স্যাটেলাইট ফোন ফার্ম ইরিডিয়াম ও চিপ জায়ান্ট কোয়ালকম এর সাথে এক নতুন পার্টনারশিপ হয়েছে যা এই বছর এন্ড্রয়েড স্মার্টফোনে স্যাটেলাইট কানেকটিভিটি আনতে যাচ্ছে। এর মানে হলো যেখানে কোনো মোবাইল কভারেজ থাকবেনা সেখানে হ্যান্ডসেটগুলো স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে মেসেজ আদানপ্রদান করতে পারবে। মোবাইল নেটওয়ার্ক থাকলে সেখানেও উপভোগ করা যাবে এই সুবিধা।
কোয়ালকম এর মোবাইল চিপগুলো অনেক অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে দেখা যায়। ২০২২ সালে অ্যাপল তাদের আইফোন ১৪ সিরিজে স্যাটেলাইট কানেকটিভিটি ফিচার নিয়ে আসে। এই সার্ভিসটি বর্তমানে শুধুমাত্র ইমার্জেন্সিতে বেসিক টেক্সট মেসেজ আদানপ্রদান এর কাজে ব্যবহার করা যায়।
ব্রিটিশ স্মার্টফোন ম্যানুফ্যাকচারার বুলিট প্রথম তাদের নিজস্ব স্যাটেলাইট সার্ভিস নিয়ে আসে, যার মানে হলো এইদিক দিয়ে অ্যাপলের চেয়েও এগিয়ে ছিলো এই কোম্পানি। এটিও ইমার্জেন্সি ব্যবহারের জন্য তৈরী করা হয় ও শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু এরিয়াতে ব্যবহার করা যাবে। কোয়ালকম ও ইরিডিয়াম এর এই পার্টনারশিপ এর মাধ্যমে একই সেবার অ্যাকসেস পেয়ে যাবেন অগণিত স্মার্টফোন ব্যবহারকারী। যেহেতু কোয়ালকম এর চিপ অনেক ফোনেই ব্যবহৃত হয়, তাই অবশ্যই একাধিক ব্র্যান্ড এর ফোনে স্যাটেলাইট কানেকটিভিটি ফিচারটি পৌঁছে যাবে।
ইরিডিয়াম হলো অরিজিনাল স্যাটেলাইট ফোন সিস্টেম যা নিজেদের প্রথম স্যাটেলাইট ১৯৯৭সালে অরবিটে পাঠায়। নিজেদের ৭৫টি স্পেসক্রাফট এর নেটওয়ার্ক ২০১৯সালে এসে রিফ্রেশ করে কোম্পানিটি। এই স্যাটেলাইটগুলো সম্পূর্ণ পৃথিবী কভার করে ও পৃথিবীর ৪৮৫মাইল উপরে লো অরবিটে উড়ে। এর ফলে স্যাটেলাইটগুলো এক অন্যের সাথে যোগাযোগ করে ডাটা আদান-প্রদান করতে পারে।
স্ন্যাপড্রাগন স্যাটেলাইট নামের এই নতুন ফিচার শুধুমাত্র এর প্রিমিয়াম চিপ সেগমেন্টে আসতে যাচ্ছে বলে জানিয়ে দিয়েছে কোয়ালকম। যার মানে হলো কোয়ালকম এর বাজেট ডিভাইসগুলোতে এই ফিচার আপাতত আসছেনা। তবে ধীরে ধীরে ট্যাবলেট, ল্যাপটপ ও অনেক যানবাহনের জন্য এই ফিচার আসবে। এছাড়া এই ফিচার শুধুমাত্র ইমার্জেন্সি যোগাযোগে সীমাবদ্ধ থাকবেনা। তবে বিস্তৃত ব্যবহারে এই ফিচারের জন্য ফি প্রযোজ্য হবে।
স্যাটেলাইট কানেকটিভিটিকে বর্তমানে মোবাইল ফোন এর মাধ্যমে যোগাযোগ এর ক্ষেত্রে পরবর্তী বিপ্লব এর আওতায় ধরা হয়। যেহেতু স্যাটেলাইট এর ক্ষেত্রে কানেক্টিভিটি নির্দিষ্ট এরিয়ার উপর নির্ভর করেনা, তাই এর মাধ্যমে যেকোনো ধরনের গ্রাম বা রিমোট এলাকায় যেখানে কভারেজ নাই সেখানে নেটওয়ার্ক প্রদান করা যাবে জরুরি মুহুর্তে।
এই প্রযুক্তি ইতিমধ্যে ইলন মাস্ক এর স্টারলিংক ব্যবহার করে যার মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড কাভারেজ প্রদান করা হয়। স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড বেশ দ্রুত ও কাজেও অনেকটা নির্ভরযোগ্য। তবে ক্যাবল বা ফাইবার কানেকশনের চেয়ে অনেক বেশি ব্যয়বহুল এই প্রযুক্তি।
তবে স্যাটেলাইট কানেকটিভিটি ব্যবহার করে জরুরি যোগাযোগ নির্ভর করবে সম্পূর্ণভাবে স্থানীয় সরকার নিয়মের উপর। চীন ও ভারতের মত অনেক দেশ ইতিমধ্যে স্যাটেলাইট ফোন এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করে রেখেছে।
0 responses on "এন্ড্রয়েড ফোনেও আসছে স্যাটেলাইট সংযোগ সুবিধা"