• No products in the cart.

অপারেটিং সিস্টেম কি? অপারেটিং সিস্টেম কিভাবে কাজ করে?

আপনি যদি একটি ফোন, কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ব্যবহার করেন, তাহলে আপনি অবশ্যই অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস এবং উইন্ডোজের নাম শুনেছেন । এগুলো মূলত কিছু জনপ্রিয় এবং বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেম । যা স্মার্টফোন থেকে শুরু করে কম্পিউটার এবং এটিএম মেশিন থেকে রোবট পর্যন্ত, সবকিছুতেই ব্যবহৃত হচ্ছে । কিন্তু আপনি কি জানেন অপারেটিং সিস্টেম কি ? এবং অপারেটিং সিস্টেম কিভাবে কাজ করে? আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব ।

অপারেটিং সিস্টেম

একটি কম্পিউটার শুধুমাত্র বাইনারি ভাষা (০, ১) বোঝে । আর এই বাইনারী কোডের মাধ্যমেই সব ধরনের কমিউনিকেশন করে থাকে । কিন্তু আমরা যখন আমাদের কম্পিউটারে কোন ধরনের কমান্ড দেই তখন তা বাংলা, ইংরেজি বা অন্য কোনো ভাষায় দিয়ে থাকি । কিন্তু তারপরেও কম্পিউটার সেই কমান্ড বোঝে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে । এমতাবস্থায় আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, কম্পিউটার যেহেতু শুধুমাত্র বাইনারী ভাষা বোঝে, তাহলে কম্পিউটার কীভাবে আমাদের দেওয়া বাংলা বা ইংরেজী কমান্ড বোঝে ? মূলত এটি করার জন্য একটি কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম প্রয়োজন হয় ।

অপারেটিং সিস্টেম কি – অপারেটিং সিস্টেম কাকে বলে

অপারেটিং সিস্টেম হল একটি সিস্টেম সফটওয়্যার , যা সংক্ষেপে OS নামেও পরিচিত । এটি আসলে প্রোগ্রামের একটি সেট যাতে কম্পিউটারের জন্য বিভিন্ন ধরনের নির্দেশাবলী বা কমান্ড স্টোর করা থাকে । আপনি যখন কম্পিউটারকে কোন কমান্ড দেবেন, তখন এটি সেই নির্দেশাবলীর সাহায্যে আপনার কাঙ্খিত কাজটি সম্পন্ন করবে । অপারেটিং সিস্টেম বা OS হল কম্পিউটারের মেইন সফটওয়্যার, যা কম্পিউটারে থাকা সফটওয়্যার (যেমন – VLC Player, Photoshop, MS Office ইত্যাদি সফটওয়্যার) এবং প্রোগ্রাম চালায় ।

আরও সহজ ভাবে বলতে গেলে, অপারেটিং সিস্টেম হল এমন একটি প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার যার কাজ হলো ইউজারের নির্দেশ অনুযায়ী কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা এবং কম্পিউটারের বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামের ইনপুট, আউটপুট, স্টোরেজ এবং প্রসেসিং এর জন্য কাজ করা ।

সাধারণত অপারেটিং সিস্টেম কীবোর্ড , মাউস, মাইক্রোফোন ইত্যাদি থেকে ইনপুট গ্রহন করে এবং আউটপুট প্রদর্শন করার জন্য হার্ডওয়্যারের সাথে সেই কমান্ডকে সমন্বয় করে । অর্থাৎ অপারেটিং সিস্টেম, কম্পিউটার ব্যবহারকারী এবং কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে এবং তাদের মধ্যে কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ করতে সাহায্য করে ।

এছাড়াও, অপারেটিং সিস্টেম GUI অর্থাৎ গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস প্রদান করে । এটি কম্পিউটার ব্যবহার করা অনেক বেশী সহজ করে তোলে । কারণ গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেসের ক্ষেত্রে সব অপশন মেনু, আইকন, বার এবং বাটন হিসেবে দেখা যায় । যার কারণে ইউজারের পক্ষে কম্পিউটারকে কমান্ড দেওয়া খুবই সহজ হয়ে যায় । কারণ নতুন নতুন কমান্ড দেওয়ার জন্য বারবার কোড লেখার প্রয়োজন হয় না ।

অপারেটিং সিস্টেম এর উদাহরণ 

কিছু জনপ্রিয় operating system এর উদাহরণ নিচে দেওয়া হল –

            • Microsoft windows (Xp, Win7, Win10 ইত্যাদি)

            • Linux

            • Mac OS

            • IOS

            • Android ইত্যাদি।

OS কিভাবে কাজ করে – অপারেটিং সিস্টেম কিভাবে কাজ করে

এখন প্রশ্ন হল, অপারেটিং সিস্টেম কিভাবে কাজ করে? চলুন উদাহরণের মাধ্যমে আমরা বোঝার চেষ্টা করি অপারেটিং সিস্টেম কিভাবে কাজ করে ?

ধরুন আপনি কোন ব্রাউজার ওপেন করার জন্য আপনার কম্পিউটারে থাকা ব্রাউজার আইকনে ক্লিক করে আপনার কম্পিউটারকে কমান্ড দিলেন । আপনার কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম তখন কম্পিউটারের কার্ণেল কে সেই ব্রাউজার ওপেন করার কমান্ড পৌছে দেয় । কার্ণেল আবার সেই কমান্ড পৌছে দেয় র‍্যাম আর হার্ডডিস্কের কাছে । হার্ডডিস্ক তখন এই ব্রাউজারের লোকেশন খুঁজে বের করে সেটা ওপেন করার জন্য কার্ণেল কে নির্দেশ দেয় । কার্ণেল সেই কমান্ড আবার পৌছে দেয় অপারেটিং সিস্টেমের কাছে, এরপর আপনি আপনার কম্পিউটারের ডিসপ্লেতে আপনার কাঙ্খিত ব্রাউজার টি ওপেন অবস্থায় দেখতে পাবেন ।

আবার মনে করুন আপনি আপনার পিসিতে একটি মুভি দেখতে চান এবং এটি করার জন্য আপনি সেই মুভির আইকনের উপর ডাবল ক্লিক করলেন । ডাবল ক্লিক করার সাথে সাথে অপারেটিং সিস্টেম মাউসের মাধ্যমে ইনপুট কমান্ড গ্রহন করবে এবং দ্রুত হার্ডওয়্যারের সাথে সংযোগ স্থাপন করবে । অর্থাৎ, আপনার কমান্ড অনুযায়ী মুভিটি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছু সরবরাহ করবে । যেমন মিডিয়া প্লেয়ার, স্পিকার, ভলিউম কন্ট্রোল ইত্যাদি । এইভাবে আপনার কম্পিউটারের স্ক্রিনে আপনার প্রিয় মুভিটি প্রদর্শিত হবে এবং আপনি সেটি দেখতে সক্ষম হবেন । সামগ্রিকভাবে, অপারেটিং সিস্টেম, কম্পিউটারের সফ্টওয়্যার এবং হার্ডওয়্যারের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে কম্পিউটারের সমস্ত কাজ সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সহায়তা করে ।

সমস্ত প্রসেস গুলো অনেক বেশী জটিল এবং লম্বা সময়ের মনে হলেও এগুলো সম্পন্ন হতে সময় লাগে মাত্র কয়েক সেকেন্ড ।
আসলে অপারেটিং সিস্টেম বা OS হলো আপনার কম্পিউটারের ম্যানেজারের মতন ।কম্পিউটারের যাবতীয় কাজ দেখাশোনা করা, সঠিক ভাবে, সঠিক নিয়মে সেই কাজগুলো পরিচালিত হচ্ছে কিনা এসব নিশ্চিত করাই অপারেটিং সিস্টেমের প্রধান কাজ ।

অপারেটিং সিস্টেমের প্রকারভেদ – অপারেটিং সিস্টেম কত প্রকার

বর্তমানে অনেক ধরনের অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে । অপারেটিং সিস্টেমের ধরন নির্ভর করে এর ব্যবহার, টাস্কিং এবং ডেটা প্রক্রিয়াকরণের উপর । আসুন জেনে নিই অপারেটিং সিস্টেমের প্রকারভেদ সম্পর্কে –

ব্যাচ প্রসেসিং অপারেটিং সিস্টেম (BPOS)

যেখানে কম সময়ে অনেক বেশি ডেটা প্রসেস করতে হয় সেখানে এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয় । এই অপারেটিং সিস্টেমে ব্যাচ আকারে ডেটা প্রক্রিয়া করা হয় । এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেমের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো, এতে ইউজার এবং কম্পিউটারের মধ্যে সরাসরি কোন যোগাযোগ থাকে না । অর্থাৎ BPOS ইউজার, তার কম্পিউটারের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে না । বরং এটি অফলাইনে তার কাজ সম্পন্ন করে এবং পরে কম্পিউটার অপারেটর বা ইউজারের কাছে পাঠায় । এর পরে কম্পিউটার অপারেটর সেই ডেটার ব্যাচ তৈরি করে এবং সেগুলোকে কার্যকর করে । এই ধরণের অপারেটিং সিস্টেম বর্তমানে আর ব্যবহার করা হয় না । পূর্বে মেইনফ্রেম কম্পিউটারে এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হতো ।

টাইম শেয়ারিং অপারেটিং সিস্টেম

এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেমের সাহায্যে একাধিক ইউজার একসঙ্গে একাধিক কাজ করতে পারবেন । এজন্য একে মাল্টিটাস্কিং অপারেটিং সিস্টেমও বলা হয়ে থাকে । এতে সমস্ত ইউজার একসাথে একই সিস্টেম ইউজ করে । কিন্তু এখানে প্রতিটি কাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বেধে দেওয়া হয় । সহজ ভাষায়, CPU টাইম ইউজারদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয় । এবং প্রতিটি কাজের জন্য সমান সময় দেওয়া হয়, যাকে বলা হয় টাইম কোয়ান্টাম । একটি কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর, অন্য কাজটি কার্যকর করা হয় । এবং তার পর তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম এভাবে বাকি কাজ একের পর এক পর্যায়ক্রমে সম্পাদিত হয় ।

ডিস্ট্রিবিউটেড অপারেটিং সিস্টেম

একটি ডিস্ট্রিবিউটেড অপারেটিং সিস্টেমে অনেকগুলি সিস্টেম রয়েছে, যা নেটওয়ার্ক হিসেবে কাজ করে । এতে সম্পূর্ণ সিস্টেমটি একটি শেয়ার্ড কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আন্তঃসংযুক্ত অবস্থায় থাকে এবং একসাথে কাজ করে । এছাড়াও প্রতিটি সিস্টেমের নিজস্ব CPU, প্রাইমারী মেমরি, সেকেন্ডারি মেমরি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস থাকে । এর ফলে প্রতিটি সিস্টেম পৃথকভাবে কাজ করতে সক্ষম ।

মাল্টিপ্রসেসিং অপারেটিং সিস্টেম

এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেমে একাধিক প্রসেসর একসাথে একই কাজ সম্পন্ন করে । এজন্য একে মাল্টিপ্রসেসর অপারেটিং সিস্টেম বলা হয়ে থাকে । যদিও এটি নরমাল ব্যবহারকারীদের জন্য নয় । কারণ সাধারণ ইউজারদের এত কম্পিউটিং শক্তির প্রয়োজন হয় না । মাল্টিপ্রসেসিং অপারেটিং সিস্টেম সাধারণত সুপার কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয় । কারণ এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেমের কম্পিউটিং ক্ষমতা এবং গতি অকল্পনীয় । এছাড়াও এর কাজ করার সিস্টেম সম্পূর্ণ ভিন্ন । এটি একটি কাজকে কয়েকটি সাব-টাস্কে ভাগ করে এবং তারপর প্রতিটি সাব-টাস্ক আলাদা সিপিইউ এর মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয় । যে কারণে খুব দ্রুততম সময়ে কাজটি কমপ্লিট হয় ।

নেটওয়ার্ক অপারেটিং সিস্টেম

এটি একটি সার্ভার ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম । যেখানে অনেকগুলো কম্পিউটার একসাথে একটি নেটওয়ার্ক হিসেবে কাজ করে ।অর্থাৎ সবগুলো কম্পিউটার একটি প্রাইভেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে একে অপরের সাথে কানেক্টেড অবস্থায় থাকে এবং একই সার্ভারে কাজ করে । তাই সব কম্পিউটার সার্ভারে উপস্থিত যে কোন ডেটা অ্যাক্সেস করতে পারে । এটি করার জন্য শুধু লগইন আইডি এবং পাসওয়ার্ডের প্রয়োজন হয় । আপনি যদি কখনও ব্যাংকে গিয়ে থাকেন, তাহলে আপনি হয়ত দেখে থাকবেন যে, সেখানে অনেক কম্পিউটার রয়েছে । এবং সমস্ত কম্পিউটার একটি সার্ভারের সাথে সংযুক্ত । যার ফলে আপনি যখন আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কোনো কাজ করতে যান, তখন সেখানে ম্যানেজার থেকে ক্যাশিয়ার সবাই তার নিজের ডেস্কে বসেই আপনার অ্যাকাউন্ট অ্যাক্সেস করতে পারে ।

রিয়েল টাইম অপারেটিং সিস্টেম (RTOS)

রিয়েল টাইম ওএস হল একটি উন্নত ধরনের অপারেটিং সিস্টেম । যা রিয়েল টাইমে ডেটা প্রসেস করে থাকে । এর সাহায্যে হাই কোয়ালিটির এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ খুব অল্প সময়ে করা যায় । বিশেষ করে যখন কাজ খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং হাতে সময় খুব কম ।উদাহরণস্বরূপ, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সময় বা গাইডেড মিসাইল পরিচালনা করার সময় এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেম বেশি প্রয়োজন হয় । রিয়েল টাইম ওএস সাধারণত দুই ধরনের হয় । একটি হার্ড রিয়েল টাইম ওএস এবং অন্যটি হল সফট রিয়েল টাইম অপারেটিং সিস্টেম । এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য হল, হার্ড রিয়েল টাইম ওএস সময়নিষ্ঠ । অর্থাৎ প্রতিটি কাজ নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন করে । কিন্তু সফট রিয়েল টাইম ওএস এত সময়নিষ্ঠ নয় ।

এমবেডেড অপারেটিং সিস্টেম

এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেমটি নন-কম্পিউটার ডিভাইসের জন্য ডিজাইন বা তৈরি করা হয়েছে । অর্থাৎ কম্পিউটার নয় এমন ডিভাইসের জন্য যেমন লিফট, পেট্রোল পাম্প, পিওএস মেশিন, এটিএম মেশিন, ফোন, স্মার্টওয়াচ ইত্যাদি । এই সমস্ত ডিভাইসে এমবেডেড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয় । এমবেডেড অপারেটিং ডিভাইসের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয় । অর্থাৎ যে যন্ত্রটির জন্য এটি তৈরি করা হয়, এটি কেবল সেই যন্ত্রেই কাজ করে ।

অপারেটিং সিস্টেমের কার্যাবলী

এখন প্রশ্ন হল অপারেটিং সিস্টেম এর প্রধান কাজ কি?  অপারেটিং সিস্টেম মূলত অনেক কিছু করে । এমনকি এটি পুরো কম্পিউটার সিস্টেম চালায় । কিন্তু তারপরেও এটির কিছু প্রধান ফাংশন রয়েছে, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এখানে অপারেটিং সিস্টেমের প্রধান কাজগুলি সম্পর্কে আপনাদের সাথে আলোচনা করব –

মেমরি ম্যানেজমেন্ট

কম্পিউটারে সাধারণত দুই ধরনের মেমরি থাকে । এর মধ্যে একটি হল প্রাইমারী মেমরি এবং অন্যটি সেকেন্ডারি মেমরি । প্রাথমিক মেমরির মধ্যে রয়েছে RAM (Random Access Memory) এবং ROM (Read Only Memory) এবং সেকেন্ডারী মেমোরির মধ্যে রয়েছে হার্ডডিস্ক, সিডি, ডিভিডিসহ অন্যান্য জিনিস । আপনি যখন আপনার কম্পিউটারে কোনো সফটওয়্যার (যেমন ফটোশপ, এমএস অফিস ইত্যাদি) ওপেন করবেন তখন তার মেমোরির প্রয়োজন হয় । কিন্তু আপনি যখন একাধিক প্রোগ্রাম একসাথে ইউজ করবেন, তখন প্রতিটি প্রোগ্রামের জন্য আলাদা আলাদা মেমরির প্রয়োজন হবে । এমতাবস্থায় কোন প্রোগ্রামের জন্য কত র‍্যাম এবং কত রম বরাদ্দ করতে হবে তা অপারেটিং সিস্টেম নিজেই সিদ্ধান্ত নেয় । সেই সাথে, নতুন ওপেন হওয়া প্রোগ্রামগুলির জন্য মেমরি বরাদ্দ করা এবং ক্লোজ করা প্রোগ্রামগুলি থেকে মেমরি ফিরিয়ে নেওয়াও অপারেটিং সিস্টেমের কাজ  সহজ ভাষায় বললে, অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারে চলমান সমস্ত প্রোগ্রামে মেমরি সার্ভ করে এবং তার হিসাব রাখে । অর্থাৎ প্রতিটি প্রোগ্রাম ট্র্যাক করে এবং খুঁজে বের করে কোন প্রোগ্রাম কোথায় কি করছে এবং এটি কতটা মেমরি ইউজ করছে ।

CPU ব্যবস্থাপনা

একটি কম্পিউটার রানিং থাকা অবস্থায় প্রতিটি প্রোগ্রামের জন্য CPU (প্রসেসর) প্রয়োজন । আর এটি সম্পূর্ণরূপে অপারেটিং সিস্টেমের উপর নির্ভরশীল । কারণ সিপিইউ ব্যবস্থাপনার কাজটিও অপারেটিং সিস্টেম করে থাকে । প্রসেসরকে কোন প্রক্রিয়া বা টাস্ক দিতে হবে এবং তা কতক্ষনের জন্য তা অপারেটিং সিস্টেম নিজেই ডিসাইড করে থাকে । কোন নির্দিষ্ট একটি কাজের জন্য প্রসেসর বরাদ্দ করাকে প্রসেসর শিডিউলিং বলে । এছাড়াও, অপারেটিং সিস্টেম, সিপিইউ -এর প্রত্যেকটি কার্যকলাপ ট্র্যাক করে এবং তার রেকর্ড সংরক্ষন করে । অর্থাৎ সিপিইউ কোথায় এবং কোন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে? কোন কাজগুলি সম্পাদন করছে? কোন কাজগুলো চলমান রয়েছে ? ইত্যাদি সকল বিষয় অপারেটিং সিস্টেম ম্যানেজ করে থাকে ।

ফাইল ম্যানেজমেন্ট

একটি কম্পিউটারে অসংখ্য ফাইল থাকে । এই কারণেই কোন নির্দিষ্ট ফাইল খুঁজে পাওয়া অনেক বেশী কঠিন কাজ । কিন্তু অপারেটিং সিস্টেম এই কঠিন কাজটিকে অনেক বেশী সহজ করে তোলে । অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারে থাকা ফাইলগুলোকে বিভিন্ন ফোল্ডার এবং ডিরেক্টরির আকারে সাজিয়ে রাখে এবং সেই সাথে প্রতিটি ফাইলের রেকর্ড রাখে । যেমন নাম, আকার, অবস্থান ইত্যাদি।

ডিভাইস ব্যবস্থাপনা

সাধারণত একটি কম্পিউটারকে অনেক ধরনের ডিভাইসের সাথে কাজ করতে হয় । যেমন কীবোর্ড, মাউস, প্রিন্টার, স্পিকার, ওয়েবক্যাম, স্টোরেজ ডিভাইস, ওয়্যারলেস ডিভাইস, মনিটর ইত্যাদি । কিন্তু এই সমস্ত ডিভাইসের কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ রাখার জন্য একটি সমন্বয়কারী প্রয়োজন । কারণ সমন্বয়কারী ছাড়া কোনো ডিভাইসই সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না । আর এই সমন্বয়ের কাজটি করে থাকে অপারেটিং সিস্টেম । কারণ অপারেটিং সিস্টেম প্রতিটি ডিভাইসকে কম্পিউটারের সাথে কমিউনিকেট করতে সাহায্য করে এবং এই সংযোগ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছু সরবরাহ করে । এছাড়াও কম্পিউটারের সাথে কানেক্টেড সমস্ত ডিভাইস পরিচালনা করে । আপনার কম্পিউটারে যদি OS না থাকে, তাহলে এতে কোনো ডিভাইস সাপোর্ট করবে না ।

মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করে

অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটার এবং ইউজারের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করে । অর্থাৎ ব্যবহারকারীর কাছে কম্পিউটারকে ব্যাখ্যা করে এবং কম্পিউটারের কাছে ব্যবহারকারী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয় । এই ভাবে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে উভয়ের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে ।

কর্মক্ষমতা উন্নত করে

অপারেটিং সিস্টেম ক্রমাগত কম্পিউটারের কর্মক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করে এবং তা উন্নত করার চেষ্টা করে । এর জন্য, অপারেটিং সিস্টেম প্রতিটি সার্ভিসের রিকোয়েস্ট এবং এর প্রতিক্রিয়া রেকর্ড করে এবং সেই সাথে সিস্টেমের হেলথ পর্যবেক্ষণ করে ।যদি সিস্টেমের রেসপনস টাইম ধীর হয় বা সিস্টেমে কোনো ত্রুটি পাওয়া যায়, তাহলে ওএস তাৎক্ষণিকভাবে এটি সম্পর্কে ইউজারকে অবহিত করে ।

সিস্টেম সুরক্ষিত রাখতে

প্রত্যেক ইউজার তার কম্পিউটারে ব্যক্তিগত অনেক ধরনের তথ্য সংরক্ষণ করে রাখে । আর কেউ চায় না তার কম্পিউটার থেকে তার পার্সোনাল ডাটা চুরি হোক অথবা তার কম্পিউটার হ্যাক হয়ে যায় । কারণ ডাটার গুরুত্ব সবাই বোঝে । তাই প্রত্যেক ব্যবহারকারী তার ডেটা সিকিউর রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে । আর এই ক্ষেত্রে অপারেটিং সিস্টেম আপনাকে সহায়তা করে থাকে । অর্থাৎ আপনার সিস্টেমকে সুরক্ষিত রাখতে এটি অনেক ধরনের নিরাপত্তা ফিচার প্রদান করে । উদাহরণস্বরূপ পাসওয়ার্ড এবং ফায়ারওয়াল ইত্যাদি । এগুলোর সাহায্যে, আপনি অননুমোদিত ইউজারদের আপনার কম্পিউটারে প্রবেশ করা থেকে আটকে রাখতে পারবেন ।

কাজের রেকর্ড রাখে

অপারেটিং সিস্টেম প্রতিটি ইউজার এবং সেই ইউজারদের প্রতিটি কাজের রেকর্ড রাখে । উদাহরণস্বরূপ, কোন ব্যবহারকারী কখন লগ ইন করেছেন? কখন, কোন কাজটি কমপ্লিট করেছেন? কোন প্রোগ্রাম ব্যবহার করেছেন? এবং কোন প্রোগ্রাম আপনি কতক্ষণ ইউজ করেছেন? একইভাবে, প্রতিটি ব্যবহারকারীর প্রতিটি কার্যকলাপের বিবরণ সংগ্রহ করে এবং এই সমস্ত তথ্য ব্যবহারকারীদের ট্র্যাক করতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।

ত্রুটি সনাক্তকরণ

আপনার কম্পিউটারে কোনো ধরনের সমস্যা হলে অপারেটিং সিস্টেম আপনাকে সেই সমস্যা সম্পর্কে বলে । এবং সেই সাথে, এটি সেই সমস্যা ঠিক বা সমাধান করার অপশন বা উপায় সম্পর্কেও বলে ।  আপনি প্রতিটি অপারেটিং সিস্টেমেই এটি দেখতে পাবেন।

গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস

কম্পিউটার সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান নিতে হলে আপনাকে অবশ্যই CLI (কমান্ড লাইন ইন্টারফেস) এবং GUI (গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস) সম্পর্কে জানতে হবে । এগুলো আসলে দুটি ভিন্ন ধরনের ইউজার ইন্টারফেস । যেগুলো কম্পিউটার চালাতে ব্যবহৃত হয় । পুরানো অপারেটিং সিস্টেমগুলি কমান্ড-লাইন ইন্টারফেসের মাধ্যমে চালাতে হত । যে কারণে তখন কম্পিউটার ব্যবহার করা খুব কঠিন ছিল । কারণ প্রতিটি কমান্ড দেওয়ার জন্য আলাদা আলাদা কোড লিখতে হতো ।

কিন্তু বর্তমানে প্রায় সব অপারেটিং সিস্টেমেই গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস থাকে । যেখানে মেনু, বার, আইকন এবং বাটন ব্যবহার করা হয় । তাই কম্পিউটারকে কোন কমান্ড দিতে হলে শুধুমাত্র মাউস দিয়ে ক্লিক করলেই হবে । অর্থাৎ, কমান্ড দেওয়ার জন্য আপনাকে আলাদা কোড লিখতে হবে না । যদিও লিনাক্স ওএস এর ক্ষেত্রে এখনও কমান্ড প্রম্পট ইউজ করা হয়। যা টার্মিনাল , শেল এবং কনসোল নামে পরিচিত । তবে বর্তমানে এটি GUI এর সাথেও আসে ।

অপারেটিং সিস্টেমের মেইন উদ্দেশ্য হল কম্পিউটারের ব্যবহার সহজ করা । আর এর জন্য গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেসই সবচেয়ে ভাল অপশন । কারণ এর সাহায্যে যেকোনো মানুষ খুব সহজেই কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে । এর জন্য কোন কমান্ড কোড লেখার প্রয়োজন হয় না ।

অপারেটিং সিস্টেমের বৈশিষ্ট্য

এখন প্রশ্ন হলো, একটি অপারেটিং সিস্টেমের বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী? বা অপারেটিং সিস্টেমের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী? তাহলে অপারেটিং সিস্টেমের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক –

  • অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীকে একটি গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস (GUI) প্রদান করে, যা কম্পিউটারের ব্যবহারকে অনেক বেশী সহজ করে তোলে ( ইজি টু ইউজ )।
  • অপারেটিং সিস্টেম বিভিন্ন হার্ডওয়্যার উপাদানের মধ্যে সমন্বয় করে । এবং প্রতিটি হার্ডওয়্যার ডিভাইসের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে । এর জন্য এটি একটি বিশেষ অনুবাদক সফ্টওয়্যার ইউজ করে, যেগুলো ডিভাইস ড্রাইভার নামেও পরিচিত ।
  • অপারেটিং সিস্টেম বিভিন্ন সফটওয়্যার চালানোর পরিবেশ প্রদান বা তৈরি করে ।
  • অপারেটিং সিস্টেম প্রাইমারী মেমরি, সেকেন্ডারি মেমরি এবং সিপিইউ পরিচালনা করে । এবং বিভিন্ন প্রোগ্রাম এবং টাস্কে মেমরি এবং সিপিইউতে পাওয়ার সাপ্লাই করে ।
  • এটি কম্পিউটারে উপস্থিত থাকা সমস্ত ফাইল পরিচালনা করে এবং তাদের ডিরেক্টরি হিসাবে সংগঠিত রাখে । এছাড়াও আপনাকে ফাইল এবং ফোল্ডারগুলি কপি, ডিলেট, পুনঃনামকরণ এবং মুছে ফেলার মত কাজগুলো করতে সাহায্য করে ।
  • এটি সিস্টেমের হেলথ পর্যবেক্ষণ করে এবং সেই সাথে কর্মক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে ।
  • এটি হার্ডওয়্যার এবং সফ্টওয়্যার উভয়ই পরিচালনা করে এবং এগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করে এটি কম্পিউটার এবং অন্যান্য প্রোগ্রাম সঠিকভাবে চালাতে সাহায্য করে।
  • এটি পাসওয়ার্ড, ফায়ারওয়াল এবং অন্যান্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সিস্টেমকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে । এবং সিস্টেমের ত্রুটি এবং ম্যালওয়ার সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দেয় । সেই সাথে ত্রুটি সংশোধন করতেও সাহায্য করে ।
  • এটি ইউজার এবং কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে । এবং যোগাযোগ করতে সাহায্য করে ।
  • এটি একটি কম্পিউটারের সমস্ত ইউজার এবং তাদের দ্বারা সম্পাদিত কাজগুলির একটি রেকর্ড রাখে । এবং প্রতিটি ব্যবহারকারীর প্রতিটি কার্যকলাপের তারিখ এবং সময় অনুযায়ী বিবরন রাখে ।

সেরা অপারেটিং সিস্টেম

বিশ্বের শীর্ষ এবং জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম গুলোর মধ্যে Android, iOS এবং Windows এর নাম আপনারা শুনেছেন । কিন্তু এগুলো ছাড়াও আরও অনেক অপারেটিং সিস্টেম আছে, যেগুলো সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না । তাহলে চলুন জেনে নেই পিসির এবং মোবাইলের জন্য টপ অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে ।

উইন্ডোজ – উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম হল বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সর্বাধিক ব্যবহৃত PC OS । উইন্ডোজের অনেকগুলো সংস্করণ এ পর্যন্ত বাজারে এসেছে । তবে উইন্ডোজ এক্সপি, উইন্ডোজ 7, ​​8 এবং 10 এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয় সংস্করণ । উইন্ডোজ 11 হল এর সর্বশেষ সংস্করণ । যদিও উইন্ডোজের মোবাইল ভার্সনও চালু হয়েছিল কিন্তু তা বেশি দিন টেকেনি ।Nokia Lumia সিরিজের ফোনে এই অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছিল । উইন্ডোজ হল মাইক্রোসফট কোম্পানির সবচেয়ে সফল পণ্য । যার কারণে মাইক্রোসফটের আলাদা পরিচয় তৈরি হয়েছে ।

MacOS – কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে MacOS একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে রেখেছে । এটি উইন্ডোজের পর দ্বিতীয় সর্বাধিক ব্যবহৃতফ এবং জনপ্রিয় পিসি ওএস । আপনি সাধারণত Apple কোম্পানির ল্যাপটপ এবং ডেস্কটপ যেমন MacBook, iMac ইত্যাদিতে এই অপারেটিং সিস্টেম দেখতে পাবেন । এটি ম্যাকিনটোশ অপারেটিং সিস্টেম নামেও পরিচিত ।

লিনাক্স – Linux হল একটি ফ্রি এবং ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম । এই অপারেটিং সিস্টেম আপনি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন । তবে লিনাক্স মূলত একটি পিসি ওএস । তবে পিসির পাশাপাশি এটি মোবাইল, স্মার্ট টিভি, গেমিং কনসোল এবং আরও অনেক ধরনের ডিভাইসেও ব্যবহৃত হয় ।  বিশ্বের শীর্ষ-500 সুপার কম্পিউটারের বেশিরভাগই লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে কাজ করে । নিরাপত্তার দিক থেকে বিবেচনা করা হলে, লিনাক্সকে একটি ভাইরাস-মুক্ত অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে মনে করা হয় । অর্থাৎ এতে ভাইরাস, ট্রোজান, ম্যালাওয়ার এবং র‍্যানসমওয়্যারের কোনো আক্রমণ নেই । তাই এটি অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমগুলোর তুলনায় অনেক বেশি সিকিউর । লিনাক্সের অনেকগুলি ভার্শন রয়েছে ।

ChromeOS – ChromeOS এর নাম শুনলেই নিশ্চয়ই আপনার ক্রোম ব্রাউজারের কথা মনে পড়ছে । কিন্তু এটি কোন ব্রাউজার নয় বরং, এটি একটি অপারেটিং সিস্টেম, যা Google দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছে । যদিও এটি মূলত একটি পিসি ওএস, কিন্তু এটি আসলে পিসি এবং মোবাইল ওএসের মিশ্রণ । তাই এর সাহায্যে আপনি পিসিতেও অ্যান্ড্রয়েডের বিভিন্ন অ্যাপস সরাসরি ইউজ করতে পারবেন ।

অ্যান্ড্রয়েড – অ্যান্ড্রয়েড বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম । যা বর্তমানের প্রায় বেশিভাগ স্মার্টফোনেই পাওয়া যায় । মার্কেট শেয়ারের প্রায় ৭১% শেয়ার নিয়ে এক নম্বরে রয়েছে এই অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম । এই ওএস টি শুধুমাত্র মোবাইলের জন্য । অ্যান্ড্রয়েড হল লিনাক্স কার্নেলের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা একটি মোবাইল ওএস । যা মূলত ডিজাইন করা হয়েছে টাচস্ক্রিন স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটের জন্য । অ্যান্ড্রয়েডের অনেক সংস্করণ বাজারে এসেছে । কিন্তু এর মধ্যে Android 4.4 (Kitkat), Android 5 (Lollipop), Android 9 (Pie) এবং Android 10 হল কিছু জনপ্রিয় ভার্শন ।

iOS – অ্যান্ড্রয়েডের পর iOS হল দ্বিতীয় জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত মোবাইল ওএস । যা শুধুমাত্র অ্যাপল ফোনেই ব্যবহার করা হয় । iOS অপারেটিং সিস্টেমের পূর্ণ রূপ হল iPhone অপারেটিং সিস্টেম । এটি ইউনিক্স-এর মতো একটি অপারেটিং সিস্টেম, যা ডারউইন (BSD) এর উপর ভিত্তি করে তৈরি । এটি মূলত আইফোন, আইপ্যাড এবং আইপডে ইউজ করা হয় ।

BlackberryOS – ব্ল্যাকবেরি ওএস হল আরও একটি জনপ্রিয় মোবাইল ওএস । যা Blackberry-Line স্মার্টফোনে ইউজ করা হয় । এক সময় এটি বেশ জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম ছিল । বিশেষ করে যখন ব্ল্যাকবেরি ফোনের অনেক বেশী চাহিদা ছিল । কিন্তু ব্ল্যাকবেরি ওএস বর্তমানে বন্ধ হয়ে গেছে ।

সিম্বিয়ান – একটা সময় ছিল যখন ফোন মানে আমরা শুধু নকিয়া ফোনকেই বুঝতাম । অর্থাৎ তখন নকিয়া ছিল বিশ্বের এক নম্বর মোবাইল ব্র্যান্ড বা কোম্পানি । এবং সিম্বিয়ান ছিল তখনকার সময়ের বিশ্বের এক নম্বর মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম । কিন্তু অ্যান্ড্রয়েড বাজারে আসার সাথে সাথে সিম্বিয়ান পিছিয়ে পড়ে এবং তার ফলস্বরূপ আজ সিম্বিয়ান বাজারে নেই । কিন্তু এর পরে নকিয়াকে, মাইক্রোসফট এবং এইচএমডি গ্লোবাল দ্বারা পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল । কিন্তু তাতে কোন ফল পাওয়া যায় নি ।

শেষ কথা

সামগ্রিক অপারেটিং সিস্টেম হল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মৌলিক সফটওয়্যার । যা বাকি সফ্টওয়্যারগুলির জন্য যথাযথ স্থান এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করে । তাই অপারেটিং সিস্টেমকে মেইন সফটওয়্যার বলা হয়ে থাকে । এটিকে কম্পিউটারের হৃদয়ও বলা যেতে পারে, যা কম্পিউটারকে বাঁচিয়ে রাখে । অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের সফ্টওয়্যার, হার্ডওয়্যার, মেমরি এবং সিপিইউ পরিচালনা করে। এছাড়াও ফাইল সিস্টেম পরিচালনা, কম্পিউটার কর্মক্ষমতা এবং নিরাপত্তা উন্নত করার পাশাপাশি ব্যবহারকারী ও হার্ডওয়্যারের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে ।

আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে বিস্তারিত অনেক কিছু জানতে পেড়েছেন । আর্টিকেলটি নিয়ে যে কোন ধরনের প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানান । ধন্যবাদ

0 responses on "অপারেটিং সিস্টেম কি? অপারেটিং সিস্টেম কিভাবে কাজ করে?"

Leave a Reply

© Technial Bangla. All rights reserved. 2025