• No products in the cart.

অপারেটিং সিস্টেম কাকে বলে ? অপারেটিং সিস্টেম কত প্রকার ও কি কি ? (Operating system in Bengali)

অপারেটিং সিস্টেম কাকে বলে?

অপারেটিং সিস্টেম (Operating System) হল একটি সফটওয়্যার যা কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার এর মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। এটি কম্পিউটারের সকল রিসোর্স যেমন প্রসেসর, মেমোরি, ডিভাইস ইত্যাদি ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রণ করে। অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীর সাথে কম্পিউটারের যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে এবং বিভিন্ন প্রোগ্রাম চালানোর জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে।

অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটার সিস্টেমের মৌলিক কার্যাবলী পরিচালনা করে এবং ব্যবহারকারীর জন্য একটি ইউজার ইন্টারফেস (UI) প্রদান করে, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী সহজে কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে।

অপারেটিং সিস্টেমের প্রধান কাজ:

  1. হার্ডওয়্যার পরিচালনা: অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার (যেমন CPU, RAM, ডিস্ক, ইনপুট/আউটপুট ডিভাইস) নিয়ন্ত্রণ করে।
  2. মেমোরি ম্যানেজমেন্ট: অপারেটিং সিস্টেম মেমোরির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে। এটি মেমোরি বরাদ্দ এবং মুক্ত করার কাজ করে।
  3. প্রসেস ম্যানেজমেন্ট: অপারেটিং সিস্টেম বিভিন্ন প্রোগ্রামের মধ্যে প্রসেস ম্যানেজমেন্ট করে। এটি প্রসেসের সৃষ্টি, সমাপ্তি, এবং প্রসেসগুলির মধ্যে সমন্বয় সাধন করে।
  4. ফাইল ম্যানেজমেন্ট: অপারেটিং সিস্টেম ফাইল তৈরি, সংরক্ষণ, স্থানান্তর, এবং মুছে ফেলার কাজ পরিচালনা করে।
  5. নিরাপত্তা এবং প্রাইভেসি: অপারেটিং সিস্টেম সিস্টেমের নিরাপত্তা বজায় রাখে এবং ব্যবহারকারীর প্রাইভেসি নিশ্চিত করে।
  6. ইউজার ইন্টারফেস (UI): অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীর সাথে যোগাযোগের জন্য একটি গ্রাফিক্যাল বা কমান্ড-লাইন ইন্টারফেস প্রদান করে।
  7. ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট: অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের বিভিন্ন ডিভাইস যেমন কীবোর্ড, মাউস, প্রিন্টার ইত্যাদি পরিচালনা করে।

অপারেটিং সিস্টেমের প্রকারভেদ:

অপারেটিং সিস্টেম বিভিন্ন ধরনের হতে পারে এবং এগুলি সাধারণত তাদের কাজ এবং ব্যবহার অনুযায়ী শ্রেণীবদ্ধ করা হয়। নিচে কিছু প্রধান অপারেটিং সিস্টেমের প্রকার দেওয়া হল:

1. বিকল্প-ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম (Batch Operating System):

এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহারকারী তার কাজগুলো একসাথে প্যাকেট করে সিস্টেমে জমা দেয়, এবং তারপর সিস্টেম কাজগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পাদন করে।

  • উদাহরণ: প্রাচীন ধরনের সিস্টেম যেমন IBM OS/360।

2. মাল্টি-টাস্কিং অপারেটিং সিস্টেম (Multitasking Operating System):

এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেম একাধিক প্রোগ্রাম একসাথে চালাতে সক্ষম। এটি একটি প্রোগ্রাম চালানোর সময় অন্য প্রোগ্রাম চালানোর সুযোগ দেয়।

  • উদাহরণ: Windows, Linux, macOS

3. মাল্টি-ইউজার অপারেটিং সিস্টেম (Multi-user Operating System):

এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেম একাধিক ব্যবহারকারীকে একই সিস্টেমে একসাথে কাজ করার সুযোগ দেয়। প্রতিটি ব্যবহারকারী নিজের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে।

  • উদাহরণ: UNIX, Linux

4. রিয়েল-টাইম অপারেটিং সিস্টেম (Real-Time Operating System):

এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেম বিশেষ ধরনের কাজ, যেমন যান্ত্রিক যন্ত্র বা চিকিৎসা ডিভাইস পরিচালনা করতে ব্যবহৃত হয়। এখানে সিস্টেমটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি কাজ সম্পন্ন করতে বাধ্য থাকে।

  • উদাহরণ: RTOS, VxWorks

5. ডিস্ট্রিবিউটেড অপারেটিং সিস্টেম (Distributed Operating System):

এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেম একাধিক কম্পিউটার বা সার্ভারকে একটি সিস্টেম হিসেবে পরিচালনা করে। এটি সিস্টেমের রিসোর্সগুলি একত্রিত করে ব্যবহার করে।

  • উদাহরণ: Google’s Android, Cloud OS

6. নেটওয়ার্ক অপারেটিং সিস্টেম (Network Operating System):

এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেম একটি নেটওয়ার্কে কম্পিউটার এবং ডিভাইসগুলির মধ্যে যোগাযোগ পরিচালনা করে।

  • উদাহরণ: Windows Server, NetWare

7. সিঙ্গল-ইউজার অপারেটিং সিস্টেম (Single-user Operating System):

এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেম শুধুমাত্র এক ব্যবহারকারীকে একে একে কাজ করতে দেয়। এটি এক সময়ে শুধুমাত্র একটি ব্যবহারকারীকে কাজ করার সুযোগ দেয়।

  • উদাহরণ: MS-DOS, Windows (Home version)।

8. মাল্টি-প্রসেসিং অপারেটিং সিস্টেম (Multiprocessing Operating System):

এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেম একাধিক প্রসেসর বা CPU ব্যবহার করে একাধিক কাজ একসাথে সম্পন্ন করে। এটি কম্পিউটার সিস্টেমের গতি এবং কার্যক্ষমতা উন্নত করে।

  • উদাহরণ: Linux, Windows Server

অপারেটিং সিস্টেমের উদাহরণ:

  1. Windows: মাইক্রোসফটের তৈরি একটি জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম যা অধিকাংশ কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয়। এটি গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস (GUI) সমর্থন করে এবং সহজ ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
  2. Linux: এটি একটি ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম, যা বিশ্বের বিভিন্ন প্রযুক্তি সংস্থা এবং ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের দ্বারা ব্যবহৃত হয়। এটি একটি নিরাপদ এবং কাস্টমাইজযোগ্য সিস্টেম।
  3. macOS: এটি অ্যাপল কোম্পানির তৈরি একটি অপারেটিং সিস্টেম যা ম্যাক কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয়। এটি গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস এবং নিরাপত্তা সুবিধা প্রদান করে।
  4. Android: এটি একটি ওপেন সোর্স মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম যা গুগল দ্বারা তৈরি এবং মোবাইল ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়। এটি স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম।
  5. iOS: এটি অ্যাপল কোম্পানির তৈরি একটি মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম যা iPhone এবং iPad ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়। এটি ইউজার ফ্রেন্ডলি এবং নিরাপদ।
  6. UNIX: এটি একটি মাল্টি-ইউজার, মাল্টি-টাস্কিং অপারেটিং সিস্টেম যা সাধারণত সার্ভার এবং বড় প্রতিষ্ঠানগুলিতে ব্যবহৃত হয়। এটি স্থিতিশীল এবং নিরাপদ।

উপসংহার:

অপারেটিং সিস্টেম হল কম্পিউটার সিস্টেমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার, যা কম্পিউটার বা মোবাইল ডিভাইসের সকল রিসোর্সের ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রণ করে। এটি বিভিন্ন প্রকার হতে পারে, যেমন বিকল্প-ভিত্তিক, মাল্টি-টাস্কিং, রিয়েল-টাইম, ডিস্ট্রিবিউটেড, নেটওয়ার্ক, সিঙ্গল-ইউজার ইত্যাদি। অপারেটিং সিস্টেমের উদাহরণ হিসেবে Windows, Linux, macOS, Android এবং iOS উল্লেখযোগ্য।

0 responses on "অপারেটিং সিস্টেম কাকে বলে ? অপারেটিং সিস্টেম কত প্রকার ও কি কি ? (Operating system in Bengali)"

Leave a Reply

top
© Technial Bangla. All rights reserved. 2025