আপনি কি জানেন ওয়াইফাই কী এবং এই প্রযুক্তির ইতিহাস কী । যদিও পৃথিবীতে ইন্টারনেট এসেছে বহু বছর হয়ে গেছে, কিন্তু আগে ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া অনেক কঠিন ছিল ।
নেটওয়ার্ক থেকে ইন্টারনেটের জন্ম হয়েছে। পূর্বে কেবলমাত্র ডিজিটালভাবে যেকোনো তথ্য পাঠানোর জন্য ইন্টারনেট সংযোগ শুধুমাত্র তারের মাধ্যমে নেওয়া হত । কিন্তু আপনারা অবশ্যই জানেন যে, আমরা মানুষ সবসময় আরও উন্নত কিছু আবিস্কারের মাধ্যমে, আরামে এবং কোন ঝামেলা ছাড়াই কাজ করতে বেশী পছন্দ করি। অর্থাৎ ক্যাবল ছাড়া ইন্টারনেট কীভাবে ব্যবহার করা যায় সেই বিষয় নিয়ে মানুষ তখন ভাবতে শুরু করে।
সময়ের পরিবর্তনে অবশেষে কম্পিউটার বিজ্ঞানীরা ওয়াইফাই নামে একটি এসি ওয়্যার লেস প্রযুক্তি তৈরি করে সক্ষম হয়। আজকাল প্রায় সবাই এই বেতার প্রযুক্তি সম্পর্কে ভালভাবেই জানে। নতুন প্রজন্মের তরুণ থেকে শুরু করে প্রায় সব বয়সের মানুষ এই ওয়্যারলেস প্রযুক্তির মাধ্যমে ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত থাকে। তাহলে চলুন আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত জেনে নেই WiFi কি বা ওয়াইফাই কাকে বলে এবং ওয়াইফাই কিভাবে কাজ করে ।
ওয়াইফাই কি – WiFi কি – ওয়াইফাই কাকে বলে
ওয়াইফাই এর পুরো নাম হল ওয়্যারলেস ফিডেলিটি (Wireless Fidelity) । এটি হল বর্তমান সময়ের একটি জনপ্রিয় ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কিং প্রযুক্তি। এটি এমন একটি প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে কোন ক্যাবল বা তাঁরের সংযোগ ছাড়াই, আমরা ইন্টারনেট এবং নেটওয়ার্ক সংযোগ ব্যবহার করছি।
এর মাধ্যমে আমরা আমাদের, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, smartphone বা অন্যান্য device গুলোকে পরস্পরের সাথে সংযোগ করিয়ে শুধুমাত্র বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে data বা internet এর আদান প্রদান করতে পারি।
আরও সহজ ভাষায় বলতে গেলে, এটি এমন একটি প্রযুক্তি যার মাধ্যমে আমরা আমাদের স্মার্ট ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপে ইন্টারনেট সুবিধা পাচ্ছি ।
এর মাধ্যমে, আপনি এবং আমি সীমিত একটি জায়গার মধ্যে ইন্টারনেটের সাথে সংযোগ করতে পারি। বর্তমানে বেশীরভাগ মানুষ শুধুমাত্র WiFi এর মাধ্যমে ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করে এবং এর মাধ্যমে আপনি Share it এবং Xender এর মতই ওয়্যারলেসভাবে ডেটা প্রেরণ করতে পারবেন। ওয়াইফাই শব্দটি ওয়্যারলেস এবং হাই-ফাই শব্দ থেকে উদ্ভূত হয়েছে।
WiFi connectivity থাকা একটি আধুনিক “printer” কে আপনার ল্যাপটপ বা স্মার্টফোনের সাথে ওয়াইফাই এর মাধ্যমে সংযুক্ত করে, কোনো তারের সংযোগ ছাড়া শুধুমাত্র বেতার ভাবেই সেই প্রিন্টার থেকে প্রিন্ট দেওয়া সম্ভব।
WiFi এর প্রকারভেদ – ওয়াইফাই কত প্রকার
WiFi এর প্রকারভেদ গুলো নিচে আলোচনা করা হল –
IEEE 802.11a : – IEEE দ্বারা 1999 সালে এটি তৈরি করা হয়েছিল, যা 5 GHz ফ্রিকোয়েন্সিতে 115 ফুট পর্যন্ত 54 Mbps গতিতে কাজ করতে সক্ষম ছিল।
IEEE 802.11b : – এটি 1999 সালে বাড়িতে ব্যবহার করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল, যা 5 GHz ফ্রিকোয়েন্সিতে 11 Mbps গতিতে 115 ফুট পর্যন্ত কাজ করতে সক্ষম ছিল।
IEEE 802.11g : – 2003 সালে 802.11a এবং 802.11b কে একত্রিত করে এটি তৈরি করা হয়েছিল, যা 2.4 GHz ফ্রিকোয়েন্সিতে 54 Mbps গতিতে 125 ফুট পর্যন্ত কাজ করতে সক্ষম ছিল।
IEEE 802.11n : – এটি 2.4 GHz এবং 5 GHz ডুয়াল-ব্যান্ড রাউটার উভয় ক্ষেত্রে কাজ করার জন্য 2009 সালে এটিকে তৈরি করা হয়েছিল। এর ডেটা পাঠানোর গতি ছিল 54 Mbps এবং কাজ করেছিল 230 ফুট পর্যন্ত।
IEEE 802.11ac : – এটিকেও 2009 সালেই তৈরি করা হয়েছিল, যা 5 GHz ফ্রিকোয়েন্সিতে 1.3 Gbps গতিতে 115 ফুট দূরত্ব কাভার করতে সক্ষম ছিল।
ওয়াইফাই একটি স্ট্যান্ডার্ড। বর্তমান সময়ে যত স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, প্রিন্টার এবং কম্পিউটার আছে সেগুলোর প্রায় সবগুলোর ভেতরে একটি ওয়াইফাই চিপ আছে। যার মাধ্যমে আমরা এবং আপনি ওয়্যারলেস রাউটারের সাথে সংযোগ করি এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করি।
আপনার ডিভাইসে ওয়াইফাই এনাবল করার পরে, এটিকে ওয়্যারলেস রাউটারের সাথে সংযুক্ত করার পর, আপনি ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করতে পারবেন। আবার রাউটারকে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকার জন্য DSL এবং কেবল মডেমও ব্যবহার করতে পারবেন।
ওয়াইফাই হল হাই ফাই এর মত, যার পূর্ণ রূপ হল High FiDeliTy (হাই ফিডেলিটি) । WiFi এর পূর্ণরূপ Wireless Fidelity । ওয়াইফাই WLAN নামেও পরিচিত। Wifi প্রযুক্তি রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে।
ওয়াইফাই এর পূর্ণরূপ কি?
WiFi এর পূর্ণরূপ হল Wireless Fidelity.
ওয়াইফাই কে আবিস্কার করেন?
জন ও’সুলিভান এবং জন ডিন প্রথম Wi-Fi তৈরি করেন ।
Wi-Fi এর ইতিহাস
ওয়াইফাই 1985 সালে প্রথম আবিষ্কার হয়। যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (USA) FCC ঘোষণা করে, যে কেউ লাইসেন্স ছাড়াই ওয়্যারলেস ফ্রিকোয়েন্সি 900MHZ, 2.4 Ghz এবং 5.8 Ghz ইউজ করতে পারবে। এরপর থেকেই শুরু হয়েছিল ওয়াইফাইের ইতিহাস।
এই ব্যান্ডগুলি প্রথম অবস্থায় মাইক্রোওয়েভের মতো গৃহস্থালীতে ব্যবহার করা হত। এই কারণে মনে করা হতো এগুলোর কোনো লাভ নেই। বিশেষ করে যোগাযোগের ক্ষেত্রে তেমন কোন কাজে আসবে না। তাই এই ব্যান্ডটিকে ব্যবহারযোগ্য করার জন্য, FCC এর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। আর এটিকে স্পার্ড স্পেকট্রাম টেকনোলজি নাম দেওয়া হয়েছিল ।
১৯৪১ সালে স্প্রেড স্পেকট্রাম প্রযুক্তির লাইসেন্স নেওয়া হয়েছিল । এই প্রযুক্তির মাধ্যমে একাধিক ফ্রিকোয়েন্সি সহ সংকেত পাঠানো হত । এর ফলে সেই যুগে এই প্রযুক্তির কারনে ওয়্যারলেস সিগন্যালে অনেক উন্নতি হয়েছিল।
একই সময়ে আরও একটি প্রযুক্তির উদ্ভব হয়েছিল যার নাম দেয়া হয়েছিল WLAN (ওয়্যারলেস লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক) । তবে এটির অনেক প্রযুক্তিগত ত্রুটি ছিল। যেমন WLAN এর জন্য কোন স্ট্যান্ডার্ড ছিল না। যার ফলে বিভিন্ন কোম্পানির ডিভাইস সংযোগ করতে অনেক ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
1988 সালে, এনসিআর কর্পোরেশনের একটি ওয়্যারলেস ক্যাশ রেজিস্টারের প্রয়োজন হয়ে পরে। এ কারণেই তিনি ভিক্টর হেইস এবং ব্রুস টুচের সহায়তা নিয়ে ইন্সটিটিউট অফ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার্স (IEEE) কে একটি মানদণ্ডে পরিণত করার চেষ্টা করেছিলেন। স্ট্যান্ডার্ডটি 1997 সালে প্রস্তুত করা হয়েছিল এবং যার নাম দেয়া হয়েছিল “802.11”। এটি 1997 সালে প্রকাশিত হয়েছিল।
ঐ সময়ে 802.11 স্ট্যান্ডার্ডে ডেটা ট্রান্সফারের গতি ছিল প্রতি সেকেন্ডে প্রায় 2 মেগাবিট । 802.11a 1999 সালে আবার প্রকাশিত হয়েছিল । যার ডাটা আদান প্রদানের গতি ছিল প্রায় ৫৪ মেগাবিট পার সেকেন্ডে। এটি অনেক ব্যয়বহুল ছিল, তাই এর পরবর্তী সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল আর এর নাম দেয়া হয়েছিল 802.11b , এটি থেকেই WiFi প্রযুক্তির শুরু হয়েছিল, এই সংস্করণটি সস্তা ছিল এবং এই নেটওয়ার্কের পরিসরও ছিল অনেক বেশি।
802.11b এটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে অনেক বেশী জনপ্রিয় হয়ে ওঠে । খুব দ্রুত এটি হার্ডওয়্যার বাজারে তার একটি ভাল অবস্থান তৈরি করেছে। পরিসীমা এবং সামঞ্জস্যের কারণে, এটি বেশ অনেকটা ব্যয়বহুল ছিল।
এই কারণে, 6টি কোম্পানি একত্রিত হয়ে একটি ওয়্যারলেস ইথারনেট জোট বা WECA গঠন করে। এটির মাধ্যমে ওয়াইফাই কম্প্যাটিবিলিটি আছে কি না তা পরীক্ষা করা হয়।
2002 সালে, ওয়াই-ফাই এবং ওয়্যারলেস শব্দটি চালু করা হয়, এটি হাইফাই থেকে উদ্ভূব হওয়া একটি শব্দ। কয়েক বছর পর ওয়াই-ফাই অ্যালায়েন্সের মাধ্যমে এটির নাম জানা যায়।
কিভাবে Wifi প্রযুক্তি কাজ করে
আজকাল প্রায় বেশীরভাগ মানুষ ওয়াইফাই ব্যবহার করছে। অফিসে, বাড়িতে বা হোস্টেলে, কিন্তু এই প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে তা আমরা অনেকেই জানি না। প্রথমত, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হলে, আমাদের একটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস প্রয়োজন হবে।
এই ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসটি হল ওয়্যারলেস ট্রান্সমিটার/হাব/রাউটার। এই ডিভাইসটি ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক ক্রিয়েট করে। এই ওয়্যারলেস ডিভাইস অর্থাৎ ওয়্যারলেস রাউটার, ব্রডব্যান্ড সংযোগের মাধ্যমে তথ্য গ্রহণ করে। এই রাউটারের ভিতরে কিছু উপাদান থাকে যা এই তথ্যকে রেডিও তরঙ্গে রূপান্তরিত করে। এই ডিভাইসটি এই রূপান্তরিত তরঙ্গগুলি থ্রো করে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, একটি ছোট বেতার সিগন্যাল এড়িয়া তৈরি হয়। এই এড়িয়া কে আমরা বলি ওয়াইফাই জোন।
এই ছোট এলাকাটি একটি WLAN বা ওয়্যারলেস লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কে রূপ নেয়। এই ছোট এলাকায় থাকা সমস্ত ডিভাইস যেমন স্মার্টফোন, ল্যাপটপ , ওয়্যারলেস প্রিন্টার ইত্যাদি ডিভাইসের সাহায্যে আপনি সহজেই WiFi সিগন্যাল পেতে পারেন।
যে কোন মোবাইল ফোন ওয়াইফাই এর সাথে সংযুক্ত থাকার অর্থ হল ওই ডিভাইসে একটি বিল্টইন ওয়্যারলেস অ্যাডাপ্টার আছে। শক্তিশালী রেডিও সিগন্যাল না থাকার কারণে এই নেটওয়ার্কের দূরত্ব লিমিটেড হয়ে থাকে। সাধারনত বাড়ির ভিতরে বা পাশের বাড়িতে বা বাড়ির পাশের রাস্তার ধার পর্যন্ত এর সীমা থাকে। মানে এর পরিসীমা প্রায় 10 থেকে 20 মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
রেডিও সিগন্যাল খুব সহজেই প্রাচীরের ভেতর দিয়ে যাতায়াত করতে পারে। এই কারণে আশেপাশের ঘরেও ইন্টারনেট পেতে তেমন কোন অসুবিধা হয়ে না। একটি ঘরের জন্য সাধারনত একটি ওয়্যারলেস রাউটারই যথেষ্ট। আপনি যত ভাল রাউটার ব্যবহার করবেন, আপনার ইন্টারনেট তত দ্রুত চলবে এবং নেটওয়ার্ক তত শক্তিশালী হবে।
একই ভাবে যখন আপনি কোন ডেটা ( টেক্সট, ইমেজ, অডিও, ভিডিও ) ওয়্যারলেস ট্রান্সমিটার/রাউটারে ফেরত পাঠাবেন, একই প্রক্রিয়া বিপরীতভাবে চলবে।
ধরুন আপনি যখন ওয়াইফাই এর সাথে সংযুক্ত, অর্থাৎ আপনার মোবাইল যখন ওয়াইফাইয়ের সাথে সংযুক্ত তখন আপনি আপনার মোবাইল থেকে আপনার বন্ধুকে একটি পাঠ্য বার্তা পাঠিয়েছেন৷ মোবাইল থেকে বের হওয়ার আগে এবং ট্রান্সমিটার/রাউটারে সিগন্যাল পৌঁছানোর পরে এই বার্তাটি রেডিও সিগন্যালে রূপান্তরিত হয়। ট্রান্সমিটার/রাউটার এই লেখাটিকে একটি সংকেতে রূপান্তর করে এবং এটি ব্রডব্যান্ডে প্রেরণ করে এবং প্রাপকের ঠিকানা এতে থাকে। মূলত এভাবেই ওয়াইফাই কাজ করে।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য – বর্তমানের প্রায় সব স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এবং ট্যাবলেটের মতো ডিভাইস গুলোতে ওয়্যারলেস অ্যাডাপ্টার বিল্ট ইন অবস্থায় থাকে। এ কারণেই বেশিরভাগ স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপে ওয়াইফাই থেকে ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়া যায়। তবে বেশীরভাগ ডেস্কটপ কম্পিউটারে ওয়্যারলেস অ্যাডাপ্টার থাকে না। এই কারণে একটি এক্সটারনাল ওয়্যারলেস কার্ড বা অ্যাডাপ্টার কিনতে হবে। এটি ডেস্কটপের ইউএসবি পোর্টে লাগানো হয়। এর মাধ্যমে আমরা ডেস্কটপেও ওয়্যারলেস ভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারি ।
Wifi চালাতে কি কি প্রয়োজন হয়
WiFi চালাতে বা WiFi লাইন নিতে কি কি লাগে এই প্রশ্নের উত্তর একেক পরিস্থিতিতে একেক রকম হয়ে থাকে। তবে, এখানে আমি ধরে নিচ্ছি যে আপনারা ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য ওয়াইফাই কানেকশন নেওয়ার কথা ভাবছেন। আর সেই ক্ষেত্রে আপনাদের নিচের জিনিস গুলোর প্রয়োজন পড়বে –
- Modem অথবা ব্রডব্যান্ড কানেকশন: প্রথমে আপনার মডেম বা ব্রডব্যান্ড কানেকশন প্রয়োজন হবে। যা সরাসরি ভাবে ইন্টারনেট এর সাথে সংযুক্ত থাকবে। মডেম fixed বা wireless দুই ভাবেই ইউজ করা যায়।
- Router: ওয়াইফাই এর মাধ্যমে ইন্টারনেট চালানোর জন্য আপনার আরও প্রয়োজন হবে একটি রাউটার । এর কাজ হলো, মডেম বা ব্রডব্যান্ড থেকে তথ্য বা ডাটা সংগ্রহ করে সেগুলোকে রেডিও সিগন্যালে ডিকোড করা। এবং, সেই ডিকোড করা সিগন্যাল গুলোকে ওয়াইফাই এড়িয়া তে ডিস্ট্রিবিউট করা ।
- Wireless USB adapter: যদি আপনি আপনার ডেস্কটপ কম্পিউটারে ওয়াইফাই এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চান তাহলে একটি wireless USB adapter আপনার ডেস্কটপ কম্পিউটারে লাগাতে হবে। এই wireless adapter, রাউটার থেকে আসা ডাটা গুলোকে রিসিভ করে। এর ফলে আপনি আপনার ডেস্কটপ কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন।
ওয়াইফাই (Wi-Fi) এর সুবিধা
WiFi network বর্তমানে প্রচুর পরিমানে ব্যবহার করা হচ্ছে। কেননা, এটি ব্যবহার করে মানুষ অনেক ধরনের সুবিধা পাচ্ছেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক সহজেই তারা তাদের কাজ গুলো করে ফেলতে পারছেন।
- বর্তমান সময়ের smart TV গুলোতে WiFi এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে, টিভিতেই ইন্টারনেট ইউজ করা সম্ভব।
- ওয়াই-ফাই এর একটি বড় সুবিধা হলো, আপনি একটি রাউটারে অনেকগুলো ডিভাইস কানেক্ট করতে পারবেন এবং সেগুলোতে একই সাথে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন ।
- ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কে কোনো তার ছাড়াই সংযোগ দেওয়া যায় । তাই ঘরের মধ্যে যেখানে সেখানে তারের কোনো জঞ্জাল থাকে না ।
- স্মার্ট টিভির ক্ষেত্রে আপনার মোবাইলটিকে টিভি রিমোট হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন ।
- ল্যাপটপ বা computer এর সাথে কোনো তার সংযোগ না করে wifi এর মাধ্যমে ওয়াইফাই Printer এ প্রিন্ট করা সম্ভব।
- মোবাইল ইন্টারনেটের থেকে ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে গতি অনেক বেশী পাওয়া যায় । মোবাইল ইন্টারনেটের থেকে খরচ অনেক কম হওয়ায় বেশীরভাগ মানুষ এটি ব্যবহার করে ।
- আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটিকে নিজের পার্সোনাল কম্পিউটারের সাথে সংযোগ করতে পারবেন। এবং আপনার স্মার্টফোন এবং computer এর মধ্যে যে কোন ধরনের ডেটা বা ফাইল আদান-প্রদান করতে পারবেন।
- আপনি আপনার লোকাল সার্ভিস প্রভাইডারের থেকে একটি নির্দিষ্ট রেঞ্জের ডাটা স্পিড সহ প্যাকেজ কিনে নিলে আনলিমিটেড ভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন । মোবাইল ইন্টারনেটের মত লিমিটেড এমবি নিয়ে চিন্তা করতে হবে না ।
- আপনার মোবাইলে থেকে ইন্টারনেট নিজের ল্যাপটপে ব্যবহার করতে পারবেন এই ওয়াইফাই এর সাহায্যে।
- আপনার স্মার্টফোনে থাকা মুভি বা গেম গুলোকে smart tv তে ওয়াইফাই এর মাধ্যমে stream করতে পারবেন।
ওয়াই-ফাই এর অসুবিধা
যে জিনিসের অনেক ধরনের সুবিধা আছে, সেই জিনিসের কিছু না কিছু অসুবিধা অবশ্যই থাকবে । তাই ওয়াই-ফাই এরও কিছু অসুবিধা রয়েছে। ওয়াইফাই এর অসুবিধা গুলো নিচে দেওয়া হল
- ওয়াইফাই এর সবচেয়ে বড় অসুবিধা হল এটাও সীমানা লিমিটেড অর্থাৎ এটা নির্দিষ্ট সিমানার বাইরে ইউজ করা যায় না।
- ওয়াই-ফাই এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেকটা দুর্বল যার কারণে আমাদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অনেক ধরনের ঝুঁকি থেকে যায় ।
- ওয়াই-ফাই এর রেডিয়েশনের কারণে শারিরীক প্রবলেম হতে পারে ।
- যখন এক রাউটারে কয়েকজন ব্যবহারকারী একসাথে কাজ করে তখন ডাটা স্পিড অনেক কমে যায় ।
- আজকাল অনেকেউ WiFi এর মাধ্যমে যেকোনো সিস্টেমে প্রবেশ করে আপনার ডেটা চুরি করতে পারে। সে কারণেই এটি এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় অসুবিধা।
Wi-Fi 6 কি
Wi-Fi 6 হল WiFi প্রযুক্তির নেক্সট জেনারেশন স্ট্যান্ডার্ড । Wi-Fi 6 কে “AX WiFi” বা ” 802.11ax WiFi ” ও বলা হয়ে থাকে৷ মেহজুদা 802.11ac ওয়াইফাই স্ট্যান্ডার্ডকে আরও বেশী উন্নত করে এটিকে তৈরি করা হয়েছে।
Wi Fi 6 কে সর্বকালের দ্রুততম WiFi বললেও খুব একটা ভুল বলা হবে না। আপনি যদি WiFi-এর নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে না জানেন, তবে আমি আপনাকে বলব যে, এটি বেতার প্রযুক্তির জগতে একটি বড় ধরনের বিপ্লব আনতে চলেছে। WiFi 6 ” AX WiFi ” এবং “802.11ax WiFi” নামেও পরিচিত ।
যেমনটি আমি আগেই বলেছি, বর্তমান 802.11ac ওয়াইফাই স্ট্যান্ডার্ডে প্রয়োজনীয় উন্নতি এনে এটি তৈরি করা হয়েছে। মূলত, বিশ্বে ক্রমবর্ধমান ডিভাইসের সংখ্যার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ওয়াইফাই 6 তৈরি করা হয়েছে।
ওয়াই-ফাই স্ট্যান্ডার্ড | Wi-Fi নাম |
802.11n | Wi-Fi 4 |
802.11ac | Wi-Fi 5 |
802.11ax | ওয়াই-ফাই 6 |
WiFi 6 হল WiFi রাউটারের একটি আপগ্রেড আপডেট ৷ উদাহরণস্বরূপ, আপনার যদি একটি VR ডিভাইস এবং একাধিক স্মার্টফোন হোম ডিভাইস থাকে, তাহলে WiFi 6 রাউটার আপনার জন্য একটি দুর্দান্ত WiFi রাউটার হতে পারে।
শেষ কথা
আমাদের সবসময় চেষ্টা থাকে যে আপনারা সবসময় আমাদের কাছ থেকে সঠিক, নির্ভুল এবং সম্পূর্ণ তথ্য পান। আজ আমরা আপনাদের সাথে ওয়াইফাই কী এবং ওয়াইফাই প্রযুক্তির ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি । যদি দেখা যায়, ওয়াইফাইয়ের অনেক ধরনের সুবিধা রয়েছে । কিন্তু তারপরেও ভবিষ্যতে, ওয়াইফাইয়ের চেয়েও আরও নতুন প্রযুক্তি আমাদের সামনে আসবে।
আর্টিকেলটি নিয়ে যে কোন ধরনের প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানান।
ধন্যবাদ ।
0 responses on "ওয়াইফাই কি এবং এই প্রযুক্তির ইতিহাস কি"