন্যবাদ।