বর্তমানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং আমাদের দৈনন্দিন যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রধান উপায় হয়ে উঠেছে। বিনামূল্যে ও দ্রুত পরিচিত মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় এর দ্বারা। আর এই সেবা দিতেই অনেক মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম জনপ্রিয়তা পেয়েছে ব্যবহারকারীদের কাছে। ফেসবুকের মেসেঞ্জার অথবা হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, ভাইবার ইত্যাদি অনেক মেসেজিং অ্যাপ বিভিন্ন ফিচার নিয়ে এই সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
হোয়াটসঅ্যাপের মতোই ইমো ও একটি মেসেজিং অ্যাপ যার মাধ্যমে মেসেজিং ছাড়াও অডিও ও ভিডিও কল করা যায়। ইমো সব প্লাটফর্মেই ব্যবহার করা যায়। আমাদের দেশে ইমো খুব জনপ্রিয় কেননা এতে খুব সহজেই সাইন আপ করা যায় এবং ব্যবহার করাও বেশ সহজ। এছাড়া ইমো স্বল্প গতির নেটেও কাজ করে।
তবে ইমোতে হোয়াটসঅ্যাপ হতে বেশ কিছু সিকিউরিটি ফিচার কম থাকায় এটা কম নিরাপদ। হোয়াটসঅ্যাপে আপনি একটির বেশি মোবাইল ডিভাইসে লগইন করতে পারবেন না, কিন্তু ইমো এক্ষেত্রে আলাদা। এটা আপনি অনেকগুলো ডিভাইসে চাইলে একসাথেই ব্যবহার করতে পারবেন। এই ফিচার ব্যবহারকারীদের জন্য সুবিধাজনক হলেও এতে করে অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। প্রতি বছর হাজার হাজার ইমো ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট হ্যাক হবার মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। তাই ইমো ব্যবহারে সতর্ক থাকা জরুরি।
তবে কিছু সহজ পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনি বুঝে নিতে পারবেন আপনার ইমো অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে কিনা। নিয়মিত এই পদ্ধতি ব্যবহার করে নজর রাখতে পারেন আপনার ইমো অ্যাকাউন্টে।
৭টি ধাপে বুঝে নিন আপনার imo অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে কিনা
- প্রথমে ইমো অ্যাপটি ওপেন করুন। ইনস্টল না করা থাকলে imo অ্যাপ ইনস্টল করে ওপেন করে নিন।
- অ্যাপ ওপেন হলে আপনার সকল চ্যাট লিস্টগুলো দেখতে পাবেন। বামপাশে উপরের কোণায় আপনার প্রোফাইল পিকচারে ট্যাপ করুন।
- এবার আপনার সেটিংস অপশনটি দেখতে পাবেন নতুন পেজে। সেটিংস অপশন হতে আপনার অ্যাকাউন্টের বিভিন্ন অপশন পরিবর্তন করতে পারবেন। সেটিংস অপশনটি সিলেক্ট করুন।
- এবার আপনার সামনে অনেকগুলো অপশন চলে আসবে। সেখান থেকে ‘Account & Security’ অপশনটি সিলেক্ট করুন। এই অপশন আপনাকে আপনার অ্যাকাউন্ট ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় পরিবর্তন করার সুযোগ দেবে।
- আবারও নতুন কিছু অপশন চলে আসবে আপনার সামনে। এখন এই অপশনগুলো হতে ‘Manage Devices’ খুঁজে বের করুন এবং ট্যাপ করুন।
- এবার আপনার সামনে একটি লিস্ট চলে আসবে যেসব ডিভাইসে আপনার ইমো আইডিটি লগইন করা আছে সেগুলোর। আপনি যে ডিভাইস হতে ইমো এখন ব্যবহার করছেন সেটির পাশে ‘Current’ লেখাটি দেখাবে। এছাড়াও বাকি কোনো ডিভাইসে যদি লগইন থাকেন সেগুলো তার নিচে দেখাবে। এখানে কয়েকটি তথ্য আপনি দেখতে পাবেন। প্রথমেই মোটা অক্ষরে আপনার ডিভাইস মডেল লেখা থাকবে যাতে আপনি সহজেই ডিভাইস চিনে নিতে পারেন।
- এরপর তার ঠিক নিচে ডিভাইসটি অনলাইন আছে কিনা বা শেষ কখন ব্যবহৃত হয়েছে সেটার সময় দেখাবে। তার নিচে ডিভাইসের লোকেশন এবং ইমো ভার্সন তথ্য দেখাবে। এখান থেকেই আপনি বুঝে নিতে পারবেন আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে কিনা। এই লিস্টে যদি এমন কোনো ডিভাইস থাকে যেটি আপনার নয় বা আপনি লগইন করেননি তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনার অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়েছে এবং অন্য কেউ ব্যবহার করছে।
- এবার আপনি যদি এর থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে সেই অপরিচিত ডিভাইসের উপর ট্যাপ করলে নতুন একটি পেজ পাবেন যেখানে আপনি ডিভাইসটি ডিলিট করে দেবার অপশন পাবেন। হ্যাকারের সেই ডিভাইসটি আপনার ইমো একাউন্ট থেকে ডিলিট করে দিন।
উপরের ধাপগুলো ব্যবহার করে আপনি যেকোন ডিভাইস থেকে চেক করে নিতে পারবেন আপনার ইমো অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে কিনা। তবে সত্যিই যদি হ্যাক হয়ে থাকে তবে এভাবে ডিভাইস ডিলিট করে দিয়ে হ্যাক হতে বাঁচতে পারবেন। তবে ডিলিট করে দিলেই ঝুঁকি শেষ নয়। আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে থাকলে কীভাবে হ্যাক হলো তার কারণ খুঁজে বের করে ইমোর ব্যবহারে আরো বেশি সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
0 responses on "ইমো একাউন্ট হ্যাক হয়েছে কিনা বোঝার উপায়"